ধ্রুব হালদার ,কলকাতা :ভারতবর্ষকে বলা হয় বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের দেশ। সর্ব ধর্মের মানুষ এখানে খুব ভালো বন্ধু, ভাই হিসেবে থাকে। একথার প্রমাণ আগে বহুবার পাওয়া গেছে। সেই প্রমাণ আরো একবার পাওয়া গেল খাস কলকাতায়। শুধুমাত্র ভারত নয়, পৃথিবী বিখ্যাত কলকাতার ইসকনের রথযাত্রা। আজ শুক্রবার পয়লা জুলাই সেই রথযাত্রা। দেশ বিদেশ থেকে বহু ভক্ত এসেছেন ৷ মহানগরীর মূল আকর্ষণ ইসকনের রথ। এবারও রথযাত্রার উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইসকনের পক্ষ থেকে যা জানানো হয়েছে, তাতে মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছবেন দুপুর ২ টোয়। রথের চাকা গড়াবে আড়াইটে নাগাদ। ধ্রুব হালদারের ক্যামেরায় তোলা রথের দৃশ্যের ভিডিও দেখুন
মিন্টো পার্কের কাছে অ্যালবার্ট রোডের ইসকন মন্দির থেকে রথযাত্রা শুরু হবে। সকালের দিকে কিছু আচার অনুষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনছিল ৷
কলকাতার ইসকন মন্দির থেকে ভগবান জগন্নাথ দেবকে রথে আনা হয়েছে ইতি মধ্যেই। ’বছর পর গড়াবে ইসকনের রথের চাকা ৷ মুখ্যমন্ত্রী প্রথম রথের দড়ি টেনে শুভ উদ্বোধন করবেন।
রথ যে পথে এগিয়ে যাবে : মিন্টো পার্কের হাঙ্গারফোর্ড স্ট্রিট থেকে শুরু হয়ে রথ এগিয়ে যাবে এইভাবে। শরত বাস রোড, ডান দিকে ঘুরে হাজরা রোড, ডানদিকে ঘুরে এস পি মুখার্জি রোড, এটিএম রোড-এক্সাইড ক্রসিং, চৌরঙ্গি রোড, জে এল নেহরু রোড, পার্ক স্ট্রিট ক্রসিং, বাঁ দিকে ঘুরে আউটরাম রোড এবং এখান থেকে সরাসরি ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে।
প্রত্যেক বছরই রথযাত্রার দিন হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয় ইসকনে। কিন্তু করোনার কারণে গত দু’বছর এখানে বড় করে এই উৎসব পালন হয়নি। ইসকন মন্দির থেকে আজ রথ বেরিয়ে ব্রিগেডে যাবে। সেখানে উলটোরথ মানে ৯ জুলাই পর্যন্ত থাকবেন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা। রথযাত্রা উপলক্ষে এই আটদিন ধরে ব্রিগেডে চলবে মেলা। উল্টোরথের দিন ফের রথ ফিরে আসবে ইসকনে।
গতবছর ছিল এখানকার রথযাত্রার পঞ্চাশতম বর্ষ। কিন্তু করোনার কারণে বড় করে উদযাপন করা হয়নি। এবার তাই মহাসমারোহে ধুমধাম করে রথযাত্রা পালন হবে ইসকনে। দেড়শো দেশ থেকে ভক্তরা আসছেন। তাঁরা রোজ ভোগ রান্না করবেন। সেই ভোগ ব্রিগেডে সাধারণ ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ হিসাবে বিতরণ করা হবে। তাছাড়া রোজই চলবে পুজো ও গান—কীর্তন।
মায়াপুরের ইসকনেও (Mayapur )। দু’বছর পর মহা ধুমধাম করে পালিত হবে রথযাত্রা। করোনাবিধি মেনেই এবার উৎসবে মাতবে মায়াপুরবাসী। দেশ-বিদেশ থেকে ইতিমধ্যে জড়ো হচ্ছেন ভক্তরা। মায়াপুর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে রাজাপুর গ্রাম রয়েছে, সেখানকার জগন্নাথ মন্দির থেকে তিনটি পৃথক রথে করে জগন্নাথ, বলদেব এবং সুভদ্রা মহারানি মায়াপুর চন্দ্রোদয় মন্দিরের অস্থায়ী গুণ্ডিচায় মাসির বাড়িতে আসবেন।
উলটো রথ পর্যন্ত মাসির বাড়িতে একাধিক মেনুতে খাওয়া-দাওয়া সারবেন জগন্নাথ, বলদেব, সুভদ্রা। আর সেই প্রসাদ ইসকনে আগত সমস্ত ভক্তদের উদ্দেশ্যে বিতরণ করা হবে বলে ইসকন সূত্রে খবর। জনসমাগমের কথা মাথায় রেখে মায়াপুরে আসার ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর আরজি জানিয়েছে ইসকন কর্তৃপক্ষ।
ইসকন ছাড়াও রথযাত্রা উপলক্ষ্যে শহর এবং গ্রামাঞ্চলেও বিভিন্ন জায়গায় রথ বেরবে। কয়েকটি জায়গায় মেলাও বসছে। করোনার বাড়বাড়ন্তের সময় রথযাত্রা একদিকে যেমন আনন্দের উৎসব, অন্যদিকে কিছুটা দুশ্চিন্তারও বটে।