দেশের সময় : ৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে গঙ্গাসাগর মেলা। চলবে আগামী ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। শুধু বাংলা নয় এই সময় দেশের নানা প্রান্ত থেকে পুণ্যস্নানের জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় করেন গঙ্গাসাগরে।
কথায় বলে সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগ একবার। আর কথাকে স্মরণ করেই যেন বছরের পর বছর ধরে লাখ লাখ পুণ্যার্থীদের ঢল নামে গঙ্গাসাগরে। এবার দেখা যাচ্ছে সেই চেনা ছবি।
তবে পুণ্য লাভের আশায় এসে এবারে গঙ্গাসাগরের পুণ্যার্থীরা উপরি পাওনা। আয়োজন করা হল অভিনব গঙ্গা আরতির। প্রসঙ্গত, বিগত বছরে কোভিড কাটায় বেশ কিছুটা ছেদ পড়েছিল সাগর মেলার।
তবে এবারে সাগর লাকে সাফল্যমণ্ডিত করতে শুরু থেকেই তৎপর প্রশাসন। স্নানের বাকি এখনও দুদিন তার আগেই লাখো লাখো মানুষের ঢল গঙ্গাসাগরে।
শুধু বাংলা নয় এই সময় দেশের নানা প্রান্ত থেকে পুণ্যস্নানের জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় করেন গঙ্গাসাগরে।
প্রথমবার শোভাযাত্রা সহযোগে গঙ্গা আরতি। এ বছরই প্রথমবার হরিদ্বার-বারাণসীর আদলে গঙ্গা আরতির আয়োজন করা হয়েছে গঙ্গাসাগরে। বিকাল ৫টায় কপিল মুনির মন্দির থেকে একটি শোভাযাত্রা শুরু হয়। পৌঁছায় গঙ্গাসাগরের তিন নম্বর ঘাটে।
সেখানে সন্ধ্যা ৬ থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত নাচ-গানের মাধ্যমে গঙ্গা আরতি হয়। এবারের গঙ্গা আরতির জন্য অযোধ্যা থেকে মহান্তদের নিয়ে আসা হয়। তাঁদের দেখতেও নামে মানুষের ঢল ৷
মেলায় ও পুণ্যস্নানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে মোতায়েন রয়েছে কয়েক হাজার পুলিশ। পাশাপাশি সাগরে পূণ্য স্নানে দুর্ঘটনা এড়াতে মোতায়েন এনডিআরএফ ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম।
এদিকে এবারের গঙ্গাসাগর মেলায় রেকর্ড ভিড়ের আশা আগেই করেছিল জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রায় ৩০ লাখের মতো পূণ্যার্থী এবার মেলায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ১১০০ সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা মেলা চত্বর।
সন্ধ্যারতির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত, রাজ্যসভার সাংসদ মণীশ গুপ্ত, তৃণমূল বিধায়ক লাভলি মৈত্র। এদিন গঙ্গাসাগরে সন্ধ্যা আরতিতে ছিলেন অযোধ্যা রামমন্দির ও কপিলমুণি আশ্রমের মোহন্তরা। শঙ্খধ্বনি ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে সূচনা হয় আরতির।
এদিন সাগর তীরে থিকথিকে ভিড় ছিল। শুধু বাংলার নয় দেশের নানা প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার মানুষ দু’চোখ ভরে দেখলেন সন্ধ্যারতি।এবার প্রথম সন্ধ্যারতির অনুষ্ঠান হচ্ছে তা নয়, কিন্তু এত বড় মাপের অনুষ্ঠান হয়নি। এবারে জাঁকজমক আরও বেশি। গঙ্গাসাগরে আরতির উপর বিশেষ জোর দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মেলার প্রস্তুতি বৈঠকে নবান্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়টি প্রশাসনিক কর্তাদের স্পষ্ট করে দেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বাবুঘাটে গঙ্গাসাগর মেলায় যোগ দিতে আসা পুণ্যার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, এবার থেকে গঙ্গাআরতির ব্যবস্থা করা হবে বেলুড়, দক্ষিণেশ্বরেও। এছাড়াও গঙ্গাসাগরে হেলিপ্যাড উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসেও একই প্রসঙ্গ টেনেছিলেন মমতা। বলা চলে গঙ্গাসাগরে এই সন্ধ্যারতির অনুষ্ঠান সেই পর্বের সূচনা করে দিল।