দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গত কয়েক দিন ধরে নয়াদিল্লির কূটনৈতিক করিডরে কানাঘুঁসো ছিল যে চিনা বিদেশ মন্ত্রী ওয়াং ই ভারত সফরে আসছেন। সাধারণত এ ধরনের দ্বিপাক্ষিক সফরের ক্ষেত্রে সাউথ ব্লকের তরফে আগাম সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় কোন বিষয়গুলি গুরুত্ব পাবে তারও একটা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কিন্তু এ বার এই প্রথম কোনও সরকারি ঘোষণা ছিল না। এমনকি ওয়াং ই-র বিমান নয়াদিল্লির মাটি ছোঁয়ার পরেও বিদেশ মন্ত্রক সরকারি ভাবে তা জানাতে সময় নিয়েছে।
চিনা বিদেশ মন্ত্রী ছিলেন আফগানিস্তানে। তিনি যে ভারতের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে তা কেবল তাঁর বিমানের রুট ট্র্যাক করে অনেকে তখন জানতে পারেন।
বস্তুত প্রায় ২ বছর পর ভারত-চিন কূটনৈতিক স্তরে এত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হতে চলেছে।
ভারত সফরে থাকাকালীন বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে ওয়াং ই-র বৈঠক হওয়ার কথা। তা ছাড়া এ বছরের শেষ দিকে বেজিংয়ে ব্রিক সামিট হবে। ওই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উপস্থিত থাকার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানাবেন চিনা বিদেশ মন্ত্রী।
দু’বছর আগে লাদাখের কাছে গালওয়ানে ভারত ও চিন সেনার মধ্যে প্রবল হাতাহাতি হয়। তাতে ভারতীয় সেনা পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। বেজিং সরকারিভাবে মৃত্যুর সংখ্যা না জানালেও চিনা সেনার বহু জওয়ানের মৃত্যু হয় সেই সংঘাতে। তার পর থেকে ধারাবাহিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে রফাসূত্র বেরোতে বেশ সময় লাগে।
শুধু তা নয়, সম্প্রতি পাক সফরে গিয়ে চিনা বিদেশ মন্ত্রী কাশ্মীর নিয়ে মন্তব্য করেছেন, তাও বিতর্কে ইন্ধন দিয়েছে। ভারত তা খণ্ডন করে জানিয়েছে, এ ধরনের মন্তব্য অভিপ্রেত নয়। জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এ ব্যাপারে সংশয়ের কোনও অবকাশ নেই।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, ওয়াং ই-য়ের চলতি সফরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির লক্ষ্যে আলোচনা হবে। সীমান্তে সংঘাত যাই থাক, তার সমান্তরালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সম্প্রসার আলোচনায় গুরুত্ব পাবে। নয়াদিল্লির এক কূটনীতিকের কথায়, ভুলে গেলে চলবে না ভারত চিনের জন্য একটা বড় বাজার। ভারতে চিনা পণ্যের বিক্রিতে ভাঁটা পড়লে তার জোরালো প্রভাব পড়তে পারে বেজিংয়ের অর্থনীতিতে। সুতরাং দুই দেশের মানুষের স্বার্থেই বরফ গলা জরুরি।