দেশের সময় ,বনগাঁ: নিজের বাড়ি বিক্রি করতে গিয়ে প্রায় তিন লক্ষ টাকা খোয়া যাওয়ার অভিযোগ করলেন বনগাঁর এক ব্যাবসায়ী। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁর বাসিন্দা ওই ব্যাবসায়ীর দাবি, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের স্থানীয় শাখা থেকে তাঁর বাতিল (ক্যানসেল) চেকের মাধ্যমে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর ওই ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন তিনি।
বাড়ি কিনতে এসে অভিনব কায়দায় ব্যবসায়ীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারকের দল। বনগাঁ শহরে এমন ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের স্থানীয় শাখার কতিপয় কর্মী জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রতারিত ব্যবসায়ী। এব্যাপারে পুলিশে অভিযোগের পাশাপাশি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বেশ কয়েক মাস আগে বনগাঁর পুরনো চাকদহ বাসস্ট্যান্ডে এলাকার বাসিন্দা (ব্যাবসায়ী) শ্যামসুন্দর কুন্ডু নিজের বাড়ি বিক্রি করার জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। সেই বিজ্ঞাপন দেখে গাইঘাটার চাঁদপাড়া এলাকার বাসিন্দা হিসেবে পরিচয় দিয়ে ক্রেতা সেজে দুই ব্যক্তি আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে শ্যামসুন্দরবাবুর সঙ্গে দেখা করেন৷ শ্যামসুন্দরের দাবি, গত অগস্ট মাসের শেষ দিকে ওই বিজ্ঞাপন দেখে দু’জন ব্যক্তি তাঁর বাড়ি কেনার জন্য তা দেখতে আসেন। প্রাথমিক কথাবার্তার পরে বাড়ি কিনতে আগ্রহী হন তাঁরা। সে জন্য অগ্রিম বাবদ শ্যামসুন্দরকে তিন লক্ষ টাকার একটি চেকও দেন। পাশিপাশি আরও টাকা দেওয়ার জন্য শ্যামসুন্দরের কাছ থেকে একটি ‘ক্যানসেল’ চেক চেয়ে নেন ওই ব্যক্তিরা। শ্যামসুন্দরের দাবি, একটি ব্ল্যাঙ্ক চেকে ওই ব্যক্তিরা ‘ক্যানসেল’ লিখেছিলেন। তবে এর দু’এক দিন পরেই ওই ‘ক্যানসেল’ চেক থেকে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার তোলার মেসেজ পান শ্যামসুন্দর। তার পরেই নড়েচড়ে বসে কুন্ডু পরিবার।
বনগাঁ ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করলে সেখানকার আধিকারিকেরা শ্যামসুন্দরের পরিবারের সঙ্গে অসহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ। এর পর বনগাঁ থানার দ্বারস্থ হন শ্যামসুন্দর। এর জবাবদিহি করার জন্য বনগাঁর ওই ব্যাঙ্ককে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন শ্যামসুন্দরের আইনজীবী দীপাঞ্জয় দত্ত।
শ্যামসুন্দরের দাবি, “এই ঘটনায় ব্যাঙ্কের গাফিলতি রয়েছে। আমার সাক্ষরে যে আমি ‘শ্রী’ লিখি, সেটা ব্যাঙ্ক জানল কী করে? এত টাকার চেক ক্যাশ কবার আগে ব্যাঙ্কের তরফে আমাদের এক বারও জানানো হয়নি। আমার পুরো টাকা যাতে ফেরত পাই, সে ব্যবস্থা করুক পুলিশ।”
দীপাঞ্জয় বলেন, “রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার নিয়মানুযায়ী, বড় অঙ্কের টাকার চেক ক্যাশ হওয়ার আগে গ্রাহককে জানানোটা বাধ্যতামূলক। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের তরফ থেকে তা করা হয়নি। আগামী সাত দিনের মধ্যে এই ঘটনার কারণ জানতে চেয়ে আমার গ্রাহকের হয়ে আইনি নোটিস পাঠিয়েছি। সঠিক সময়ের মধ্যে যথাযথ উত্তর না পেলে ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।” যদিও এই বিষয়ে বনগাঁর ওই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা কোনও রকম মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এই পরিস্থিতিতে শ্যামসুন্দরবাবুর সন্দেহ, এই প্রতারণা চক্রে ব্যাঙ্কের এক বা একাধিক কর্মী জড়িত থাকতে পারে। ঘটনার পর থেকে প্রতারকদের মোবাইলের সুইচ অফ।