দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ কলকাতায় ধরনার সময় প্রায় শেষ। এবার দিল্লি গিয়ে আন্দোলনের ডাক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ভেবেছিলেন ধরনার জেরে হয়ত দিল্লি থেকে আসবে ফোন, বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলা হবে। কিন্তু তেমনটা ঘটেনি। তা না হওয়ায় এবার বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটার কথা বললেন তিনি। বৃহস্পতিবার ধরনার দ্বিতীয় দিনে মমতা বলেন, “মানুষ অধিকার ফেরত না পেলে, দিল্লি চলো।” আমরাও দিল্লি যেতে পারি।’ সংরক্ষণ না দিলে, মানুষ জবাব দেবে।” প্রয়োজন হলে ভিক্ষা করে ট্রেন ভাড়া করে দিল্লি যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। মূলত কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ তুলেই ধরনায় বসেছিলেন মমতা।
মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘আজ পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করলাম। “ভেবেছিলাম কেন্দ্রীয় সরকার ভদ্রতার সঙ্গে যোগাযোগ করবে। বলবে তোমাদের প্রাপ্য টাকা দেব। বাংলাকে বঞ্চিত করার জন্য, ফেডারেল স্ট্রাকচারকে ধ্বংস করা হয়েছে। দেশের সব কিছু বিক্রি করার জন্য, দেশটা পুরো বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। মাত্র ৩-৪ জনকে সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে। মানুষ লাইফ ইনসিওরেন্স পাবে না৷ বিরোধী দলকে কলঙ্কিত করছে। সাংবাদিকদের খবর করতে দেওয়া হচ্ছে না৷ গণতন্ত্রের চারটি স্তম্ভ। মিডিয়া সত্য কাহিনি তুলে ধরবে। ফেডারেল স্ট্রাকচার ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বাংলায় ১৬০ কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়েছে৷ বাংলায় টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। জিএসটিতে টাকা কাটছে। জিএসটি ট্যাক্স নিয়ে গিয়ে আমাদের যা প্রাপ্য তা সব কেন্দ্র নিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রাপ্য পাচ্ছি না।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিন বার দেখা করে এসেছি। সৌজন্য দেখিয়ে দেখা করেছি। যাতে আমাকে ঝগড়ুটে না বলতে পারে৷ আমরা আন্দোলন করেছি, ধরনা করেছি, মন্ত্রীদের চিঠি দিয়েছি। যা পেতাম, তাও বাদ। হরেকরকম্বা। নেই কাজ তো খই ভাজ। কোন অধিকারে বাংলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়?” কিন্তু কিছুই হল না।’
কোনও আশ্বাস না পেয়ে এবার দিল্লি যাওয়ার কথাই ভাবছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বিজেপিকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, ‘ট্রেন দেবে না? ট্রেন ভাড়া করে যাব। দরকার হলে ভিক্ষা করে ট্রেন ভাড়া করব।’ তাঁর দাবি, বিজেপি রিজার্ভেশন আটকে দিলে প্রশ্ন তুলবে সাধারণ মানুষ।
কেন্দ্রের ‘আয়ুস্মান ভারত’র স্কিমের শর্ত থেকে ‘পিএমশ্রী’, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি সহ একাধিক ইস্যুতে এদিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘ভেবেছিলাম এখানে উনুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করব। আগুন লাগার ভয়ে তা করতে পারিনি। কিন্তু আমরা সব পারি।’ প্রয়োজন হলে দিল্লি গিয়ে উনুন জ্বালাব। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দ, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের ছবি নিয়ে দিল্লি যাবেন বলেও এদিন উল্লেখ করেন মমতা।
উল্লেখ্য, বুধবার ধরনার প্রথম দিনও মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, প্রয়োজন পড়লেন প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির কাছে গিয়ে ধরনা দেবেন তিনি। যুব তৃণমূলের সমাবেশ থেকে দিল্লি যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ও। রাজধানী অচল করে দেওয়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।