পার্থ সারথি নন্দী ও অর্পিতা বনিক ,কলকাতা:সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আরজি কর পাহারায় ইতিমধ্যে পৌঁছেছে আধাসেনা। গত ১৪ই অগস্ট হাসপাতাল ভাঙচুরের ঘটনার পর সিআইএসএফ মোতায়েনের নির্দেশ দেয় আদালত। আর তারপরই মঙ্গলবার সিআইএসএফ-এর কর্তারা এসে গোটা হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। জানা যাচ্ছে, সরকারি হাসপাতালের বারো একর জমির উপরে অবস্থিত ৩৩টি বিল্ডিংকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তার ব্লু-প্রিন্ট। দেখুন ভিডিও
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে আরজি করের প্রশাসনিক ভবন, এমার্জেন্সি বিল্ডিং,ট্রমা কেয়ার, স্ত্রীরোগ,এসএনসিইউ,ওপিডি,সার্জারি বিল্ডিং-সহ সবকটি হস্টেলে মোতায়েন থাকবে বাহিনী। এছাড়াও হাসপাতালের যে তিনটি মূল গেট রয়েছে, সেখানেও সর্বক্ষণের জন্য মোতায়েন থাকছে বাহিনী। গেট ৬- ওপিডি গেটে আধাসেনা থাকবে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। জরুরি বিভাগের দুই গেটে বাহিনী থাকবে ২৪ ঘণ্টাই। এছাড়া এমার্জেন্সি বিল্ডিং, ট্রমা কেয়ার, ওপিডি, প্রশাসনিক ভবনে থাকছে মেটাল ডিটেক্টর।
আরজি করের সাতটি ছাত্রী নিবাস। দু’টি ছাত্র নিবাস-সহ নার্সিং হস্টেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। তিন শিফটেই হাসপাতাল চত্বরে থাকবে কিউআরটি ।ওপিডি-এমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ে প্রতি শিফটে নিরাপত্তায় ছ’জন জওয়ান মোতায়েন থাকবে।
এর পাশাপাশি বাহিনী থাকবে অক্সিজেন প্ল্যান্ট, রেডিও অ্যাক্টিভ সরঞ্জাম থাকা ঘরেও। হাসপাতালের সীমানা দেওয়ালের সংস্কারেও নজর সিআইএসএফের। একই সঙ্গে বাহিনী পরিচালনায় খোলা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম। হাসপাতালের গেস্ট হাউসে সর্বক্ষণের জন্য এসিপি পদমর্যাদার দুই আধিকারিক থাকছেন।
কলকাতা থেকে
প্রসঙ্গত, আরজি করের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে গত ৯ অগস্ট এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর থেকে আরজি কর উত্তাল। সুবিচার চেয়ে এবং হাসপাতালের মধ্যে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভে শামিল হন চিকিৎসকেরা। এখনও তাঁদের কর্মবিরতি চলছে।
আরজি করের আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়েছে গোটা দেশে। ক্রমে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে অন্যান্য হাসপাতালগুলিতেও। এই পরিস্থিতিতে গত ১৪ অগস্ট আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতা জুড়ে মহিলাদের ‘রাত দখল’ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেই কর্মসূচি চলাকালীন রাতে আরজি করে হামলা চালায় এক দল দুষ্কৃতী। ভাঙচুর করা হয় জরুরি বিভাগে।
সেই ঘটনায় কলকাতা পুলিশের ব্যর্থতা দেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যকে ভর্ৎসনাও করা হয়েছে। তার পরেই হাসপাতালে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, হামলার পর হাসপাতালে ঘটনাস্থল সুরক্ষিত রয়েছে বলে দাবি করে পুলিশ। সেখানে হামলাকারীরা পৌঁছতে পারেনি বলে জানায় তারা।