দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: জল্পনা আগে থেকেই ছিল। বৃহস্পতিবার বিজেপিতে যোগ দিলেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তুভ বাগচী। বিজেপি অফিসে তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ।
এদিন যোগদান মঞ্চ থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, বহুদিন ধরেই কৌস্তুভ বাগচী মানুষের পাশে থেকে লড়াই করছিলেন। কংগ্রেস তাঁর পাশে না থাকলেও তিনি নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন। তাই লোকসভা নির্বাচনের আগে তাঁকে বিজেপিতে যোগদান করানো হল ।
বিজেপিতে যোগ দিয়েই কৌস্তভ বাগচী বলেন, “মানুষের চাহিদা পূরণ না করলে তো রাজনীতি করার কোনও অর্থ নেই। যেখানে প্রদেশ কংগ্রেসের গুরুত্ব নেই। সেখানে সে দলের সঙ্গে থাকার কোনও অর্থ নেই। সন্দেশখালি নিয়ে কংগ্রেসের উচ্চ নেতৃত্ব চুপ। আমার মনে হচ্ছে দিনের পর দিন কংগ্রেস যেভাবে তৃণমূল নিয়ে নরম মনোভাব দেখাচ্ছে, সেখানে আত্ম মর্যাদা নিয়ে সেই দলে থাকা যায় না।”
কৌস্তভের বক্তব্য, “সন্দেশখালিকাণ্ডে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পর্যন্ত প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। অথচ কংগ্রেসের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। দলের মধ্যেও এ নিয়ে অসন্তোষের জায়গা আছে। কেউ বলছে কেউ বলছে না। আমার মনে হয় এখানে থাকাটা নিজের আত্মমর্যাদার সঙ্গে সমঝোতা করা। এই তৃণমূলের প্রতি নরম অবস্থান নিয়ে রাজ্যে তৃণমূলকে উৎখাত করা যাবে না।” সেই লড়াই লড়তেই তিনি বিজেপিতে যোগ দিলেন বলে জানান।
প্রসঙ্গত, বুধবারই কংগ্রেস ছাড়েন কৌস্তভ বাগচী। কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্য পদ ছাড়েন তিনি। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে তিন পাতার চিঠি দেন ব্যারাকপুরের বাসিন্দা এই নেতা। দীর্ঘদিন ধরেই হাত শিবিরের সঙ্গে সম্পর্ক তাঁর। কৌস্তভের দাবি ছিল, এখন আত্মসম্মান নিয়ে কংগ্রেসে থাকা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। চিঠিতে সে কথাও উল্লেখ করেন। দলের সভাপতি ছাড়াও বঙ্গ কংগ্রেসের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষককে চিঠির প্রতিলিপি পাঠিয়েছিলেন তিনি।
কৌস্তভের দাবি, তৃণমূল জোট নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য মনোভাব দেখাচ্ছে। তাঁর কথায়, “কংগ্রেস তৃণমূলের কাছে ভিক্ষার বাটি নিয়ে ঘোরাফেরা করছে। তৃণমূল বিরোধী মানসিকতার যারা খুব ভালভাবে এটা নেয় না। ফলে তাদের পক্ষে কংগ্রেসে থাকাও সম্ভব নয়।” কৌস্তভের কথায়, কংগ্রেসের একটা বড় অংশের মানুষ যারা মনে করছে তৃণমূল সরকারকে সরাতে হবে, তাদের সামনে কোনও বিকল্প নেই। ভারত ন্যায় যাত্রার ক্ষেত্রে কংগ্রেস কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নরম মনোভাব দেখিয়েছে বলেও দাবি তাঁর।
এবার কি কৌস্তভ লোকসভা ভোটেও লড়বেন? প্রশ্ন শুনেই সদ্য কংগ্রেস ত্যাগী নেতা বলেন, “কোনও শর্তে আমি দল করি না। চাওয়া পাওয়ার জায়গা নেই। অত্যাচারী শাসকদলকে এ রাজ্য থেকে উৎখাত করতেই যোগদান।” কৌস্তভ ছাড়াও এদিন কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দেন শঙ্কর বন্দোপাধ্যায়, সিদ্ধার্থ মজুমদার। সিদ্ধার্থ মজুমদার গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন। এছাড়াও এদিন বিজেপিতে যোগ দেন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ সৌমিত্র দত্ত।