দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বারবার ঘাম মুছে চলেছিলেন মঞ্চে।পিছনে লাইটগুলো নেভাতে বলেছিলেন। শোনেনি কেউ। অস্বস্তিটা বাড়ছিল। হয়তো বুকে কষ্টও হচ্ছিল। তবু কথা তিনি রেখেছেন। অনুষ্ঠান শেষ করে তবেই বের হন নজরুল মঞ্চ থেকে। চেপে বসেন গাড়িতে। গাড়িতে বেশ শীত করছিল তাঁর। অত গরমের পর আচমকাই ঠান্ডা। তখনই কি ইঙ্গিত দিয়েছিল হৃদযন্ত্র!‌ কে কে বুঝতে পারেননি।  

কোনও মতে অনুষ্ঠান সেরে হোটেলে ফিরেছিলেন।ঘরে ঢুকে সোফায় বসতে গিয়ে পড়ে যান। তার পর সব শেষ। সঙ্গে সঙ্গে সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় কৃষ্ণকুমার কুন্নথকে।

চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার আকস্মিকতার জন্য ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেয় কলকাতা পুলিশ। থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর রিপোর্টও করা হয়।  এদিন এসএসকেএম হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয় শিল্পীর। প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, মৃত্যুতে কোনও সন্দেহজনক বা অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়েনি।

কার্ডিয়াক অ্যারেস্টই মৃত্যুর কারণ। এক পুলিশ অফিসার জানালেন, প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশনেই মৃত্যু হয়েছে গায়কের। চিকিৎসাগত পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, দীর্ঘদিন তাঁর কার্ডিয়াক সমস্যা ছিল। অর্থাৎ হৃদযন্ত্রের সমস্যা ছিল। ৭২ ঘণ্টা পর চূড়ান্ত রিপোর্ট মিলবে। তখনই আরও তথ্য উঠে আসবে। 

বুধবার মঞ্চ থেকে সোজা চলে যান গ্র‌্যান্ড হোটেলে। সেই হোটেলের লবিতে ছিল সিসিটিভি। সেখানকারই ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। কে কে শেষ মুহূর্তগুলো উঠে এসেছে। লবি দিয়ে হাঁটছেন তিনি। তার পরেই ঢুকে যান নিজের ঘরে। সোফায় বসতে যান। কিন্তু পারেননি। পড়ে যান নীচে। তার পর আর কোনও জ্ঞান ছিল না। তখনই হয়তো পাড়ি দেন অজানার দেশে। 

 লবিতে রাখা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেল, গলায় তোয়ালে জড়িয়ে হেঁটে চলেছে কে কে। যদিও তাঁর হাঁটচলায় তখনও কোনও জড়তা নেই। কষ্ট নেই। অন্তত দেখে কেউ বলবে না। পাশে রয়েছেন ম্যানেজার। জানা গিয়েছে হোটেলে ঢোকার মুখেও ভক্তদের আবদার মেনে সেলফি তুলেছেন। কে জানত, তখন তোলপাড় হচ্ছে তাঁর শরীরের ভিতরে।  

কে কের এই মৃত্যু জন্য আঙুল উঠেছে অনুষ্ঠানের আয়োজকদের দিকেও। নজরুল মঞ্চে আসন ছিল ২,৪৮২ জনের। এদিকে বুধবার কে কের গান শুনতে ভিড় করেন প্রায় সাত হাজার জন। আয়োজক গুরুদাস কলেজের ছাত্র সংগঠনের দিকেই আঙুল তুলেছেন বিরোধীরা। পাশাপাশি নজরুল মঞ্চ কর্তৃপক্ষ কেন এসি বন্ধ করে দিল, সেই প্রশ্ন উঠল। আজীবন বিতর্ক থেকে দূরে থাকা শিল্পীর মৃত্যু তুলে দিল অনেক প্রশ্ন। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here