অঙ্কিতা বনিক, বনগাঁ : পুরাণ বলে, ইন্দ্রের উদ্যানের পারিজাত বৃক্ষকেই ‘কল্পতরু’ বলা হয়েছে। অর্থাৎ সেই বৃক্ষ, যার কাছে ভালো-খারাপ, যা চাওয়া যায়, তা-ই মিলবে।সমুদ্র মন্থনকালে অমৃত, লক্ষ্মীদেবী, ঐরাবত, কৌস্তুভ মনি ইত্যাদির সঙ্গে উঠে আসে একটি বৃক্ষ-ও। পারিজাত বৃক্ষ। যা পরবর্তীতে দেবরাজ ইন্দ্রের নন্দনকাননের শোভা বর্ধন করেছিল, এমনটাই জানা যায়।
১৯৯৫ সালের প্রারম্ভে ঠাকুর ক্লার্জিম্যান’স থ্রোট রোগে আক্রান্ত হন। ক্রমে এই রোগ গলার ক্যানসারের আকার ধারণ করে। কলকাতার শ্যামপুকুর অঞ্চলে তাঁকে নিয়ে আসা হয়। বিশিষ্ট চিকিৎসক মহেন্দ্রলাল সরকার তাঁর চিকিৎসায় নিযুক্ত হন। অবস্থা সংকটজনক হলে ১৮৮৫ সালের ১১ ডিসেম্বর তারিখে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কাশীপুরের এক বিরাট বাগানবাড়িতে।১৮৮৬ সালের ১ লা জানুয়ারি এখানেই লোকশিক্ষক পরমপুরুষ শ্রীরামকৃষ্ণ নিজেকে কল্পতরু হিসেবে ঘোষণা করেন এই দিন।
কল্পতরু উৎসবের দিন ঠাকুরের ভক্তরা তাঁকে অবতার রূপে মেনে নেন। কথিত আছে, সেদিন উপস্থিত সমস্ত ভক্তের মনোবাঞ্ছা ঠাকুরের কৃপায় পূরণ হয়েছিল। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে, এই দিন ঠাকুর রামকৃষ্ণদেব সকলের মনের ইচ্ছা পূরণ করেন।
রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশনের, বনগাঁ শাখায়ও এদিন মহাসমারোহে পালিত হয় কল্পতরু দিবস। এই দিন মিশনে সকাল থেকেই শুরু হয়ে যায় ঠাকুরের পুজা।একে একে ভক্তদের আগমনে সকাল ৮ টা থেকে দীক্ষার অনুষ্ঠান শুরু হয়।এরপর সারাদিন ব্যাপি চলে ভক্তিমূলক সঙ্গীতানুষ্ঠান।দুপুরে আয়োজন ছিল প্রসাদ বিতরণ।খিচুড়ি,তরকারি,চাটনি,পায়েস ও জিলিপি, প্রসাদ পেয়েছেন প্রায় ২০০ জন মানুষ।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ ও অন্যান্য কাউন্সিলর বৃন্দ।সন্ধে বেলায় অনুষ্ঠিত হয় বিনাপাণী নাট্যদলের পরিচালনায় নাটক ‘রামপ্রসাদ’।