অর্পিতা বনিক, শিলিন্দা: তারাপীঠ, কামাখ্যা থেকে ঠনঠনিয়া, করুণাময়ী, বেলুড়। শ্যামা আরাধনায় মাতোয়ারা বাংলা। বারাসাত থেকে নৈহাটির বড়মার পুজো, বৃষ্টির মধ্যেই চলল দেবী দর্শন। বাড়ির কালী পুজোয় মুখ্যমন্ত্রী। হাত লাগালেন ভোগ রান্নায়। আমেরিকা থেকে ফিরেই গেলেন অভিষেক। গেলেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল। 

কালী পুজোর সঙ্গে বাংলার যেন এক অবিচ্ছিন্ন যোগ রয়েছে। শক্তিপীঠ, সতীপীঠগুলিতে এদিন সকাল থেকেই চলছে উপাসনা। উপাচার মেনে চলছে পুজো। পাশাপাশি মন্দিরগুলিতে নেমেছে ভক্তদের ঢল। কলকাতার পাশাপাশি জেলাগুলিও মেতেছে কালী পুজোর আরাধনায়।

রবিবার সন্ধ্যায় নদিয়ার শিলিন্দা বিবেকানন্দ সংঘ ও পাঠাগারের পুজো মন্ডপের উদ্বোধন হয়েছে সাড়ম্বরে। 

এবার ৩৯তম বর্ষে পদার্পন করলো তাঁদের পুজো। ক্লাব সদস্যদের নৈপুণ্যে সাজানো হয়েছে পুজোমন্ডপ। সমস্ত আয়োজন করা হয়েছে বিধি মেনেই। দেখুন ভিডিও:

গত দু বছরের মহামারীর ভয় ভুলে এলাকার হাজার হাজার মানুষ সামিল হচ্ছেন এই আনন্দযজ্ঞে। আমন্ত্রিত অতিথিদের উপস্থিতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে ক্লাব প্রাঙ্গণ৷ সম্পূর্ণ নিষ্ঠা ভরে পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণে সঙ্গে শঙ্খ ও ঘন্টার ধ্বনিতে মুখরিত হলো সিলিন্দা এলাকা। ঝড়-বৃষ্টি না সেভাবে না হওয়ায় সকলের মুখে ফুটলো হাসি।

পুজোর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে রবিবার উপস্থিত অতিথিদেরকে উত্তরীও এবং ম্মারক দিয়ে সংবর্ধিত করা হয় ক্লাবের পক্ষ থেকে৷ 

দুর্গার অন্যরূপ হলেও কালীরও রয়েছে নানা রূপ। সেসবই বিভিন্ন পুরাণে উল্লেখ করা রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলার বুকে কালী পূজিত হয়ে আসছে। বেশিরভাগ মানুষই শাক্ত মতে কালীপুজো করে থাকেন। সনাতন ধর্মেও কালী বা কালিকা হলেন শক্তির দেবী।

কালীপুজো বা শ্যামাপুজোকে কেন্দ্র করে কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে অনুষ্ঠিত দেবী কালীর আরাধনা করা হয়। বাংলায় গৃহে বা মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত কালীপ্রতিমার নিত্যপুজো হয়ে থাকলেও এই দিন বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। এদিন দীপান্বিতা কালীপুজো বিশেষ জনপ্রিয়। আলোকসজ্জা ও আতসবাজির উত্‍সবের মধ্যে দিয়ে এই তিথিতে সারারাত কালীর আরাধনায় মেতে থাকেন বাঙালিরা। গোটা পশ্চিমবঙ্গে নানা রূপে দেবী কালীর মন্দির রয়েছে। তার মধ্যে এমন কতকগুলি কালী মন্দির রয়েছে যেগুলি খুবই জাগ্রত।

বাঙালি হিন্দু সমাজে কালীর মাতৃরূপের পূজা বিশেষ জনপ্রিয়। দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনের জন্যেই দেবী কালীর পূজা করা হয়। দেবী কালীর অসংখ্য নামের মধ্যে দক্ষিণ, সিদ্ধ, গুন্য, ভদ্র, শ্মশান, রক্ষা ও মহাকালী। তন্ত্র অনুসারে, কালী দশমহাবিদ্যা নামে পরিচিত দশজন প্রধান তান্ত্রিক দেবীর প্রথম। দশমহাবিদ্যার ইনি প্রথমা মহাবিদ্যা। শাক্ত মতে, কালী বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আদি কারণ।

পশ্চিমবঙ্গে ছড়িয়ে রয়েছে বিশেষ কিছু সতীপীঠ ও জাগ্রত কালী মন্দির। লোকবিশ্বাস সেই সব মন্দিরে দেবীর কাছে যা আশীর্বাদ চাওয়া হয়, কেউ কখনও খালি হাতে ফেরত আসেন না। সকলের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন তিনি। শত শত বছর ধরে এই সব মন্দিরের মাহাত্ম্য লোমুখে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলায় ওই জাগ্রত কালীমন্দিরের নাম ও মাহাত্ম্যের কথা নিয়ে ৫১ সতীপীঠ – এর মায়ের বিভিন্ন রুপ তুলে ধরেছেন সিলিন্দা বিবেকানন্দ সংঘ ও পাঠাগারের সদস্যরা ৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here