দেশের সময় ,কলকাতা : ফের প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে সক্রিয় হল ইডি । তল্লাশি শুরু এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের। শুক্রবার ভোরে সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরোয় ইডি অফিসারদের গাড়ি। মোট ৬ জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে নাকতলার এক প্রোমোটারের বাড়ি। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে রাজীব দে নামে ওই ব্যক্তির বাড়ি ও অফিস রয়েছে। সেখানেই তল্লাশি চালানো হচ্ছে সকাল থেকে।ইডি সূত্রে খবর, ওই বাড়িটিও রাজীবের মালিকানাধীন। নাকতলার মোট তিনটি জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। বাঁশদ্রোনি, বালিগঞ্জ মিলিয়ে মোট ৬ জায়গায় চলছে তল্লাশি।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিকে নিয়োগ ‘দুর্নীতি’র তদন্তে নেমে রাজীব দে নামের ওই প্রোমোটার তদন্তকারীদের আতসকাচের তলায় আসেন। তদন্তের সূত্রেই বেশ কিছু নথিপত্র খতিয়ে দেখতে গিয়ে পার্থের সঙ্গে ওই প্রোমোটারের ‘ঘনিষ্ঠতা’র বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তার পর শুক্রবার সকালে রাজীবের দুয়ারে কড়া নাড়লেন তদন্তকারীরা।
রাজীব দে নামে ওই ব্যক্তির অফিস হল নাকতলার শ্রীরাম কনস্ট্রাকশন। সেখানেই গিয়েছেন ইডি অফিসাররা। তিনি বরাবরই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে জানা যায়। প্রোমোটিং-এর মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা ব্যবহার করা হয়েছে কি না, সেটা খুঁজে বের করতেই এই তল্লাশি বলে সূত্রের খবর।
গত সপ্তাহেই পার্থ ঘনিষ্ঠ কাউন্সিল বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি আধিকারিকরা। জানা যাচ্ছে, বাপ্পাদিত্যর কাছে কয়েকজন প্রোমোটারের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। ৫ প্রোমোটারের সঙ্গে পার্থর যোগ ছিল বলে সন্দেহ রয়েছে ইডি আধিকারিকদের। সেই সূত্রেই রাজীব দে-র নাম উঠে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। এদিন রাজীব দে-র অফিস ও বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে কিছু নথি উদ্ধারের চেষ্টা করছে ইডি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, রাজীব দে দীর্ঘদিন ধরেই প্রোমোটিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। প্রায় ১০-১২ বছর ধরে ওই কাজ করতেন তিনি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যে রাজীবের চেনাশোনা ছিল, সে কথাও এলাকার মানুষজনের জানা। তবে দুর্নীতির সঙ্গে রাজীবের কী যোগ থাকতে পারে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
গত মঙ্গলবারই রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় সল্টলেক-সহ কলকাতার ছ’জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। মঙ্গলবার সকাল ৭টা নাগাদ প্রথমে সল্টলেকের আইবি ব্লকের একটি বাড়িতে হানা দেন তদন্তকারীরা। পরে জানা যায় বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে ইডি আধিকারিকেরা পার্ক স্ট্রিট, রাসেল স্ট্রিট, বাগুইহাটি, কৈখালি এলাকার আরও পাঁচটি জায়গায় হানা দিয়েছেন। তদন্তকারীদের সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরাও। রাত থেকে জেরা করার পর বুধবার সল্টলেক থেকে গ্রেফতার করা হয় বিশ্বজিৎ দাস নামে এক ব্যবসায়ীকে। তিনি বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং রেশন মামলাতেই ধৃত শঙ্কর আঢ্য ওরফে ডাকুর ঘনিষ্ঠ বলে ইডি সূত্রে জানা যায়।