Junior Doctors Hunger Strikeমুখ্যমন্ত্রীকে ডেডলাইন জুনিয়র চিকিৎসকদের, দাবি না মিটলে মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে স্বাস্থ্য ধর্মঘট

0
30

দেশের সময় কলকাতা : সোমবারের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে সমস্ত দাবি মানতে হবে। না হলে মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে সরকারি বেসরকারি সমস্ত ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ধর্মঘটে নামবেন চিকিৎসকরা। শুক্রবার রাতে জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষে এমনই হুমকি দিলেন দেবাশীষ হালদার। তার বক্তব্য, আমরা সোমবার পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীকে সময় দিচ্ছি। তার মধ্যে আমাদের সমস্ত দাবি মেনে নিতে হবে রাজ্য সরকারকে। নতুবা আমরা মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে স্বাস্থ্য ধর্মঘট করব। ধর্মঘট চলাকালীন যদি একজন রোগীরও কোন খারাপ কিছু হয় তার যাবতীয় দায়িত্ব নিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। সিনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেই আমরা এই আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এদিকে আরজিকরের নিহত তরুণী চিকিৎসকের মা ও বাবার করুণ আর্তি, জানি না বিচার পেতে আমাদের আর কতদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে আমাদের একটাই আর্তি, মেয়ের খুনের বিচার না পাওয়া পর্যন্ত রাজ্যবাসী দেশবাসী এবং বিশ্ববাসী যেন আমাদের পাশে থাকেন।

আন্দোলনের পরবর্তী রূপরেখা ঠিক করতে সিনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেই বৈঠকের পরই সন্ধেয় ধর্মতলার অনশনমঞ্চ থেকে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দেন, সোমবারের মধ্য়ে ১০ দফা দাবি পূরণ না হলে মঙ্গলবার থেকে রাজ্যে সর্বাত্মক স্বাস্থ্য ধর্মঘট পালিত হবে।

জুনিয়রদের পাশাপাশি তাতে সামিল হবেন সিনিয়র চিকিৎসকরাও। এবং দাবি না মানলে আগামীদিনে আন্দোলন আরও বৃহত্তর করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা। একই সঙ্গে দেবাশিস এও বলেন, “ধর্মঘটের ফলে কোনও রোগীর কিছু হলে তার দায়ভার বর্তাবে রাজ্যের ওপর। কারণ, আমরা দিনের পর দিন  ধৈর্য্য ধরেছি।। সরকার কোনও সদিচ্ছা দেখায়নি।”

আরজি কর ইস্যুতে ১০ দফা দাবিতে গত ৫ অক্টোবর থেকে ধর্মতলায় আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। অনশনে কর্মসূচি চলছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালেও।

শুক্রবার বিকেলে অনশন মঞ্চ থেকে অনশনরত সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, সিগ্ধা হাজরারা প্রশ্ন তোলেন, “মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুজোয় মেতে আছেন। অথচ গত ১৩ দিন ধরে আমরা শুধু জল খেয়ে আছি। অথচ আমাদের দেখতে উনি এক বারের জন্যেও এলেন না!” তাঁরা এই প্রশ্নও তোলেন,  কোথায় গেল ওঁর মাতৃসত্তা?”

প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা জবাব দেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্দেশে কুণাল বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী তো আগেই আপনাদের কাছে গিয়েছিলেন। আপনারা তো ওনার কথা শোনেননি। তখন রাজনীতি করছেন। বসিয়ে রেখেছেন, অপমান করেছেন। তারপরেও তো উনি সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে চলেছেন।”

কুণাল এও বলেন, “তারপরেও আপনারা যতবার খুশি যেখানে খুশি বসে পড়বেন আর বলবেন মুখ্যমন্ত্রী একবার আসতে পারলেন না, এটা কোনও যুক্তিসঙ্গত কথা হল।”  তৃণমূল নেতা মনে করিয়ে দিয়েছেন, শুধু স্বাস্থ্য ভবনে জুনিয়র চিকিৎসকদের ধর্না মঞ্চে ছুটে যাওয়ায় নয়, তাঁদের সমস্যা সমাধানে কালীঘাটের বাড়িতে, এমনকী নবান্নেও একাধিক বৈঠক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

প্রসঙ্গত, অনশন প্রত্যাহারের জন্য আগেই সরকারের তরফে একাধিকবার আন্দোলনকারীদের আর্জি জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। অনশনরত পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের অবস্থার দিকে নজর রাখার জন্য এদিনই মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের চিঠিও দিয়েছেন স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। 

এমন আবহে আন্দোলনের পরবর্তী রূপরেখা ঠিক করতে সিনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। ওই বৈঠক শেষে মঙ্গলবার রাতে সাংবাদিক বৈঠক থেকে জুনিয়র চিকিৎসকরা সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জানিয়ে দেন, সোমবারের মধ্যে ১০ দফা দাবি পূরণ না হলে মঙ্গলবার থেকে রাজ্যজুড়ে স্বাস্থ্য ধর্মঘট পালন করা হবে। 

Previous articleSealdah ESI Hospital শিয়ালদা ইএসআই হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, স্থানান্তর করা হয় খোলা আকাশের নীচে থাকা রোগীদের

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here