Jyotipriya Mallick : ‘সান্ত্বনা দিতেও আসেনি কেউ’, হাবড়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পরিদর্শনে এসে রেলের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন জ্যোতিপ্রিয়

0
786

মন্ত্রীর আশ্বাসের পরও চোখের জল শুকাচ্ছে না ওদের, আবারও শূন্য থেকেই শুরু করতে হবে সবকিছু!

দেশের সময় বুধবার সন্ধেবেলা হাবড়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের রেললাইন সংলগ্ন বস্তিতে আগুন লেগেছিল। বস্তিতে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল বস্তির ৫০টিরও বেশি বাড়ির। বৃহস্পতিবার সকালে এলাকা পরিদর্শন করেন স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী  জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলির সঙ্গেও দেখা করেন বনমন্ত্রী। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই ঘটনায় কার্যত রেলের দিকে আঙুল তুলেছেন জ্যোতিপ্রিয়।

মন্ত্রী বলেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজন। গ্যাস সিলিল্ডারে বিস্ফোরণ হয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। পাশে পেট্রল পাম্প ছিল, সেখান আগুন লাগলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। হাবড়া পুরসভা, হাবড়ার মানুষকে ধন্যবাদ কারণ তারা সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করেছে। পুরসভা ও সাংসদ সাধারণ মানুষের থাকার জন্য স্কুলের ব্যবস্থা করেছে ও তাদের কম্বল দিয়েছে। পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী গতকাল আমাকে ফোন করেছিলেন। ক্ষতিগ্রস্থদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য তালিকা চেয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনায় অত্যন্ত বিচলিত।”

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “যাঁদের বাড়িতে বিয়ে রয়েছে, তাদের সরকারে রূপশ্রী পরিবার থেকে সাহায্য করা হবে। যাঁদের বই পুড়ে গিয়েছে তাদের জন্য পুরসভা বইয়ের ব্যবস্থা করবে। ৩৩টি পরিবারে ১২৫ জন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সবাইকে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। যতদিন বাড়ি তৈরি না হচ্ছে তারা এই স্কুলে থাকবে। খাওয়া দাওয়ার যাবতীয় বন্দোবস্ত আমার করে দেব। তাদর রান্নার সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। যাঁদের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র আগুনে পুড়ে গিয়েছে তাঁর বন্দোবস্ত করে দেওয়া হবে। চিন্তার কোনও কারণ নেই। আমি নিয়মিত এখানে আসব এবং খোঁজখবর রাখব।”

ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলির সঙ্গে সাক্ষাতের পর রেলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী। তিনি বলেন, “রেল কী করবে আমি জানি না। একবার সান্ত্বনা জানানোর জন্যও রেলের কেউ আসেনি। সর্বোপরি এরা সকলে মানুষ। কারও মাথার ওপর কোনও ছাদ নেই।” উল্লেখ্য, গতকাল হাবড়াতে রেললাইন সংলগ্ন বস্তিতে আগুন লাগে। একদম পাশে রেললাইন থাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। বহু স্টেশনে আটকে পড়ে বনগাঁ-শিয়ালদাগামী আপ লাইনের ট্রেন। সমস্যা পড়েন নিত্যযাত্রীরা। আগুন খানিক নিয়ন্ত্রণে এলে রেল পরিষেবা স্বাভাবিক হয়।

এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, মানুষের সুখের দিনে না থাকলেও, দুঃখের দিনে আমাকে ডাকলে পাবেন। যারা আমাকে ভোট দিয়ে বিধায়ক করেছেন কিংবা আমাকে যারা ভোট দেননি আমি সবারই বিধায়ক। উন্নয়ন, সরকারি প্রকল্প ও মানুষের সাহায্য সহযোগিতার ক্ষেত্রে আমরা কোনও ভেদাভেদ করিনা। রেল কলোনীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে আমি শুধু ছটফট করেছি সারারাত। না ঘুমিয়ে মনিটারিং করেছি পুরসভা, থানা আর দমকল আধিকারিকদের সঙ্গে। তাই সকাল হতেই ছুটে এসেছি।

এ দিন রেল বস্তি এলাকার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে বিধায়ক সর্বহারা বস্তিবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন ঘুরে দেখেন তাদের এলাকা এবং সমস্ত রকমভাবে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। গুরুত্বপূর্ণ নথি যা পুড়ে গিয়েছে তা অবিলম্বে প্রশাসনের তরফ থেকে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী এদিন ঘর ফিরিয়ে দেওয়ারও আশ্বাস দেন। পাশাপাশি অসহায় পরিবারগুলিকে আপাতত স্থানীয় স্কুলে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং সেখানেই খাবার দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলেও জানান

এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হাবড়া পুরসভায় গিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের পাশাপাশি পৌর প্রতিনিধিদের সঙ্গেও একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিং সারেন ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার বিষয়টি নিয়ে। ইতিমধ্যেই স্থানীয় কিছু সংস্থার তরফ থেকে জামা কাপড় শীত বস্ত্র সহ খাবার তুলে দেওয়া হয়েছে আগুনের গ্রাসে সর্বস্ব হারানো পরিবারগুলির হাতে। তবে আবারও শূন্য থেকেই শুরু করতে হবে পরিবার গুলির এমনটাই মত আশপাশের প্রতিবেশীদের।

Previous articleSarada Devi: সারদা মায়ের চন্দনা পাখিটি
Next article3S Studio : গোবরডাঙ্গার থ্রিএস স্টুডিও থেকে সৌমেনের ভাস্কর্য আরব সাগরের পাড়ে, ডানা মেলছে স্বপ্নরা : দেখুন .ভিডিও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here