দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সোমবার থেকে শুরু হল ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। চলবে ১ মে পর্যন্ত। এদিন নজরুল মঞ্চে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বলিউড অভিনেতা তথা আসানসোলের তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা। এর আগে একাধিকবার অমিতাভ বচ্চন ও শাহরুখ খানকে এই অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে।
এবার শত্রুঘ্ন ছাড়া বলিউডের কোনও তারকাকে অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লতা মঙ্গেশকর, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় থেকে বাপ্পি লাহিড়ী, প্রয়াত কিংবদন্তিদের স্মরণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার কথায় উঠে এল প্রয়াত অভিনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাও।
লতা মঙ্গেশকরজিকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাই। তাঁর গান চিরজীবনের জন্য রয়ে যাবে। তাঁকে আমরা বঙ্গবিভূষণ দিতে চেয়েছিলাম মুম্বইতে গিয়ে। কিন্তু, তখন ওনার শরীর ভাল ছিল না।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। মাঝে মাঝে ফোন করতেন। আমার কাছে গান শুনতে চাইতেন। আমি বলতাম, আপনি গীতশ্রী, আপনাকে আমি গান শোনাব। কোনও কথা শুনতেন না। গান গাইতে হতই।
বাংলা সিনেমার জৌলুস বেড়েছে। বাংলার সিনেমায় গভীর শিকড়ের টান রয়েছে। বলিউডে সিনেমায় প্রচুর টাকা ঢালা হয়। কিন্তু, বাংলায় তা হয় না। তা সত্ত্বেও এখানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানও হয়। অনেক মানুষ নিজের ভবিষ্যৎ তৈরি করেন।
বাংলা সিনেমায় বিনিযোগের জন্য বলিউডের প্রযোজকদের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করব শত্রুঘ্নজিকে।
এবছর বিশ্ববাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে ডাকা হয়নি সিনেমা ও টেলিভিশন জগতের শিল্পীদের। আগামী বছর থেকে তাঁরাও যাতে বাণিজ্য সম্মেলনে থাকতে পারেন, তা দেখবেন মুখ্যসচিব।
ঘরে ঘরে মানুষ টেলিভিশন চ্যানেল দেখছেন। নানা সাংসারিক কাহিনি দেখে মানুষ খুশি হচ্ছেন।
আমার স্বপ্ন বিশ্ব বাংলা। আমার স্বপ্ন সেরা বাংলা। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। যাতে একদিন সবাই বলে, বাংলা যা আজ চিন্তা করে, বিশ্ব আগামিকাল সেই চিন্তা করে।
এ বারের উৎসব সর্বাথেই সত্যজিৎময়! শুরুতেই গুপি বাঘার সাজে মঞ্চে হাজির হয়ে অনুষ্ঠানের সুর বেঁধে দিলেন সাহেব চট্টোপাধ্যায় ও বিশ্বনাথ বসু। একে একে নৃত্য শৈলী নিয়ে হাজির হলেন শুভশ্রী, দিতিপ্রিয়া, কৌশানীরা। মহামারি কাটিয়ে চলচ্চিত্র উৎসব বলে কথা! নায়িকাদের সাজে এতটুকু খামতি নেই! মঞ্চ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল রূপ-লাস্যের বন্যা!
একে একে মঞ্চ আলো করে উপস্থিত হন তারকারা। এ বারের থালি গার্ল সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় মোমবাতির আলো তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। মমতার ছোঁয়ানো আগুনে শুভ সূচনা হল ২৭তম চলচ্চিত্র উৎসবের। গৌতম ঘোষ স্বল্প কথায় মনে করিয়ে দিলেন চলচ্চিত্র উৎসবের শুরুর দিনগুলির কথা।
এ বছরের মতো সে দিনও উৎসব ছিল সত্যজিৎময়। প্রিয় ‘মানিকদা’ বলেছিলেন, ‘‘শহরের হাজারও সমস্যা আছে, খামতি আছে। কিন্তু উৎসাহে এতটুকু খামতি নেই!’’ এ দিনের আয়োজন দেখে পরিচালকের মনে ভিড় করেছে ফেলে আসা সময়ের স্মৃতি। সত্যজিৎ-পুত্র সন্দীপ রায়ের গলায় কৃতজ্ঞতার সুর— ‘‘আপনারা যে ভাবে আমার বাবাকে মাথায় করে রেখেছেন, তাতে আমি ও রায় পরিবার আপ্লুত।’’
তবে নিঃসন্দেহে এ বারের অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ প্রধান অতিথি শত্রুঘ্ন সিনহা! তিনি মঞ্চের সামনে পৌঁছতেই যেন গমগম করে উঠল চার পাশ। ‘খামোশ!’ সাংসদ শত্রুঘ্ন অকপটে স্বীকার করলেন, বাংলা তাঁর সিনেমার পাঠশালা। আর গৌতম ঘোষের ‘অন্তর্জলি যাত্রা’ ছিল তাঁর সিনেমার ক্লাসরুম।
দর্শকের উৎসাহই বলছিল, বাইরে যতই তাপপ্রবাহ থাকুক, উৎসব সফল করতে কলকতাবাসী বদ্ধপরিকর। একটুআধটু আফশোসও অবশ্য কানে এসেছে— ‘‘ইশ! এ বারও যদি এসআরকে থাকত!’’