দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ১১ দিনের মাথায় শনিবার সেই বাজিদগ্ধ খাদিকুলে গিয়ে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে ক্ষমা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷সেইসঙ্গে মেনে নিলেন পুলিশি ব্যর্থতার কথাও।
এগরায় বাজি কারখানা বিস্ফোরণে মোট ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার দিন ৮ জন মারা যান। দু’দিন পর কটকের রুদ্র হাসপাতালে মৃত্যু হয় ঝলসে যাওয়া কারখানার মালিক ভানু বাগের। তার একদিন পর এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দু’জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এদিন হেলিকপ্টারে এগরায় যান মুখ্যমন্ত্রী। তারপর মৃতদের পরিবার ও আহতদের হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেন তিনি। সেইসঙ্গে মৃতদের পরিবারের একজনকে হোমগার্ডে নিয়োগপত্রও তুলে দিয়েছেন মমতা।
বাজিদগ্ধ খাদিকুলে মমতা বলেন, ‘এগরার ঘটনা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। পরিবেশবান্ধব বাজি তৈরির জন্য পৃথক ক্লাস্টার গড়ার ব্যাপারে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বাধীন সেই কমিটি সে ব্যাপারে রিপোর্ট দেবে। তারপর আমরা তা করব।’
বাংলায় বাজি শিল্পের সঙ্গে বহু মানুষের রুটিরুজি জড়িয়ে আছে। এদিন সেকথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, কারও যাতে কাজ না যায় তা রাজ্য সরকার দেখবে। তবে বেআইনি বাজি তৈরি রুখতে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
এগরার গ্রামে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানান, ‘বেআইনি বাজি তৈরি হচ্ছে জানলেই থানায় খবর দিন। ওসি যদি ব্যবস্থা না নেন তাহলে তাঁকে সরিয়ে দেব। এখানকার ওসিকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ তাঁর কথায়, ‘এখানকার ওসি জেনেও ব্যবস্থা নেয়নি। উপরেরতলার পুলিশেরও ইন্টালিজেন্স ফেল করেছে। নইলে এই ঘটনা ঘটতে পারে না।’
বেআইনি বাজি কারবারীদের সম্পর্কে চোখা আক্রমণ শানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘কেউ কেউ বেশি লোভে এগুলো করে। নিজেও যায়, সঙ্গে অনেক মানুষকেও নিয়ে যায়।’ এরপরেই এই ঘটনার জন্য খাদিকুলের মানুষের সামনে ক্ষমা চান মমতা। সেইসঙ্গে এও বলেন, ‘অনেকে এ নিয়ে রাজনীতির জল ঘোলা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমি এসেছি মানবিকভাবে পাশে দাঁড়াতে।’
অন্যদিকে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, “কিসের জন্য উনি ক্ষমা চাইলেন? ওনার লোকেরা বোমা ফাটিয়ে মেরেছেন বলে? বোমা কারখানা হয়েছে বলে? নাকি উনি দেরিতে গিয়েছেন বলে? এরকম ক্ষমা উনি তো রোজই চান। কেউ রাষ্ট্রপতিকে গালাগাল করে, উনি চান। কেউ কুড়মিদের গালাগাল করেন, উনি ক্ষমা চান। সারা জীবন কি ক্ষমাই চাইবেন? কোনও সমাধান করবেন না?”