দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ৬৮টি আসনের জন্য আজ সকাল থেকে চলছে হিমাচল প্রদেশের ভোটগ্রহণ৷
ভোট দেওয়ারআর্জি জানালেন প্রধানমন্ত্রী ৷
এদিন সকালেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে হিমাচল প্রদেশের সকল ভোটারকে ভোটদানের আর্জি জানান।
Prime Minister Narendra Modi requests voters across the state of Himachal Pradesh to participate in the Assembly polls today.#HimachalPradeshElection pic.twitter.com/zOFkodFZAo
— ANI (@ANI) November 12, 2022
বিজেপি, কংগ্রেস ছাড়াও এবার হিমাচলে ভোটের ময়দানে রয়েছে আম আদমি পার্টি৷ প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদলে যাওয়াটাই হিমাচলের দস্তুর৷ দীর্ঘ চার দশক পর সেই পাহাড়ি রাজ্যের এই রাজনৈতিক ধারায় কোনও বদল আসে কি না, তা জানতে অবশ্য আগামী ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে৷ ক্ষমতাসীন বিজেপি-র কাছে কাজটা তাই যথেষ্টই কঠিন৷
সবমিলিয়ে হিমাচলে ভোটার সংখ্যা ৫৫ লক্ষ৷ পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদলের রেওয়াজ রুখতে বিজেপি প্রচারে ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকারের উন্নয়নের তত্ত্বকেই হাতিয়ার করেছিল৷ প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুরের পাশাপাশি তুলে ধরা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখকেও৷ বিজেপি মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে, উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে সরকারে তাদের টিকিয়ে রাখা জরুরি৷ সরকার বদলে গেলে যা সম্ভব হবে না৷
Himachal Pradesh | People cast their votes in Shimla for the #AssemblyElections2022
— ANI (@ANI) November 12, 2022
Voting should be taken more as a responsibility; today's generation takes it very lightly. There should be more progress & more facilities should be given in rural areas, said a voter pic.twitter.com/tLhkzQY4mW
অন্যদিকে হিমাচল প্রদেশের মানুষের এই প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাই কংগ্রেসের সবথেকে বড় ভরসা৷ এই ধারা বজায় রাখার জন্যই প্রচারে জোর দিয়েছেন দলের নেতারা৷ হিমাচলে দলের প্রবীন নেতা বীরভদ্র সিং-এর মৃত্যুর পর থেকেই নেতৃত্বের সঙ্কটে ভুগছিল কংগ্রেস৷ যদিও এবার দলের টিকিট বণ্টন অতীতের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকরী হয়েছে বলে দাবি কংগ্রেস নেতাদের৷ এই মুহূর্তে বীরভদ্র সিং-এর স্ত্রী প্রতিভা সিং রাজ্যে কংগ্রেসের প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন৷ অন্যদিকে বীরভদ্রের ছেলে বিক্রমাদিত্যকেও প্রার্থী করেছে দল৷
তবে হিমাচলে বিজেপি-র আরও একটা মাথাব্যথার কারণ দলের বিদ্রোহীরা৷ টিকিট না পেয়ে অন্তত ২১টি আসনে টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসেবে লড়ছেন বিজেপি-র বিক্ষুব্ধ নেতারা৷ ৬৮ আসনের বিধানসভায় এই নির্দলরাই শেষ পর্যন্ত বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারেন, এমন আশঙ্কা রয়েছে বিজেপি-র অন্দরেই৷ এক বিক্ষুব্ধ প্রার্থীকে বোঝাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফোনের ভিডিও ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে৷
হিমাচল প্রদেশ বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার নিজের রাজ্য৷ এই নির্বাচন তাই বিজেপি সভাপতির কাছেও প্রেস্টিজ ফাইট৷ কারণ বিক্ষুব্ধদের অনেকেই টিকিট না পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ তুলেছেন৷ রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং ধুমালও কার্যত রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিয়ে ফেলেছেন৷ তাঁকেও এবার টিকিট দেয়নি দল৷ যদিও দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি ধুমাল৷ কিন্তু ধুমাল সহ একাধিক নেতার টিকিট না পাওয়ার বিষয়টি প্রচার পর্বে বিজেপি-র কাছে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷
হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা। একদিকে রয়েছে শাসক দল বিজেপি, আগামী পাঁচ বছরও যাতে ক্ষমতা তাদের দখলেই থাকে, তার জন্য জোরকদমে প্রচার ও একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপির অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসও পুরনো ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার জন্য একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
তবে একাধিক মুখ্যমন্ত্রীর মুখ ও দলের অন্দরেই কোন্দল নিয়ে জেরবার কংগ্রেস। হিমাচলে বিজেপির নতুন ও অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে উঠে এসেছে আম আদমি পার্টিও। দিল্লি ও পঞ্জাব দখলের পর এবার তাদের লক্ষ্য হিমাচল প্রদেশ ও গুজরাটেও বিধানসভা নির্বাচনে জয়। এবারের নির্বাচনে তারকা প্রার্থীরা হলেন মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংয়ের ছেলে বিক্রমাদিত্য সিং ও বিজেপির প্রাক্তন প্রধান সতপাল সিং সাত্তি।
শেষ দু’ বছরে একের পর এক নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রাপ্তি বলতে শুধুমাত্র হার এবং বিপর্যয়৷ গুজরাত নির্বাচন নিয়েও দলের প্রচারে সেভাবে তৎপরতা চোখে পড়ছে না৷ এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসকে চাঙ্গা করতে পারে হিমাচলের জয়৷ তার জন্য দলের নেতাদের ক্যারিশমার থেকেও হিমাচল প্রদেশের মানুষের প্রতিষ্ঠান বিরোধী মানসিকতাই বেশি ভরসা কংগ্রেস নেতাদের৷