সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে চিকিৎসকদের কী অভাব-অনুযোগ রয়েছে তা জানতে সোমবার চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়ে সম্মেলন করলেন মুখ্যমন্ত্রী ।
পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে আয়োজিত ‘চিকিৎসার আরেক নাম সেবা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে চিকিৎসকদের বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন কলকাতার ধনধান্য অডিটোরিয়াম থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ইন্টার্ন, হাউজস্টাফ, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিদের ১০ হাজার টাকা বেতন বাড়ানো হচ্ছে। শুধু তাই নয় মমতা জানান, রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সর্বস্তরের সিনিয়র রেসিডেন্টদের বেতন ১৫ হাজার টাকা করে বাড়ানো হবে। ফলে ডিপ্লমাধারী সিনিয়র রেসিডেন্টদের স্যালারি ৬৫ হাজার থেকে বেড়ে হবে ৮০ হাজার টাকা। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট সিনিয়র রেসিডেন্টদের বেতন বর্তমানে ৭০ হাজার থেকে বেড়ে হবে ৮৫ হাজার। এবং পোস্ট ডক্টরেট সিনিয়র রেসিডেন্টদের বেতন ৭৫ হাজার থেকে বেড়ে হবে ১ লক্ষ টাকা।
ক’দিন আগেই স্বাস্থ্য ভবন জানিয়েছিল, সরকারি চিকিৎসকরা সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত প্রাইভেট প্র্যাক্টিস করতে পারবেন না। প্রত্যেক চিকিৎসককে সপ্তাহে ন্যূনতম ৬ দিন এবং ৪২ ঘণ্টা ডিউটি করতে হবেই। পরে আরও কড়া নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল চিকিৎসকদের কর্মক্ষেত্রের ২০ কিমির বাইরে করা যাবে না প্রাইভেট প্র্যাকটিস। পাশাপাশি ডিরেক্টর অব হেলথ সার্ভিস বা ডিরেক্টর অব মেডিক্যাল এডুকেশনের থেকে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ নিতে হবে প্রাইভেট প্র্যাকটিসের জন্য।
যদিও আজকের চিকিৎসকদের নিয়ে সম্মেলন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করলেন, নির্ধারিত ২০ কিলোমিটার বাড়িয়ে ৩০ কিলোমিটার করে দেবে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সিনিয়র ডাক্তারদের অনুরোধ করব দয়া করে সবটা জুনিয়রদের ওপর ছেড়ে দেবেন না। অন্তত আট ঘণ্টা সরকারি পরিষেবা দিন। তারপরে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করুন, তাতে আমার আপত্তি নেই।
আমি আপনাদের জন্য বেঁধে দেওয়া ২০ কিলোমিটারটা ৩০ কিলোমিটার করে দিলাম। কারণ কলকাতায় ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে অনেক হাসপাতাল আছে। কিন্তু সরকারি পরিষেবা দেওয়ার সময় প্লিজ যাবেন না। দরকার হলে হাসপাতালে ডেকে নিন। আমাদের তো পরিকাঠামো আছে। সেখানে যা করার করুন।”
এ ছাড়াও মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় জুনিয়র ডাক্তারদের উপর থেকে সাসপেনশন প্রত্যাহার করার কথাও এ দিন ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাভাবিক ভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণায় খুশির হাওয়া চিকিৎসক মহলে।
বছর ঘুরলেই বিধানসভা ভোট। আরজি করের ঘটনার পর যেভাবে চিকিৎসকদের একাংশ রাজ্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিল, তার পরে মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণবলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।