কলকাতা : আজ রেড রোডে পুজোর কার্নিভাল। শুরু বিকেল সাড়ে চারটে থেকে। প্রায় একই সময়ে রানি রাসমণি রোডেও অপর একটি কার্নিভালের ডাক দেওয়া হয়েছে। ‘দ্রোহের কার্নিভাল’। বিকেল চারটে থেকে শুরু জমায়েত। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে ‘জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্স’-এর ডাকে দ্বিতীয় কার্নিভালটি। যার কোনও পুলিশি অনুমতি নেই। এমন অবস্থায় ‘দ্রোহের কার্নিভাল’-এর কারণে পুজোর কার্নিভালে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ। অশান্তি ছড়ানোরও আশঙ্কা করছে তারা। এমন অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা (পূর্বের ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারার সমতুল্য) জারি করল কলকাতা পুলিশ।
সোমবার বেশ রাতেই রানি রাসমণি ও তার সংলগ্ন এলাকায় ১৬৩ ধারা জারি করেছেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। নির্দেশিকায় এও উল্লেখ করা হয়েছে, লাঠি বা কোনও অস্ত্র নিয়ে উল্লিখিত এলাকায় ঘোরা যাবে না। এর সঙ্গেই বলা হয়েছে, ১৬৩ ধারা জারি থাকা এলাকায় মিছিল, সভা বা ধর্না, বিক্ষোভ প্রদর্শন করা যাবে না।
যে যে অঞ্চলে জমায়েত করা যাবে না তার তালিকাও দেওয়া হয়েছে। সেগুলি দেখুন এক নজরে ~
রানি রাসমণি রোড- পূর্বে ডোরিনা ক্রসিং থেকে পশ্চিমে নেতাজি মূর্তি পর্যন্ত। উত্তরে হাওড়া মেট্রোর গ্রিন চ্যানেল এবং রানি রাসমণি পার্ক থেকে দক্ষিণে সেন্ট্রাল বাস টারমিনাস এবং ভবানীপুর তাঁবু পর্যন্ত।
ওয়াই চ্যানেল- পূর্বে মেট্রো চ্যানেলের পুলিশ ফাঁড়ির পিছন দিক হয়ে জওহরলাল নেহরু রোডের ধার বরাবর ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত। পশ্চিমে রানি রাসমণি অ্যাভেনিউ এবং ট্রাম লাইনের পূর্ব দিক পর্যন্ত। উত্তরে এসপ্ল্যানেড রো পূর্ব থেকে দক্ষিণে রানি রাসমণি অ্যাভেনিউ পর্যন্ত।
নিউ রোড- পূর্বে ডোরিনা ক্রসিং থেকে প্রেস ক্লাব সংলগ্ন পূর্ব দিকে ফুটপাথ পর্যন্ত। পশ্চিমেও ডোরিনা ক্রসিং থেকে প্রেস ক্লাব সংলগ্ন পশ্চিম দিকে ফুটপাথ পর্যন্ত। উত্তরে ডোরিনা ক্রসিং থেকে রানি রাসমণি অ্যাভেনিউ পর্যন্ত এবং দক্ষিণে মেয়ো রোড পর্যন্ত।
মেয়ো রোড- পশ্চিমে রেড রোড থেকে পূর্বে জওহরলাল নেহরু রোড পর্যন্ত। রেড রোড থেকে জওহরলাল নেহরু রোড পর্যন্ত দু’দিকের রাস্তাতেই জমায়েত নিষিদ্ধ থাকবে।
আউটরাম রোড- পূর্বে জওহরলাল নেহরু রোড পর্যন্ত এবং পশ্চিমে কেপি রোড, রেড রোড এবং ডাফরিন রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত। কেপি রোড, রেড রোড এবং ডাফরিন রোডের সংযোগস্থল থেকে জওহরলাল নেহরু রোড পর্যন্ত উত্তর এবং দক্ষিণ উভয়মুখী রাস্তাতেই জমায়েত নিষিদ্ধ।
অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সামনে- রবীন্দ্রসদন থেকে ক্যাথিড্রাল রোডের পূর্ব দিকের ফুটপাথ থেকে সেন্ট পল্স ক্যাথিড্রাল গির্জা পর্যন্ত। পশ্চিমে ক্যাথিড্রাল রোডের পশ্চিম দিকের ফুটপাথ থেকে মোহর কুঞ্জের সামনের রাস্তা পর্যন্ত। উত্তরে সেন্ট পল্সের দক্ষিণ দিক থেকে দক্ষিণে হরিশ মুখার্জি রোড এবং এজেসি বোস রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত।
জওহরলাল নেহরু রোডে- ধর্মতলা ক্রসিং থেকে থিয়েটার রোড পর্যন্ত উভয় দিকের রাস্তায় জমায়েত নিষিদ্ধ। উত্তরে ধর্মতলা ক্রসিং থেকে দক্ষিণে শেক্সপিয়র সরণি এবং চৌরঙ্গি রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত।
কুইনস্ ওয়ে- পূর্বে ক্যাথিড্রাল রোড এবং শেক্সপিয়র সরণি সংযোগস্থল থেকে পশ্চিমে কাসুয়ারিনা এভিনিউ এবং হসপিটাল রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত। ক্যাথিড্রাল রোড এবং শেক্সপিয়র সরণির সংযোগস্থল থেকে ক্যাসুয়ারিনা এভিনিউ এবং হসপিটাল রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত উত্তর এবং দক্ষিণ উভয় দিকেই জমায়েত নিষিদ্ধ।
স্ট্র্যান্ড রোডে – উত্তরে হাওড়া ব্রিজগামী রাস্তার সংযোগস্থল থেকে দক্ষিণে কমিশনারেট রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত। হাওড়া ব্রিজগামী রাস্তার সংযোগস্থল থেকে কমিশনারেট রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত পূর্ব ও পশ্চিম উভয় দিকের রাস্তাতেই জমায়েত নিষিদ্ধ।
প্রসঙ্গত, সোমবার বিকেলে কলকাতা পুলিশের তরফে ছাড়পত্র না পেয়ে চটে লাল চিকিৎসকরা। আয়োজক সংগঠন ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স-র তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আমাদের আটকানো যাবে না। আগেই আমরা পুলিশকে পুরো বিষয় জানিয়েছি। মঙ্গলবার আমাদের কর্মসূচি হচ্ছেই।
এদিকে পুজোর কার্নিভাল বন্ধ করতে চেয়ে ময়দানে নেমে পড়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। মঙ্গলবার দলীয় পতাকা ছাড়া রাজ্যের বিশিষ্ট নাগরিক থেকে আমজনতাকে মিছিলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানালেন তিনি।