দেশের সময় : কৃষ্ণনগরে মণ্ডপের সামনে তরুণীর মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। মৃতার পরিবারের সঙ্গে এদিন দেখা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রতিশ্রুতি দিলেন আইনি সাহায্যেরও।
লক্ষ্মীপুজোর দিন, বুধবার সকালে নদিয়া জেলা স্টেডিয়ামের পাঁচিলের ধারে দুর্গাপুজোর ফাঁকা মণ্ডপে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর আধপোড়া দেহ উদ্ধার হয়েছিল। পরিবারের অভিযোগ ছিল, খুন করা হয়েছে মেয়েকে। সেই কথার রেশ টেনেই শুভেন্দু বলেন, ‘খুনই করা হয়েছে তরুণীকে। ধামাচাপা দিতে চাইছে পুলিশ।’ বিরোধী দলনেতার দাবি, ধামাচাপা দিতেই আত্মহত্যার তত্ত্ব খাঁড়া করা হচ্ছে।
তাঁর কথায়, ‘আমি এবং এখানকার সাধারণ মানুষ ও পরিবার এক যোগে বলতে চাই নির্যাতন করে খুন করা হয়েছে। পরিবার কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে তদন্ত দাবি করেছে। আমরা সিনিয়র আইনজীবী প্রোভাইড করব। পরিবার কথা বললে তাঁরা যে আইনি সাহায্য চাইবে আমরা তাঁদের পাশে থাকব।’
প্রসঙ্গত, কৃষ্ণনগরের রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমপাড়া এলাকা থেকে ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়। যেখান থেকে এই দেহ উদ্ধার হয়েছে তার কিছু দূরেই পুলিশ সুপারের অফিস! তাই স্বাভাবিকভাবে আরও বেশি আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এলাকাবাসীর মধ্যে।
স্থানীয় সূত্রে খবর ছিল, রাস্তার ধারে পড়ে ছিল তরুণীর অর্ধনগ্ন এবং অর্ধদগ্ধ দেহ। এলাকাবাসী মনে করছে, ধর্ষণ করার পর খুন করা হয়েছে তাঁকে। আর প্রমাণ লোপাটের জন্য পুড়িয়ে দেওয়া হয় মুখ এবং শরীরের একাংশ।
সাংবাদিক বৈঠকে এডিজি জানিয়েছিলেন, ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যে কৃষ্ণনগরের পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একটি স্পেশ্যাল ইনভেসটিগেশন টিম (সিট) গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি সিআইডিও ঘটনার তদন্ত করছে। ইতিমধ্যেই একের পর এক খবর উঠে আসছে গোটা ঘটনা নিয়ে।
কৃষ্ণনগরের সেই তরুণীর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় এ বার সরানো হলো তদন্তকারী পুলিশ অফিসারকে। কোতয়ালি থানার সাব ইন্সপেক্টর সুমিত দে-র পরিবর্তে তদন্তভার দেওয়া হলো ইন্সপেক্টর পদ মর্যাদার অফিসার কৌশিক সাউকে। পুলিশ সূত্রে খবর, কৃষ্ণনগরের ঘটনা অত্যন্ত স্পর্শকাতর। দ্রুত সত্য সামনে আনার জন্য ইন্সপেক্টর পদ মর্যাদার কাউকে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কল্যাণীতে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। চিকিৎসকরা প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছিলেন, জীবন্ত অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ হন ওই তরুণী। যদিও কিছু কেমিক্যাল টেস্ট বাকি ছিল। তাই জানা যায়নি আদৌ আত্মহত্যা কি না। কৃষ্ণনগরের জেলা পুলিশ সুপার অমরনাথ কে শুক্রবার বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক টিম। একটি বোতলে লাইট ব্লু লিকুইড পাওয়া গিয়েছে। কেরোসিনের গন্ধও পাওয়া গিয়েছে।’ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ, জানান তিনি।
মৃতার পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের পরে খুন করা হয় তাঁকে। খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য আগুন লাগানো হয়। ঘটনায় তরুণীর প্রেমিক রাহুল বসুকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে শুরু হয়েছে তদন্ত। যদিও ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তের দাবি করেছে মৃতার পরিবার। এই অবস্থায় ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিকের হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।