
নৃত্য হল মানুষের মনোজাগতিক প্রকাশ ভঙ্গি। কেননা নৃত্য ও এর ভাষা কাজ করে একসূত্রে। আজ আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস। সারা বিশ্বে প্রতি বছরের ২৯ এপ্রিল নানা উৎসব–আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হয়।

নৃত্য হলো মানুষের কলা সংস্কৃতির অন্যতম অঙ্গ। নৃত্য মানুষের সম্মিলন ঘটায় তার পরিচিত ভাষা দিয়ে। নৃত্যের আনন্দ বিনিময় ঘটে দর্শকের মধ্যে, তার বোধ-উপলব্ধিকে সচেতন করার জন্য। প্রকৃতি ও জীবনের সঙ্গে নৃত্যের রয়েছে এক নিবিড় সম্বন্ধ।

বিশ্ব নৃত্য দিবস : ইতিহাস ও তাৎপর্য
নৃত্য হল, মানব সভ্যতার আদিমতম শিল্প রূপগুলোর একটি। নৃত্যের মাধ্যমে মানুষ আবেগ প্রকাশ করে, ঐক্য অনুভব করে এবং সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার সংরক্ষণ করে। এই শিল্পমাধ্যমের প্রতি সম্মান জানাতে এবং বিশ্বব্যাপী নৃত্যশিল্পের গুরুত্ব ছড়িয়ে দিতে প্রতিবছর ২৯শে এপ্রিল পালিত হয় বিশ্ব নৃত্য দিবস।

বিশ্ব নৃত্য দিবসের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, ১৯৮২ সালে আন্তর্জাতিক থিয়েটার ইনস্টিটিউট (ITI) এই দিবসটি প্রতিষ্ঠা করে। এই সংস্থাটি ইউনেস্কোর সহায়তায় বিশ্বজুড়ে থিয়েটার ও পারফরমিং আর্টসের প্রসারে কাজ করে। দিবসটি উদযাপনের জন্য ২৯শে এপ্রিল তারিখটি নির্ধারণ করা হয়েছে, কারণ এটি বিখ্যাত ফরাসি ব্যালে শিল্পী জঁ জর্জ নোভের (Jean-Georges Noverre)-এর জন্মদিন। নোভেরকে আধুনিক ব্যালে নৃত্যের জনক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বিশ্ব নৃত্য দিবসে প্রতিবছর একজন স্বনামধন্য নৃত্যশিল্পী বা চিন্তাবিদ একটি বিশেষ বার্তা দেন, যা বিশ্বের নৃত্যপ্রেমীদের উদ্দেশে পাঠানো হয়। এই বার্তার মাধ্যমে নৃত্যের সৌন্দর্য, মানবিক মূল্য এবং সমাজে তার প্রভাব সম্পর্কে চিন্তাভাবনা ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
বিশ্বের নানা প্রান্তে এই দিনটি উপলক্ষে নানান ধরণের অনুষ্ঠান, কর্মশালা, প্রদর্শনী, এবং নৃত্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এতে পেশাদার শিল্পী থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী, সমস্ত স্তরের মানুষই অংশ নেয়। মূল লক্ষ্য হলো নৃত্যকে শুধুমাত্র বিনোদন নয়, বরং শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক সম্প্রীতির একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।
আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বিশ্ব নৃত্য দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, নৃত্য – ভাষার সীমা ছাড়িয়ে মানুষের আবেগ, ভাবনা ও ইতিহাস বহন করে। নৃত্য একদিকে যেমন ব্যক্তিগত মুক্তির মাধ্যম, অন্যদিকে সমাজের সেতুবন্ধনও।
ভারতবর্ষে নৃত্যের স্থান ও বিকাশের ইতিহাস
নৃত্য ভারতবর্ষের আদি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এখানে নৃত্য কেবলমাত্র বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, আধ্যাত্মিক সাধনা এবং সামাজিক সংহতির একটি গুরুত্বপূর্ণ রূপও। হাজার হাজার বছরের ইতিহাস জুড়ে ভারতীয় নৃত্য তার রূপ ও গৌরব ধরে রেখেছে, এবং সময়ের প্রবাহে তা বিবর্তিত হয়ে আজও সমানভাবে জীবন্ত।

ভারতে নৃত্যের সূচনা বহু প্রাচীন। ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ ও অন্যান্য প্রাচীন গ্রন্থেও নৃত্য ও সংগীতের উল্লেখ পাওয়া যায়। বিশেষত, নাট্যশাস্ত্র — মহর্ষি ভারত মুনি রচিত এই বিশাল গ্রন্থটিকে ভারতীয় নাট্যকলা ও নৃত্যকলার মূল ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়। নাট্যশাস্ত্রে নৃত্যকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে — নৃত্ত (শুদ্ধ নৃত্য), নৃত্য (ভঙ্গিমার মাধ্যমে ভাব প্রকাশ) ও নাট্য (আবৃত্তি, অভিনয় ও গদ্যের মিশ্রণ)।

ভারতীয় নৃত্যের বিকাশের ধারা:
১. ধর্মীয় ও মন্দিরভিত্তিক নৃত্য:
প্রাচীন ভারতীয় মন্দিরগুলিতে দেব-দেবীর সেবা ও আরাধনার জন্য নৃত্য পরিবেশিত হত। দেবদাসী প্রথার মাধ্যমে নর্তকীরা মন্দিরে নিয়মিত নৃত্য পরিবেশন করতেন। এটি একধরনের সাধনার অংশ ছিল। দক্ষিণ ভারতে ভরত নাট্যম, পূর্ব ভারতে মণিপুরী, ওড়িশায় ওডিশি এবং অন্যান্য অঞ্চলে নানা রূপে এই ধারা বিকশিত হয়।
২. আঞ্চলিক ও লোকনৃত্যের বিকাশ:
ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে ভিন্ন ভিন্ন লোকসংস্কৃতি অনুযায়ী বিশেষ লোকনৃত্য গড়ে ওঠে। যেমন — পাঞ্জাবের ভাংরা, মহারাষ্ট্রের লাভনী, গুজরাটের গরবা, পশ্চিমবঙ্গের ছৌ নৃত্য ইত্যাদি। এই নৃত্যগুলি সাধারণত উৎসব, ফসলের মৌসুম বা সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হত।
৩. ক্লাসিক্যাল বা শাস্ত্রীয় নৃত্যশৈলী:
ভারতবর্ষে মোট ৮টি প্রধান শাস্ত্রীয় নৃত্যরূপ সরকারিভাবে স্বীকৃত হয়েছে: ভরত নাট্যম (তামিলনাড়ু),কথক (উত্তর ভারত),কুচিপুড়ি (অন্ধ্রপ্রদেশ),ওডিশি (ওড়িশা)কথকলি (কেরালা), মোহিনীআট্টম (কেরালা), মণিপুরী (মণিপুর), সত্রিয়া (অসম) প্রতিটি শাস্ত্রীয় নৃত্যরূপের নিজস্ব ভাষা, মুদ্রা, আবৃত্তি, রাগ-রাগিনী ও নাট্যরীতি রয়েছে। এগুলি মূলত দেবতাদের গৌরব বর্ণনা বা ধর্মীয় কাহিনী পরিবেশনের মাধ্যম হিসেবে বিকশিত হয়েছে।

৪. মধ্যযুগ ও মুঘল আমলে নৃত্যের পরিবর্তন:
মুঘল শাসনামলে নৃত্য রাজদরবারের একটি বিশেষ অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে। বিশেষত, কথক নৃত্য মুঘল দরবারে প্রসার লাভ করে এবং কাব্যিক ও সুরেলা আবহ পায়। এই সময়ে নৃত্য আরও অনেকটাই পার্থিব রূপ পায় এবং কাব্যনাট্যরূপে বিকশিত হয়।
৫. আধুনিক যুগে পুনরুজ্জীবন ও বিশ্বমঞ্চে প্রসার:
ঔপনিবেশিক শাসনের সময় নৃত্যের গুরুত্ব কিছুটা কমে এলেও, ২০শ শতকের শুরুতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, উদয় শঙ্কর, রুক্মিণী দেবী অরুণ্ডেল, বিজয়িনী দেবী প্রমুখ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা ভারতীয় নৃত্যকলার নবজাগরণ ঘটান। এরপর ভারতীয় নৃত্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করে।
আজও ভারতবর্ষে নৃত্য জীবনের অন্তর্গত এক অপরিহার্য অংশ — তা উৎসব-অনুষ্ঠানে হোক বা আত্মিক সাধনায়, সামাজিক আন্দোলনে হোক বা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়। নৃত্যের মাধ্যমে ভারত তার গভীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ ইতিহাস বহন করে চলেছে।
ভারতবর্ষের নৃত্যশিল্পীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান

ভারতবর্ষের নৃত্যশিল্পীরা জাতির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষাকারী। তারা নৃত্যকলার মাধ্যমে দেশের ইতিহাস, ধর্ম, আধ্যাত্মিকতা এবং জীবনদর্শনকে বয়ে নিয়ে চলেছেন। তবে বাস্তব চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, নৃত্যশিল্পীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান খুব সহজ বা সমৃদ্ধ নয়; বরং এটি চ্যালেঞ্জ, সংগ্রাম ও পরিবর্তনের এক দীর্ঘ যাত্রা।
১. অর্থনৈতিক অবস্থান:
অসামঞ্জস্যপূর্ণ আয়:
অধিকাংশ নৃত্যশিল্পী নিয়মিত আয়ের নিশ্চয়তা পান না। বিশেষ করে শাস্ত্রীয় নৃত্যের শিল্পীরা পারফরম্যান্স, ওয়ার্কশপ, শিক্ষাদান বা সরকারি অনুদানের ওপর নির্ভরশীল। উৎসব বা সরকারি মঞ্চে পারফর্ম করার সুযোগ পাওয়া বড় সম্মান হলেও, পারিশ্রমিক অনেক সময় অপ্রতুল থাকে।
স্বনির্ভরতার চেষ্টা:
অনেক নৃত্যশিল্পী নিজস্ব নৃত্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন অথবা অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষাদান করেন। এভাবে তারা নিজেদের আয় বাড়ানোর চেষ্টা করেন। তবে তাতেও আর্থিক নিরাপত্তা আসে না, বিশেষত যারা মফস্বল বা শহরতলি অঞ্চলে কাজ করেন।
সরকারি সহায়তার সীমাবদ্ধতা:
সরকারি অনুদান বা ফেলোশিপ যেমন “সিসিআরটি স্কলারশিপ”, ” ফেলোশিপ”,-“সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প” ইত্যাদি থাকলেও তা সীমিত সংখ্যক শিল্পীর কাছে পৌঁছায়। অধিকাংশ শিল্পী এই সুবিধা পান না অথবা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়েন।
পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে অবশ্যই উল্লেখ করা দরকার প্রান্তিক শিল্পীদের ভাতা , বাদ্যযন্ত্র সহ নানা মানবিক প্রকল্পের আয়তায় তাদের নিয়ে আসা হচ্ছে তবে আত্ব সন্তুষ্টির জায়গা নেই আরাও বেশি করে শিল্পী ও তার শিল্পকে বাঁচানো প্রয়োজন ।
করোনা মহামারির ধাক্কা:
সাম্প্রতিক অতীতে মহামারিকালীন সময়ে নৃত্যশিল্পীরা সবচেয়ে বেশি আর্থিক সংকটে পড়েছিলেন। মঞ্চ পরিবেশনা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বহু শিল্পী জীবিকা নির্বাহের জন্য বিকল্প পথ খুঁজতে বাধ্য হন।
২. সামাজিক অবস্থান:
সম্মান ও গৌরব:
সমাজে নৃত্যশিল্পীদের প্রতি এক ধরনের সম্মান রয়েছে, বিশেষ করে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে শাস্ত্রীয় নৃত্যের অনুশীলন করছেন বা আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছেন। এক্ষেত্রে নৃত্যশিল্পীদেরকে সংস্কৃতির বাহক হিসেবে দেখা হয়।
মৌলিক চ্যালেঞ্জ:
বিশেষ করে গ্রাম ও মফস্বলের সমাজে নৃত্যকে পেশা হিসেবে নেওয়া এখনো অনেকে ইতিবাচকভাবে দেখে না। অনেক পরিবার মনে করে নৃত্য ‘ক্যারিয়ার’ নয়, শখমাত্র। ফলে বহু প্রতিভাবান শিল্পী সামাজিক চাপের কারণে অন্য পেশায় চলে যান।
নারী ও পুরুষ নৃত্যশিল্পীদের জন্য বিশেষ পরিস্থিতি:
নারী শিল্পীদের সামাজিকভাবে আরও কিছু বাড়তি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয় — নিরাপত্তা, সম্মান বজায় রাখা, অনুষ্ঠানে যাওয়া আসার নানা অসুবিধা ইত্যাদি। যদিও আজকের …দিনে শহরাঞ্চলে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে, তবে গ্রামীণ এলাকায় এখনো সচেতনতার প্রয়োজন।

অন্যদিকে নৃত্য মূলত নারীদের সংখ্যা বেশি থাকায় এটির ক্ষেত্রে পুরুষ নৃত্যশিল্পীদের নানান সামাজিক সমস্যার মুখে পরতেই হয় ।
আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যমে সুযোগ ও সমস্যা:
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম যেমন ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি কিছু শিল্পীর জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে — বিশ্বদর্শকের কাছে পৌঁছানো সহজ হয়েছে। তবে এর জন্যও বিপুল পরিশ্রম, কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট ও প্রচারের দক্ষতা প্রয়োজন, যা প্রত্যেকের পক্ষে সম্ভব নয়।
ভারতবর্ষের নৃত্যশিল্পীরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক হলেও, অর্থনৈতিক সুরক্ষা ও সামাজিক স্থিতি নিশ্চিত করতে এখনো অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে। নৃত্যশিল্পীদের জন্য সংগঠিত সহযোগিতা, পর্যাপ্ত সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা, এবং সামাজিক মানসিকতার পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি, যাতে তারা নিজেদের সাধনা ও শিল্পচর্চা অব্যাহত রাখতে পারেন সম্মানের সঙ্গে।
বিশ্ব নৃত্য দিবসের প্রেক্ষাপটে নৃত্যশিল্পীদের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষার দাবি
বিশ্ব নৃত্য দিবস প্রতিটি নৃত্যশিল্পীর জন্য এক গর্বের দিন — যে দিন বিশ্ব জুড়ে নৃত্যকলার সৌন্দর্য ও শক্তিকে উদযাপন করা হয়। এই দিনে আমরা গর্বের সাথে আমাদের সমৃদ্ধ নৃত্য ঐতিহ্যের স্মরণ করি, আবার একইসাথে, আমরা আমাদের সমাজ ও সরকারের কাছে কিছু মৌলিক দাবি জানাই — শিল্পের ধারক-বাহক এই নৃত্যশিল্পীদের সম্মানজনক জীবনযাত্রার জন্য।

আজকের বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে, অনেক নৃত্যশিল্পী নিরলস সাধনা সত্ত্বেও আর্থিক নিরাপত্তাহীনতা এবং সামাজিক অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছেন। অথচ, এঁরাই ভারতের সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং আত্মার জাগতিক রূপ। তাই বিশ্ব নৃত্য দিবসের এই বিশেষ দিনে আমরা সরকারের কাছে নিচের বিষয়গুলির দাবী রাখছি:
১. নৃত্যশিল্পীদের জন্য নির্দিষ্ট আর্থিক অনুদান ও পেনশন ব্যবস্থা চালু করা:
স্বীকৃত এবং নিরীক্ষিত নৃত্যশিল্পীদের জন্য মাসিক ভাতা বা পেনশন স্কিম প্রণয়ন করা হোক, যাতে তারা জীবনের শেষ প্রান্তেও সম্মানের সাথে জীবনযাপন করতে পারেন।
২. নিয়মিত গ্র্যান্ট ও ফেলোশিপের সংখ্যা বাড়ানো ও সহজলভ্য করা:
কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার পর্যায়ে নৃত্যশিল্পীদের জন্য আরও বেশি সংখ্যক ফেলোশিপ, অনুদান, কর্মশালা সহায়তা এবং গবেষণা প্রকল্পের ব্যবস্থা করা হোক। আবেদন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও সহজ করতে হবে।
৩. স্বাস্থ্য ও বিমা সুরক্ষা পরিকল্পনা:
নৃত্যশিল্পীদের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্য বিমা, চিকিৎসা সহায়তা এবং দুর্ঘটনা বিমার ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি।
সামাজিক মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ:
সমাজে নৃত্যকে শুধুমাত্র বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে না দেখে একটি গৌরবময় পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত নৃত্যশিল্পীদের সম্মানের সাথে গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালু করা উচিত।
৫. স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরো সুযোগ প্রদান:
নতুন এবং অভিজ্ঞ উভয় শিল্পীদের জন্য নিয়মিত পারফরম্যান্স মঞ্চ তৈরি করতে হবে — সরকারি উৎসব, আন্তর্জাতিক উৎসব, এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম ইত্যাদির মাধ্যমে।

৬. নৃত্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গবেষণার প্রসার:
সরকারি সহায়তায় নৃত্য বিদ্যালয়, গবেষণা কেন্দ্র এবং আর্কাইভ নির্মাণ ও পরিচালনা করা হোক, যাতে পরবর্তী প্রজন্ম নৃত্যশিল্পের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারে।
বিশ্ব নৃত্য দিবসের এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমাদের আকাঙ্ক্ষা, নৃত্যশিল্পীরা যেন কেবল মঞ্চে নয়, জীবন সংগ্রামেও জয়ী হন। তাদের অবদান যেন যথোচিত মূল্যায়ন পায়। নৃত্যশিল্পীদের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা প্রদান করে সরকার জাতির সাংস্কৃতিক ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করার পথে আরও এক দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে — এই আমার তথা আমাদের প্রত্যাশা।
