আইএনটিটিইউসির উদ্যোগে বনগাঁয় দশ হাজার মানুষকে শীত বস্ত্র প্রদান!
দেশের সময়: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যাঁরা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করছে, পঞ্চায়েতে তাদের এমনভাবে হারান, যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। শনিবার বনগাঁর খেলাঘর ময়দানে আইএনটিটিইউসির শ্রমিক সমাবেশে যোগ দিয়ে এমনই বার্তা দিলেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনমুখী কর্মসূচি শুধু রাজ্য কিংবা দেশ নয়, গোটা বিশ্বের মঞ্চে বিশেষভাবে সমাদৃত হচ্ছে। আর তা দেখেই গা জ্বালা করছে বিজেপির।রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে ভাতে মারার চেষ্টা চলছে। যাবতীয় গাইড লাইন মানা সত্ত্বেও আবাস যোজনার টাকা আটকে রাখা হয়েছে। একশো দিনের কাজের মজুরি দেওয়া হচ্ছে না। নানাভাবে উন্নয়নের টাকা আটকে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তাই আমার একটাই আবেদন, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে পাহাড় থেকে সাগর তৃণমূলের জয় এমনভাবে সুনিশ্চিত করতে হবে যে, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রকারী বিজেপি যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। পঞ্চায়েতে গোহারা হারিয়েই বিজেপির মিথ্যাচারের জবাব দিতে হবে।
ঋতব্রত বলেন, বাংলার মাটি চৈতন্যদেবের মাটি। প্রভু নিত্যানন্দের মাটি। আজ থেকে সাড়ে পাঁচশো বছর আগে তাঁরা ধর্মের বেড়া ভেঙেছিলেন। বর্ণের বেড়া ভেঙেছিলেন। ভেঙেছিলেন জাতপাতের বেড়া। গোটা পৃথিবীতে এর একটা মাধুর্য আছে। কিন্তু হঠাৎ করেই বাংলায় দেখা যাচ্ছে কিছু লোক তিলক কেটে, খোল করতাল নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন। এরা কারা? এদের সঙ্গে সনাতন ধর্মের কোনও যোগ নেই। বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে একমাত্র চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেকারণেই তিনি বাংলার লোকশিল্পীদের ঢাক, ঢোল, মাদল দিচ্ছেন।
বনগাঁর মাটিতে দাঁড়িয়ে ঋতব্রতর ঘোষণা, দুই বাংলার সীমান্ত থেকে যদি কাঁটাতার তুলে দেওয়া হয়, তা হলে দেখা যাবে অবিভক্ত বাংলার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে হাজার বছরের দুর্গাপুজোর ইতিহাস। বাংলার সেই প্রাচীন দুর্গাপুজোকে বিশ্বজনীন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ বিজেপি বলে বেড়াচ্ছে, বাংলায় নাকি দুর্গাপুজো হয় না। বাংলার মানুষের সঙ্গে যাঁরা প্রতারণা করছে, বাংলার মানুষের সঙ্গে যারা মিথ্যাচার করছে, তাদেরকে রাজনৈতিকভাবেই জবাব দিতে হবে। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। এটা সেমি ফাইনাল। ফাইনাল হবে ২০২৪ সালে, লোকসভা নির্বাচনে। বিজেপিকে দেশছাড়া করতে হবে।
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সমাবেশ থেকে এদিন দশ হাজার মানুষের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। সংগঠনের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি নারায়ণ ঘোষের সভাপতিত্বে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় এদিন। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস, বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রধান গোপাল শেঠ, আইএনটিটিইউসির নদীয়া দক্ষিণ জেলার সাংগঠনিক সভাপতি সনৎ চক্রবর্তী, বসিরহাটের সাংগঠনিক সভাপতি কৌশিক দত্ত, তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান শ্যামল রায় প্রমুখ।
আইএনটিটিইউসির বনগাঁ টাউনের সাধারণ সম্পাদক নিত্যগোপাল দাস বলেন, প্রচণ্ড শীতে অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা গরম পোশাকের অভাবে কষ্ট পান। অনেকের আবার মাথার উপর আশ্রয় নেই। রেল স্টেশন কিংবা রাস্তার ধারে রাত কাটাতে হয়। আমরা তাঁদের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দিয়েছি। কেউ পেয়েছেন কম্বল। কেউ পেয়েছেন সোয়েটার। স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা ভীষণ খুশি। এমন কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে আমরাও আনন্দিত। এই শীতে কেউ যেন গরম পোশাকের অভাবে কষ্ট না পান, এটাই আমাদের লক্ষ্য। প্রয়োজনে আবারও এ ধরনের কর্মসূচি নেওয়া হবে। এদিন আট হাজার কম্বল ও দু’হাজার সোয়েটার বিতরণ করা হয়েছে।