Jagannath Dev ২২ ঘড়া গঙ্গাজল, দেড়মণ দুধে হুগলির মাহেশে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা, পুণ্যার্থীদের ঢল পুরী , মায়াপুরেও

0
66
হীয়া রায়

দেশের সময় : শনিবারে হুগলির মাহেশে সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হল জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা। এবারে এই স্নানযাত্রা ৬২৮ বছরে পা দিল। স্নানযাত্রাকে ঘিরে সকাল থেকেই উৎসব মুখর মাহেশ। সকালে মঙ্গল আরতি, নিমকাঠের দাঁতনের পর, সুগন্ধি, দুধ, গঙ্গাজল-সহ পঞ্চদ্রব্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হল জগন্নাথদেবের অভিষেক স্নান। জগন্নাথদেবের রথযাত্রাকে ঘিরে এদিন ভক্তদের ঢল নেমেছে পুরী এবং মায়াপুরেও।

আগামী ৭ জুলাই সোজারথ। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, স্নানযাত্রার পর জগন্নাথদেবের কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। যে কারণে কয়েকদিন বন্ধ থাকবে মন্দির। রথযাত্রার দু’দিন আগে হবে নব কলেবর উৎসব। সেদিনই খোলা হবে জগন্নাথদেবের মন্দির।

সুগন্ধি, দুধ, গঙ্গাজল-সহ পঞ্চদ্রব্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হল জগন্নাথদেবের অভিষেক স্নান। পুরাণে কথিত রয়েছে, বৈশাখ, জৈষ্ঠের প্রবল গরমের পর আষাঢ়ের পূর্ণিমায় গায়ে জল ঢেলে অঙ্গ জুড়ান জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। যে কারণে এই উৎসবের নাম স্নানযাত্রা।

সেই মতো এদিন দেড়মণ দুধ ও ২২ ঘড়া গঙ্গাজলে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা সম্পন্ন হয়। যা দেখতে হুগলি তো বটেই সারা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু পুণ্য়ার্থীরা হাজির হয়েছিলেন।

কাকভোরে স্নানযাত্রার জন্য জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে বের করা হয়। তারপরই সাড়ম্বরে হয় স্নানযাত্রা। তবে পুরীতে ১২ বছর অন্তর নব কলেবর হলেও মাহেশে বিগ্রহের কোনও পরিবর্তন করা হয় না। শুরু থেকে একই বিগ্রহে পুজো করা হচ্ছে। 

প্রতি বছর দেবস্নান পূর্ণিমায় এই রীতি পালিত হয়। জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমা তিথিতে স্নানযাত্রা হয় বলে একে স্নান পূর্ণিমা বা দেবস্নান পূর্ণিমা বলা হয়ে থাকে। মহাস্নানের আগে অবধি রত্নবেদীতেই অবস্থান করেন জগন্নাথ। প্রথমে জগন্নাথ, তারপর বলভদ্র, শেষে সুভদ্রাকে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে পুজো করেন মন্দিরের সেবায়েতরা। তারপর তিন ভাই বোনকে নিয়ে যাওয়া হয় স্নানবেদীতে।

সুন্দর পট্টবস্ত্র দিয়ে ঢেকে জগন্নাথদেব সহ বলরাম ও সুভদ্রাকে স্নানমঞ্চে নিয়ে আসা হয়। সেই সময় চামর ও তালপাতা দিয়ে তিন দেবতাকে বাতাস করা হয়। সেখানে মঙ্গল আরতি ও সূর্য আরাধনার পর তিনজনকে মহাস্নানের জন্য প্রস্তুত করানো হয়। মন্দিরের দক্ষিণ দিকের দরজায় রয়েছে কুয়ো। সেই কুয়ো থেকে ১০৮ ঘটি জল তুলে সেই জলে স্নান করেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা।

স্নানের পর জগন্নাথ ও বলরামের হাতিবেশ বা গণেশবেশ পরানো হয়ে থাকে। কথিত আছে, স্বয়ং জগন্নাথদেব মহারাজা ইন্দ্রদ্যুম্নকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে মহাস্নানের পর তাঁর অঙ্গরাগবিহীন রূপ যেন কেউ না দেখেন। তাই স্নানযাত্রার পর থেকে ১৫ দিন পুরীর মন্দিরের দরজা সাধারণের জন্য বন্ধ থাকে। আবার বলা হয়ে থাকে যে ১০৮ কলসি জলে স্নান করে এরপর জ্বর আসে তিন ভাই বোনেরই। সর্দি জ্বর হওয়ার কারণে তাঁদের এই সময় মন্দিরের অন্য একটি ঘরে আলাদা রাখা হয়।

রাজ বৈদ্যের দেওয়া ওষুধ ও পথ্য খেয়ে ১৫ দিন পরে আবার বাইরে আসেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। এরপর যখন নবমূর্তিতে জগন্নাথদেব নানা বেশভূষায় সুসজ্জিত হয়ে দর্শন দেন তখন সেই উৎসবকে বলা হয় নেত্রোৎসব বা নবযৌবন উৎসব।।

Previous articleWeather update আগামী সপ্তাহেই ভোলবদল আবহাওয়ার, জানুন হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস
Next article Lynched’বাচ্চা চুরি করতে এসেছিস’,মেলার মধ্যেই গণপিটুনি! হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন যুবক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here