অন্বেষা সেন, বারাসাত : করোনা আতঙ্কের মধ্যেই আজ কালীপুজো। তারমধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনায় ফের সংক্রমণ নিয়েও বেশ কিছুটা উদ্বেগের মধ্যেই রযেছে প্রশাসন বলাই যায়, এই অবস্থায় কালীপুজোর কাউন্ট ডাউন শুরু তৈরী বারাসত ও মধ্যমগ্রাম সকাল থেকেই মন্ডপে মন্ডপে ভিড় করতে শুরু করেছেন পূণ্যার্থীরা৷
যদিও উদ্যোক্তারা দাবি করছেন, জাঁকজমক থাকলেও করোনা-বিধি মেনে পুজো করছেন তাঁরা। অন্য দিকে প্রশাসনের দাবি, ভিড় সামলাতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে, তা বোঝা যাবে আজ, বৃহস্পতিবার বিকালের পর থেকে।
এদিন সকালে বারাসতের কয়েকটি মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেল, পুলিশের নির্দেশ মেনে এমন ভাবে প্রতিমা রাখা হয়েছে যাতে রাস্তা থেকেই তা দেখা যায়। মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল বিভিন্ন পুজোর উদ্বোধন। বারাসত পুরসভার দাবি, কোভিডের কারণে গত বছর থেকে ঘটা করে উদ্বোধন বন্ধ। কোনও কোনও পুজো কমিটি ছোট করে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছে এবারও ।
বনগাঁ, বারাসত ও মধ্যমগ্রামের কালীপুজোর খ্যাতি বহু বছরের। এছাড়া বসিরহাট, টাকি, ব্যারাকপুর-সহ উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীদের ঢল নামে এখানে। উদ্যোক্তাদেরকথায় , করোনার কারণে গত বছর থেকে পুজো বহরে ছোট হয়েছে সব জায়গায়। এ বছর অবশ্য কিছুটা সেই বহর ফিরেছে।
বারাসত পুলিশ জেলার সূত্রে জানা গিয়েছে , ভিড় নিয়ন্ত্রণ-সহ নজরদারি ও তল্লাশির জন্য প্রায় দেড় হাজার পুলিশকর্মীকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। মোটরবাইকেও চলবে নজরদারি। রাস্তায় থাকবেন বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা। এক পুলিশ কর্তার কথায় ‘কী ভাবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, তা বলে দেওয়া হয়েছে উদ্যোক্তাদের। তবে পরিস্থিতি বোঝা যাবে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে।’’
প্রসঙ্গত,রাজ্যের নির্দেশ ছিল শুধুমাত্র সবুজ বাজি ফাটানো যাবে। বাকি সমস্ত বাজি নিষিদ্ধ। এবার এই সবুজ বাজি কালীপুজোর রাতে দু’ঘণ্টা ফাটানো যাবে বলেও নির্দেশ দেওয়া গিয়েছিল। তখনই অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, আদালতের সেই নির্দেশ মানা হবে তো? এবার সেই আশঙ্কা সত্যি হল। কালীপুজোর আগের রাতেই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগ উঠল।
এই পরিস্থিতিতে পুলিশের তরফেও আগাম কোনও ব্যবস্থা রাখা হয়নি বলে অভিযোগ। তাই দীপাবলির রাতে কী হবে, সেই নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে।
পরিবেশবিদদের মতে, দুর্গাপুজোয় যাঁরা দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো করোনা সতর্কতা ভুলে মণ্ডপে প্রতিমা দর্শন করতে ভিড় করেন, তাঁরা আদালতের রায়ের পরোয়া করেন না।
অবশ্য পুলিশের শীর্ষ মহলের দাবি, আজ বৃহস্পতিবার সন্ধা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত কড়া নজরদারি চালানো হবে। তবে পুলিশ কতটা সাফল্য পাবে, তা এখন প্রশ্নের মুখে। কালীপুজোয় নাইট কার্ফু তুলে দেওয়ার ঘোষণা আগেই করেছিল রাজ্য। পাশাপাশি সবুজ বাজিতে ছাড় থাকছে। পুজোর রাতে জোড়া ছাড়ের মধ্যে বিধি পালন করাতে গিয়ে যে সমস্যার মুখে পড়তে চলেছে পুলিশ, তা বোঝাই যাচ্ছে।
পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, ‘সন্ধা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত পুলিশকে একদিকে পথের ভিড় সামলাতে হবে। অন্যদিকে নিষিদ্ধ বাজি ফাটানোও রুখতে হবে। হাতে অস্ত্র বলতে কড়া নজরদারি আর কড়া আইন প্রয়োগ।’