দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পুজোর আর এক মাসও বাকি নেই। আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, কাশের বনে দোলা, শরতের সেই পরিচিত ছবি উধাও বহু বছর ধরেই। এবার করোনা কালে নমোঃ নমোঃ করে যাও বা পুজো হওয়ার কথা, তাও কি ভেস্তে দেবে বৃষ্টি? ঘরে টিভির পর্দায় মা-কে দর্শন করেই বঙ্গজীবনের তিন-চারটে সেরা আনন্দের দিন কাটাবে বাঙালি?
বৃষ্টি থামার যেন কোনও লক্ষণ নেই ৷ বজ্র-বিদ্যুৎ-সহ রাতভর তুমুল বৃষ্টি কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলায়৷ সারারাত, বিশেষ করে ভোরের দিকে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তাতে আবার শহরের বেশ কিছু অংশে জল জমে গিয়েছে৷ কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাগুলিতে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ৷ এই বৃষ্টি আজ, সোমবার অনেকটা সময় জুড়েই চলবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর ৷
বৃষ্টির ফলে জলমগ্ন শহরের নানা প্রান্ত। উত্তর২৪পরগনার বনগাঁ শহরে পুরসভার ২০নম্বর ওয়ার্ডের রাস্তা জলমগ্ন ৷ তারই মধ্যে যাতায়াত করছেন এলাকার মানুষ ৷ স্থানীয় মানুষের বক্তব্য এমন ,নিকাশিনালা সঠিকভাবে তৈরী করা হয়নি পুরসভার পক্ষ থেকে তার জন্যই এই চরম ভোগান্তি রামনগর রোড এলাকার বাসিন্দাদের৷
★ রবিবার রাত ১১টা থেকে রাত ৩টে পর্যন্ত লকগেট বন্ধ ছিল। আজ, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা তিনটে পর্যন্ত ফের লকগেট বন্ধ রাখা হবে। এর ফলে শহরে জল জমার আশঙ্কা রয়েছে।
★কলকাতা শহরে ধাপা, তপসিয়া, উল্টোডাঙ্গা, শিয়ালদহ, বালিগঞ্জ, মোমিনপুর এবং কালীঘাটে রাত ১টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত পাঁচ ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘর্ণাবর্তের জন্য এই বৃষ্টি বলে জানাচ্ছে হাওয়া অফিস। তবে এই ঘূর্ণাবর্ত খালি বাংলাতেই প্রবাব ফেলছে এমন নয়।
এদিকে ভারতের মৌসম ভবন বলছে পূর্ব, মধ্য ও উত্তর পশ্চিম ভারতে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এর জন্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া জোড়া ঘূর্ণাবর্তকেই মূখ্য কারণ বলছে হাওয়া অফিস।
আগামী ২৪ ঘণ্টা মেঘলা আকাশ। বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দক্ষিণবঙ্গে। জোড়া ঘূর্ণাবর্ত এবং সক্রিয় মৌসুমী অক্ষরেখা। আগামিকাল, মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হতে পারে। পরের সপ্তাহে রবিবার ও মঙ্গলবার দুটি সিস্টেম তৈরির সম্ভাবনা বঙ্গোপসাগরে। এর কতটা প্রভাব পড়ে দক্ষিণবঙ্গে তার উপর নজর রাখছেন আবহাওয়াবিদরা।
বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে দেশের নানা প্রান্তে প্রবল বজ্রপাতের সতর্কতাও দিয়ে রেখেছে ভারতীয় আবহাওয়া দফতর।
পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের পশ্চিম প্রান্তের পূর্ব রাজস্থান এবং গুজরাতে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। পশ্চিম রাজস্থানেও হালকা বৃষ্টি হতে পারে। তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরিতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
দেশের অধিকাংশ অংশেই চলবে বৃষ্টি। হিমাচল প্রদেশ, উত্তর প্রদেশের পূর্বাঞ্চল, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ছত্তিশগড়, উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
দেশের রাজধানী দিল্লিতে ফের সক্রিয় হচ্ছে বর্ষা। ২১ ও ২২ সেপ্টেম্বর দিল্লি এবং তার আশেপাশের এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী পাঁচ দিন দেশের অনেক রাজ্যে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে আইএমডি
বলেছে যে ১৯ থেকে ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গুজরাত, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশে বিভিন্ন জায়গায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। উত্তর -পশ্চিম ভারতের বাকি অংশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দেশের পূর্বাঞ্চল-সহ উত্তর প্রদেশের কিছু কিছু জায়গায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া দফতর ২১ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হলুদ সতর্কতা জারি করেছে। আই এমডি অনুসারে, ২০ সেপ্টেম্বর থেকে মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর মহারাষ্ট্রের পর উপকূলীয় জেলা পালঘর, থানে এবং মুম্বাইয়ে বৃষ্টি হবে।
সেপ্টেম্বরে উত্তরপ্রদেশে রেকর্ড বৃষ্টি
চলতি সেপ্টেম্বর মাসে, উত্তরপ্রদেশে ইতিমধ্যে প্রত্যাশার চেয়ে প্রায় 8 গুণ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। সেপ্টেম্বরে, উত্তর প্রদেশে ৫.৫ মিমি বৃষ্টিপাতের অনুমান করা হয়েছিল, সেখানে এখনও পর্যন্ত ৪০.৩ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যের নদ -নদীগুলিতে জলোচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। অতীতে ২৪ ঘন্টা ধরে একটানা বৃষ্টি হয়েছিল, যার কারণে রাজধানী লখনউয়ের বেশিরভাগ এলাকা জলমগ্ন হয়। যোগী সরকারকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হয়েছিল। ভারতীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর প্রদেশে আরও ১০ দিন মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকবে।
বৃষ্টির জেরে ইছামতি সহ বিভিন্ন নদীর জল বাড়তে শুরু করেছে ৷ পুজোর আগে কী বন্যা? সেই প্রশ্নই এখন সকলের মুখে৷