দেশের সময় , কলকাতা: গত শুক্রবার থেকে জেরা পর্ব শুরু হয়েছিল । গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জেরা এড়িয়েছিলেন।
সূত্রের খবর, পরের দিন রাস্তা থেকে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে সিজিওতে নিয়ে গিয়েছিলেন তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। সেই শুরু, পর পর টানা ন’দিন সিবিআইয়ের জেরার মুখোমুখি সন্দীপ ঘোষ।
গত আটদিনের মতো এদিনও সকালে নির্ধারিত সময়ের আগেই সিজিওতে এসে থামল সন্দীপ ঘোষের গাড়ি। অপেক্ষারত মিডিয়ার কোনও প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ঢুকে গেলেন গোয়েন্দা সংস্থার দফতরে। ইতিমধ্যে আদালত থেকে তাঁর পলিগ্রাফ টেস্টের অনুমতি নিয়েছে সিবিআই। অন্যদিকে ম্যারাথন জেরাও চলছে। দেখুন ভিডিও
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার পরে সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছে যান সন্দীপ। তার কিছু পরে সিবিআই কর্তারাও দফতরে ঢোকেন। কেন পর পর ন’দিন সন্দীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তাঁর কাছ থেকে কী কী তথ্য পাওয়া গিয়েছে, আর কী তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছেন গোয়েন্দারা, এখনও তা স্পষ্ট নয়।
গত শুক্রবার থেকে প্রতি দিনই সন্দীপ সকালে সিজিওতে যাচ্ছেন, রাতে বাড়ি ফিরছেন। আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক অনিয়মের তদন্তভারও সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।
সন্দীপ প্রতি দিনই সিজিও কমপ্লেক্সে যাচ্ছেন ভাড়া করা গাড়িতে। নিজের গাড়ি ব্যবহার করছেন না তিনি। গত বুধবার রাতে সিবিআই তাঁর গাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। সন্ধ্যায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল সন্দীপের গাড়ির চালককে। গাড়ি নিয়েই তাঁকে আসতে বলা হয়েছিল। সন্দীপ স্বাস্থ্য দফতরের গাড়ি ব্যবহার করেন। সেই গাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। সন্দীপের চালককেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই।
প্রসঙ্গত, সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে ওঠা আরজি করে দুর্নীতির অভিযোগে কয়েকদিন আগে সিট গঠন করেছিল নবান্ন। শুক্রবার সেই সিটের তদন্তকে কার্যত খারিজ করে আরজি কর সংক্রান্ত সব তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইকে দিয়েছে আদালত।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে সন্দীপের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। অভিযোগ, সন্দীপ অত্যন্ত প্রভাবশালী। তাই তদন্ত প্রক্রিয়াতেও তিনি প্রভাব খাটাতে পারেন। আন্দোলনের চাপে পড়ে সন্দীপ পদত্যাগ করেন। এর পর তাঁকে ন্যাশনাল মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করেছিল রাজ্য সরকার। সেখানেও বিক্ষোভ শুরু হয়। কলকাতা হাই কোর্ট সন্দীপকে ছুটিতে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এর পর তাঁকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে।
সিঙ্গল বেঞ্চের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শুক্রবারই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেছিলেন সন্দীপ। যদিও তা গ্রহণ করেনি আদালত। পর্যবেক্ষকদের মতে, ঘটনা পরম্পরার জেরে সময় যত গড়াচ্ছে ততই স্নায়ুর চাপ বাড়ছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষর।
আপনি কি যথেষ্ট চাপে? জবাবে নিরুত্তর থেকেছেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ। কোনও প্রশ্নের জবাব না দিয়ে হন হন করে ঢুকে পড়েছেন সিজিও কমপ্লেক্সের ভেতরে।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় ধৃত সঞ্জয় রায় ছাড়া প্রথম থেকেই সিবিআইয়ের নজরে রয়েছে সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা। সেই সূত্রেই তাঁকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। তাছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠেছে। সব মিলিয়ে এখন ঘরে-বাইরে সন্দীপবাবু ভীষণ চাপের মধ্যে রয়েছেন বলেই মত তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের।