দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কেরলের এর্নাকুলামের বাসিন্দা, দুই তরুণী রোজেলিন ও পদ্মাকে বেশ কয়েকমাস ধরেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। , তাঁরা রাস্তার ধারে স্টল দিয়ে লটারির টিকিট বিক্রি করতেন। গত জুন মাসে আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান রোজেলিন। সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন পদ্মাও।
তল্লাশি শুরু হতেই শেষমেশ বেরিয়ে আসে এক ভয়ংকর তথ্য। জানা যায়, দুই মহিলাই নরবলির শিকার হয়েছেন। সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে, রাতারাতি বড়লোক হতে নাকি এই দু’জনকে বলি দিয়েছে এক দম্পতি। তার পরে মাংস খেয়েছেন সেই দেহের।
কেরলের ‘নরবলি’ কাণ্ডে তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই সামনে আসছে চমকে দেওয়া তথ্য। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত দম্পতি শুধু যে দুই মহিলাকে নৃশংস ভাবে খুন করেছে তাই নয়, তারা সম্ভবত মৃতদের মাংস এবং রক্তও খেয়েছে!
কোচি সিটি পুলিশের কমিশনার নাগারাজু চাকিলাম জানিয়েছেন, “আমরা গোটা বিষয়টি সন্দেহ করছি। এখনও যথেষ্ট প্রমাণ মেলেনি। ফরেন্সিক পরীক্ষা চলছে, সবরকম প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত আমাদের ধারণা অভিযুক্তরা সাইকোপ্যাথ এবং পার্ভার্ট। বিকৃত যৌনকাম থেকেই মূলত এই কাণ্ড ঘটিয়েছে তারা।”
পুলিশ জানিয়েছে, রোসেলিন এবং পদ্মার হাত-পা বাঁধা হয়। তার পর তাঁদের গলা টিপে খুন করা হয়। এর পর দু’জনেরই স্তন কেটে ফেলা হয়। শরীর থেকে সমস্ত রক্ত বেরিয়ে যাওয়ার পর দু’জনের দেহ টুকরো করে কাটা হয়। তাঁদের মধ্যে এক জনের দেহ ৫৬ টুকরো করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, বিত্তশালী হতে সফির কথায় সেই মাংসও খেয়েছিলেন অভিযুক্ত দম্পতি। এমনই সন্দেহ করছে পুলিশ। তার পর দুই মহিলার শরীরের বাকি অংশ তিনটি গর্তে পুঁতে দেন অভিযুক্তরা।
ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত দম্পতির নাম ভগবন্ত সিং ও লাইলা। জানা গেছে, এদের একটি ম্যাসাজ পার্লারও রয়েছে। পুলিশের কাছে জেরায় তারা খুনের অভিযোগ স্বীকার করেছে। একইসঙ্গে জেরায় তারা জানিয়েছে, তাদের বিশ্বাস ছিল নরবলি দিলে সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা আসবে। খুব শিগগিরই বড়লোক হয়ে যাবে। পাশাপাশি তারা মাংস খাওয়ার বিষয়টিও স্বীকার করেছে বলে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি।
তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের কাছে আরও একটি নাম উঠে এসেছে। তার নাম রশিদ ওরফে মহম্মদ শফি। সূত্রের খবর, এই ব্যক্তিই দম্পতিকে নরবলি দেওয়ার কথা বলেছিল। শুধু তাই নয়, ওই দুই মহিলাকে জোগাড় করে দম্পতির বাড়িতে নিয়ে আসার দায়িত্বও নিজের কাঁধেই নিয়েছিল শফি। তাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পেশায় এক জন থেরাপিস্ট অভিযুক্ত ভগবল সিংহ। পুলিশ জানতে পেরেছে যে, নিজেদের ভাগ্য বদলানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন ভগবৎ এবং তাঁর স্ত্রী লায়লা। আর সেই সুবাদে পরিচয় সফির সঙ্গে। সফিই তখন তাঁদের নরবলি দেওয়ার পরামর্শ দেন।