দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কলকাতা বন্দর থেকে উদ্ধার প্রায় ২০০ কোটি টাকার হেরোইন। গুজরাট অ্যান্টি-টেররিস্ট স্কোয়াড (ATS) এবং ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্সের (DRI) যৌথ অভিযানেই এদিন এই বিপুল পরিমাণ হেরোইন উদ্ধার হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, গত ফেব্রুয়ারি মাসে বন্দরে আসে একটি কন্টেনার। তারপর থেকে এটি এখানেই ছিল বলে জানা যাচ্ছে। আরব থেকে প্রায় ৭ হাজার টন মেটাল পার্টস আসে এই কন্টেনারে। তাতেই ছিল গিয়ার বক্স। তারমধ্যে লুকিয়েই আনা হয়েছিল এই বিপুল পরিমাণ হেরোইন (Heroin Smuggling)।
কলকাতা বন্দর থেকে উদ্ধার হল প্রায় ৪০ কিলোগ্রাম হেরোইন। গুজরাত পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখা (এটিএস) এবং ‘ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স’-এর যৌথ অভিযানে উদ্ধার হয়েছে ওই বিপুল পরিমাণ মাদক। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, এই পরিমাণ মাদকের বাজারদর প্রায় ২০০ কোটি টাকা।
সূত্রের খবর, কলকাতা বন্দর দিয়ে এই বিপুল পরিমাণ হেরোইন পাচারের চেষ্টা চলছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কলকাতা বন্দরে অভিযান চালায় গুজরাতের এটিএস। বন্দরে আসা একটি জাহাজকে দেখেই সন্দেহ হয় গোয়েন্দাদের। জানা গেছে, আরব থেকে প্রায় ৭ হাজার টন মেটাল পার্টস নিয়ে কলকাতা বন্দরে নোঙর করেছিল সেই জাহাজ। তল্লাশি চালাতেই কয়েকটি গিয়ার বক্সের বড় বাক্স খুঁজে পান গোয়েন্দারা। সেগুলি খুলতেই বেরিয়ে আসে হেরোইনের অন্তত ৭২টি প্যাকেট। তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে ৩৯.৫ কিলোগ্রাম হেরোইন উদ্ধার হয়েছে।
কলকাতা বন্দর এলাকার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, এই অভিযান সম্পর্কে গুজরাত পুলিশের তরফ থেকে তাঁদের কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি ৷ বস্তুত, কলকাতা পুলিশের সঙ্গে কোনও যোগাযোগই করেনি গুজরাত পুলিশের এটিএস। তবে, ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন কলকাতা পুলিশের ওই আধিকারিক৷
পুলিশের ধারণা কলকাতা বন্দরে থাকা কন্টেনারে করেই হেরোইনগুলি অন্য দেশের পাচারের পরিকল্পনা ছিল পাচারকারীদের। কিন্তু, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পাচারকারীদের ছক বানচাল করে দেয় গুজরাত পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখা। ঘটনাস্থলে এখন প্রচুর সংখ্যায় সিআইএসএফ জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে ৷
গুজরাত পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, মাদক মজুতের তথ্য প্রথম তাদের হাতেই এসেছিল ৷ পরে পাঞ্জাব পুলিশ এবং দিল্লি পুলিশের সঙ্গেও এই বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয় ৷ সন্দেহভাজন জাহাজটির সঙ্গে দুবাইয়ের সংযোগ রয়েছে ৷ সেটি এসেছিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহী থেকে ৷ প্রসঙ্গত এই বছরই, গুজরাত এটিএস কচ্ছ জেলার মুন্দ্রা বন্দরের কাছে একটি কন্টেনার থেকে প্রায় ৩৭৬ কোটি টাকারও বেশি হেরোইন বাজেয়াপ্ত করে।
এদিকে ফেব্রুয়ারিতে এলেও এখনও কেন আচমকা খোঁজ পড়ল কন্টেনারটির? সূত্রের খবর, ব্যবসায়িক প্রয়োজনেই এইরকম বিশালাকার কন্টেনার বিভিন্ন বন্দরে স্টোর করা থাকে। তারপর সেগুলি অন্য দেশে রপ্তানি হয়ে যায় বা দেশের অন্দরে নানা বন্দরে চলে যায়।
পুলিশের ধারনা কলকাতা বন্দরে থাকা কন্টেনারে করেই হেরোইনগুলি অন্য দেশের পাচারের ছক কষছিল পাচারকারীরা। কিন্তু, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পাচারকারীদের প্ল্য়ান সম্পূর্ণভাবে ভেস্তে দেয় গুজরাট অ্যান্টি-টেররিস্ট স্কোয়াড (ATS) এবং ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স। সূত্রের খবর, উদ্ধার হওয়া ৩৬টি গিয়ার বক্সের মধ্যে ১২টির মধ্যে সাদা দাগ দেওয়া ছিল। এগুলি খুলতেই কার্যত ঝোলা থেকে বিড়াল বেরিয়ে আসে। তদন্তকারীদের হাতে উঠে আসে ৭২ প্যাকেট হেরোইন।
প্রসঙ্গত, এই বছরের জুলাই মাসে, গুজরাট ATS কচ্ছ জেলার মুন্দ্রা বন্দরের কাছে একটি কন্টেইনার থেকে প্রায় ৩৭৬ কোটি টাকারও বেশি হেরোইন বাজেয়াপ্ত করে। সেবার উদ্ধার হয়েছিল ৭৫ কেজিরও বেশি হেরোইন।