প্রতিবছর প্রতিমাসে নির্দিষ্ট কিছু দিনে বিভিন্ন দেশেই কিছু দিবস পালিত হয়। নির্দিষ্ট দিনে অতীতের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা স্মরণ করা বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরী করতেই এই সমস্ত দিবস পালিত হয়। বিশ্বের পালনীয় সেই সমস্ত দিবসগুলোর মধ্যে একটি হল আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস।
বনগাঁর “মৃদঙ্গম নৃত্যকলা”–র আয়োজনে সোমবার ২৯ শে এপ্রিল “বিশ্ব নৃত্য দিবস’ পালিত হয় একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে। সোমবার সন্ধ্যায় বনগাঁর পাইপরোডে একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বিশ্ব নৃত্য দিবস উপলক্ষে।
“মৃদঙ্গম নৃত্যকলা”–র শিক্ষক দীপজ্যোতি ভট্টাচার্য অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রবাদ প্রতীম নৃত্য শিল্পী বিরজু মহারাজের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য জ্ঞাপন করেন।
এরপর আধুনিক ব্যালে-এর জনক জাঁ-জর্জেস নভেরের জন্মদিন স্মরণে “মৃদঙ্গম নৃত্যকলা”–র ছাত্রীরা একটি বিশেষ নৃত্য পরিবেশন করেন । দেখুন ভিডিও
উল্লেখ্য , জানা যায় এইদিনটি পালনকরা হয়, প্রথম 1982 সালে ইউনেস্কোর পারফর্মিং আর্টস এর সহযোগিতায় ।
দীপজ্যোতি ভট্টাচার্য বলেন, নৃত্য হলো মানুষের কলা সংস্কৃতির অন্যতম অঙ্গ। নৃত্য মানুষের সম্মিলন ঘটায় তার পরিচিত ভাষা দিয়ে। নৃত্যের আনন্দ বিনিময় ঘটে দর্শকের মধ্যে, তার বোধ-উপলব্ধিকে সচেতন করার জন্য। প্রকৃতি ও জীবনের সঙ্গে নৃত্যের রয়েছে এক নিবিড় সম্বন্ধ।
১৯৮২ সালে আন্তর্জাতিক নৃত্য পরিষদ প্রথম আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস পালন করে। তারপর থেকে প্রতিবছর ২৯ এপ্রিল, আধুনিক ব্যালে স্রষ্টা জিন-জর্জেস নভেরের জন্মদিনকে স্মরণ করে পালন করা হয়। শুধু ব্যালে নয়, ট্যাপ ডান্স, বেলি ডান্স, ব্যালে ও জনপ্রিয় ভারতীয় ঘরানা যেমন কত্থক, ভরতনাট্যম ও কথাকলি নাচের মাধ্যমে নৃত্যগুরু ও দেশের সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। ১৯৮২ সালে দিবসটি ইউনেস্কোর স্বীকৃতি লাভ করে। সারা বিশ্বে প্রতি বছরের ২৯ এপ্রিল নানা উৎসব–আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হয়। তবে এই দিনটির গুরুত্ব কোনও অংশে কম নয়।
নৃত্য মানে বিভিন্ন মানুষের কাছে ভিন্ন প্রকৃতির শিল্প। অনেকে মনে করেন এটি মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য মোক্ষম থেরাপি বা ব্যায়াম। আবার অনেকে এই উপায়কেই পেশা ও নেশা হিসেবে গ্রহণ করেন মনের আনন্দে। বিশ্বের সব নৃত্যশিল্পী নাচের মাধ্যমে নিজেকে উপভোগ করার রসদ খোঁজেন। নিজেকে খুঁজে পেতে নাচের মত শৈল্পিক দিকগুলিকে আঁকড়ে ধরে থাকতে ভালবাসেন। তবে, নাচ হল মানুষের মনোজাগতিক প্রকাশভঙ্গি। নৃত্য ও ভাষা একসূত্রে বাধা।
নাচ হল কাজ করার একটি চমৎকার উপায়। নিয়মিত নাচ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে ও জ্ঞানের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে। ট্রেডমিলে দৌড়ানো, হাঁটা এবং বাইক চালানো-সহ অন্যান্য ধরণের ওয়ার্কআউটের তুলনায় নাচ হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভাল ভূমিকা পালন করে। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের মতো অসুখও দূরে থাকে। ঠিন পরিস্থিতিতে, সঙ্গীত শুনলে মানসিক চাপ কমে। ঠিক তেমনিভাবেই মানসিক চাপ থেকে নিজেদের মুক্ত করতে নাচ করতে পারেন। অবসাদকে দূরে সরিয়ে রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ১ ঘণ্টা করে নাচ করলে শরীর থাকে ফিট ও সুস্থ। শরীরের নমনীয় দিকগুলিকে উন্নত করতে সাহায্য করে বেশি। ওজন নিয়ন্ত্রণ করার সবচেয়ে সহজ উপায়গুলির মধ্যে অন্যতম।