Kalipuja 2022:করুণাময়ী কালী মন্দিরের কুমারী পুজো ঘিরে রয়েছে ইতিহাস

0
461
টালিগঞ্জ করুণাময়ী কালী মন্দিরের কুমারী পূজো শ্যামা পূজোর দিন ছবি তুলেছেন- ধ্রুব হালদার ৷

দেশের সময়: কালীপুজোয় কুমারীপুজো। তেমন একটা শোনা যায় না। এদিক থেকে স্বতন্ত্র করুণাময়ী কালী মন্দির। এই মন্দিরের ইতিহাস আড়াইশো বছরেরও প্রাচীন। কিন্তু কুমারীপুজো শুরু হয় ২০১০ সালে।

দুর্গাপুজো বা জগদ্ধাত্রী পুজোয় কুমারী পুজোর চল থাকলেও কালীপুজোয় কুমারী পুজো শোনা যায় না। ফলে যখন নন্দদুলাল রায়চৌধুরীর বংশধররা কুমারীপুজোর সিদ্ধান্ত নেন, কুমারীপুজো হবে। তখন অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দেয়, ঠিক হচ্ছে তো? ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ কুমারীপুজো করেছেন। মন্দিরের পুরোহিত হৃদয়রামও কুমারীপুজো করেছিলেন। ফলে আর বাধা কোথায়।

ঠিক কবে থেকে শুরু হল করুণাময়ী কালী মন্দিরের পুজো। আক্ষরিক অর্থেই সে এক ইতিহাস। সাবর্ণ রায়চৌধুরী বংশের ২৭তম পুরুষ নন্দদুলাল আদি গঙ্গার এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। সালটা ছিল ১৭৬০। কেন তিনি এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করলেন? তিন পুত্র সন্তানের পিতা ছিলেন নন্দদুলাল। তাঁর একটি কন্যাসন্তানের ইচ্ছা ছিল।

ইচ্ছেপূরণ হওয়ায় মেয়ের নাম রাখেন করুণাময়ী। কিন্তু তাঁর সেই সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। সাত বছর বয়সে মারা যায় মেয়ে। ভীষণ ভেঙে পড়েন নন্দদুলাল। ঠিক করেন বাকি জীবন তীর্থে তীর্থে ঘুরে কাটিয়ে দেবেন। এমন সময় একদিন রাতে তাঁকে স্বপ্নে দেখা দেন মৃত মেয়ে। সে বলে, তুমি কেঁদো না। আমি তোমায় ছেড়ে কোথাও যেতে পারব না। কাল সকালে আদি গঙ্গার পাড়ে যাবে। দেখবে বট গাছের নিচে একটি কষ্টিপাথর পড়ে রয়েছে। সেটা দিয়ে তুমি তোমার ইষ্ট দেবীর মূর্তি গড়বে। ওই মূর্তির মাঝে আমি চিন্ময়ী হয়ে রয়ে যাব।

এই স্বপ্ন দেখার পর আনন্দে আটখানা হয়ে ওঠেন নন্দদুলাল। পরদিন ভোরে উঠেই আদি গঙ্গার পাড়ে চলে যান। দেখেন, কষ্টিপাথর পড়ে রয়েছে। তিনি ওই পাথর বুকে তুলে নেন। এরপর মায়ের পাঠানো এক ভক্ত ভাস্করকে দিয়ে তিনি মূর্তি গড়ান। প্রকট হয় নয়নাভিরাম মূর্তি। এই মন্দির দেখে আপ্লুত হয়ে গিয়েছিলেন রানি রাসমণি। শোনা যায়, এই মন্দির দেখেই তিনি দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরের নকশা করেছিলেন।

১৭৬০ সালে কার্তিক মাসের অমাবস্যায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয় মূর্তিতে। মন্দিরের দু’পাশে ছটি করে ১২টি আটচালার শিবমন্দিরও তৈরি করেন নন্দদুলাল। কিন্তু সংরক্ষণের অভাবে সেই মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকবার সংস্কার হয়েছে। অবশেষে ১৯৮৫ সালে মন্দিরটি নতুন রূপে প্রকাশ পায়।

Previous articleCyclone Sitrang: সাগর থেকে দূরত্ব কমছে সিত্রাং-এর, ক্রমেই রূপ বদলাচ্ছে দিঘার সমুদ্র
Next articleDrama: ভূমিসূতা দাসের নির্দেশনায় ‘চিত্রাঙ্গদা’ নাটক গোবরডাঙ্গা সাংস্কৃতিক মঞ্চে ঝড় তুললো রবির সন্ধ্যায়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here