দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পুরনো স্মৃতি নতুন করে ফিরিয়ে আনতে কে না চায়! প্রাক্তন প্রেমিকা আবদার করেছিল ঘুরতে যাওয়ার। আর সেই ডাকে সাড়াও দিয়েছিল কলেজ পাশ করা তরুণ । তবে ঘুরতে বেরিয়ে যে এমন ফাঁদে পড়বেন, তা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি তিনি। পুরানো প্রেমের ফাঁদেই পা দিয়ে ফেঁসেছিলেন ওই তরুণ। বৃষ্টিভেজা কলকাতার রাস্তায় একসঙ্গে অনেকক্ষণ ঘোরার পরেও বুঝতে পারেননি কী হতে চলেছে তাঁর সঙ্গে! যখন বুঝলেন, তখন সমস্তটাই হাতের বাইরে।
বর্তমান প্রেমিক ও তার বন্ধুদের সাহায্যে ওই তরুণ অর্থাৎ প্রাক্তন প্রেমিককে অপহরণ করে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করল তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকা ওই কলেজ ছাত্রী। যদিও সেই তরুণের বাড়ির লোকের অভিযোগ পেয়ে তাঁকে গিয়ে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপরই গ্রেফতার করা হয় ঘটনার মাস্টারমাইন্ড কলেজ পড়ুয়া ওই তরুণী ও তার বর্তমান প্রেমিক-সহ মোট ৫ জনকে। ধৃতদের দাবি, তরুণীর বেশ কিছু টাকা পাওনা ছিল তার প্রাক্তন প্রেমিকের কাছে। তাই তাঁকে আটকে রেখে সেই টাকাই চাওয়া হয়েছিল। এটা কোনও অপহরণের ঘটনা নয়।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, মূল অভিযুক্ত সেই তরুণী মধ্য কলকাতার একটি কলেজের পড়ুয়া। সেখানেই তার সঙ্গে ওই তরুণ পড়াশোনা করতেন। দুজনের মধ্যে ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব থেকে ভাব-ভালবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু সেই তরুণ কলেজ পাশ করে যেতেই শুরু হয় মনোমালিন্য। এরপর তরুণীও একটি নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তার অভিযোগ, ওই তরুণ অর্থাৎ তার প্রাক্তন প্রেমিক সম্পর্ক থাকাকালীন ৩০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু দুজনের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর অনেকবার চাওয়া সত্ত্বেও সেই টাকা আর ফেরত দিচ্ছিলেন না। ও টাকা আদায় করতেই তাঁকে আটকে রেখে দেওয়ার ছক কষা হয়েছিল।
জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার সকালে। বাগুইআটির বাসিন্দা ওই তরুণী ফোন করে তার প্রাক্তন প্রেমিককে ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। দুজন মিলে দক্ষিণ কলকাতার দিকে ঘুরতে যায়। সেখানেই একটি পার্কে ঘোরার সময়ই সেই তরুণী নিজের বতর্মান প্রেমিককে মোবাইলে জানান দেয়। এর পর সেই প্রেমিক নিজের তিন বন্ধুকে নিয়ে পার্কে হাজির হয়ে তরুণকে প্রায় জোরজবরদস্তি একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আটকে রেখে বাড়িতে ফোন করে তাঁর বাবা-মা’কে হুমকি দিয়ে বলে, ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ না দিলে ছেলেকে ছাড়া হবে না।
সঙ্গে সঙ্গে তরুণের বাবা অভিযোগ জানান ফুলবাগান থানায়। ফুলবাগান থানার পক্ষ থেকে ভবানীপুর থানা ও লালবাজারে গোটা বিষয়টি জানানো হয়। এরপর মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ধরেই সেই বাড়িতে গিয়ে শুভম বিশ্বাস, অভিষেক দাস, বিজয় রায় ও আমন চৌধুরি নামে চার যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই প্ল্যানের মাস্টারমাইন্ড ওই তরুণীও ধরা পড়েছে পুলিশের জালে।