দেশের সময়, কলকাতা : সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটে কাকুর’ কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করেছে ইডি। আর এবার রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাতের লেখা পরীক্ষা করতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
হাসপাতাল থেকে পাওয়া জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (যিনি বালু নামে সমধিক পরিচিত) সেই চিঠির হাতের লেখা পরীক্ষা করাতে চাইল ইডি। হাতের লেখার নমুনা সংগ্রহের জন্য এ বার আদালতের দ্বারস্থ হল কেন্দ্রীয় সংস্থাটি।
ইডি অভিযোগ করেছিল, এসএসকেএম হাসপাতালে বালু চিকিৎসাধীন থাকাকালীন শাহজাহান, শঙ্কর আঢ্যের নাম লেখা একটি চিঠি মেয়েকে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তাতে টাকা দেওয়া-নেওয়া সংক্রান্ত বিষয়ে নির্দেশ ছিল বলে ‘খবর’। চিঠির ভিত্তিতেই শাহজাহনের বাড়িতে তল্লাশিতে যায় ইডি। গ্রেফতার করা হয় শঙ্কর আঢ্যকে।
চিঠি উদ্ধারের পরে বালুর বয়ান নেওয়া হয়েছিল বলে ইডি সূত্রে খবর। এ বার বাংলা ও ইংরেজি মিশিয়ে লেখা সেই চিঠির ফরেন্সিক পরীক্ষা করাতে উদ্যোগী ইডির তদন্তকারীরা।
ইডির একটি সূত্র জানাচ্ছে, গত ১৯ ডিসেম্বর তাদের জেরায় বালু চিঠি লেখার বিষয়টি স্বীকার করে নেন। পরে মত বদল করে চিঠি লেখার বিষয়টি অস্বীকার করতে পারেন রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় ধৃত বালু, সে ভাবনাও রয়েছে ইডির তদন্তকারীদের মাথায়। তাই তথ্যপ্রমাণ হাতে রাখতে চান তাঁরা।
এ ছাড়াও ওই চিঠির সূত্র ধরে যে হেতু শাহজাহান এবং শঙ্করের বাড়িতে অভিযান হয়েছিল, তাই মামলা আরও পোক্ত করতে যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ হাতে রাখতে চাইছে ইডি। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবেই বালুর হাতের লেখা পরীক্ষা করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সে ক্ষেত্রে হয়তো ধৃত মন্ত্রীর অন্য কোনও লেখার সঙ্গে চিঠির লেখাটি মিলিয়ে দেখা হবে। তাই নমুনা সংগ্রহের আবেদন জানানো হয়েছে আদালতে।
উল্লেখ্য, শঙ্কর আঢ্যকে যখন ইডি গ্রেফতার করেছিল, তখন শঙ্কর-জায়া জ্যোৎস্না আঢ্য দাবি করেছিলেন ইডির অফিসাররা তাঁদের বাড়িতে গিয়ে একটি কাগজ দেখিয়েছিলেন। সেই কাগজের ভিত্তিতেই বনগাঁর দাপুটে তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন শঙ্করে স্ত্রীর। পরবর্তীতে ইডির তরফে আদালতে দাবি করা হয়েছিল, জ্যোতিপ্রিয় যখন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, তখন তিনি মেয়ের সঙ্গে চিঠি চালাচালি করেছিলেন। সেরকম একটি চিঠি কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে এসেছিল বলে দাবি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের।
প্রসঙ্গত, এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বর পরীক্ষা করেছিল ইডি।