অর্পিতা বনিক, হাবড়া : চলছে বর্ষাকাল। আর বর্ষার মেঘ কেটে গেলেই আকাশে শরতের মেঘ জানান দেবে মা আসছেন। তবে ইতিমধ্যেই বেশকিছু জায়গায় হয়ে গিয়েছে খুঁটি পুজো। জোরকদমে পুজোর প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছেন ক্লাবের উদ্যোক্তারা। শহর কলকাতা থেকে জেলা, সর্বত্রই একই ছবি। পিছিয়ে নেই উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়াও। বুধবার উল্টোরথের সকালেপ্রবল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র সমবায় লিমিটেডের সদস্যদের ব্যবস্থাপনায় হয়েগেল খুঁটিপুজো ৷ এবার সেখানে দেখা যাবে ডিজনিল্যান্ড (Disneyland)।
আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র সমবায় লিমিটেডের এক সদস্য সৈকত চক্রবর্তী বলেন, হাবড়ার অন্যতম প্রাচীন পুজো এটি ৷ বিগত বেশকিছু বছর ধরেই এই পুজো হাবড়া তথা আশেপাশের মানুষের কাছে অন্যতম গন্তব্য। এবারও তার অন্যথা হবে না, কারণ এবারে এই পুজোর থিম ডিজনিল্যান্ড। মূলত শিশুদের কথা মাথায় রেখেই এবারে এই ভাবনা তাঁদের। যদিও বাকি সব বয়সের মানুষেরই এই থিম ভাল লাগবে বলেও আশাবাদী তাঁরা।
শহর কলকাতার অন্যতম জনপ্রিয় পুজো কমিটি শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবেরও এই বছরের থিম ডিজনিল্যান্ড । সেক্ষেত্রে কি হাবড়ার এই পুজো টক্কর দিতে পারবে শ্রীভূমিকে? এরই উত্তরে সৈকত বাবু জানান, কোন প্রতিযোগিতায় আমরা নেই তবে দর্শণার্থীদের মন জয় করাই আমাদের লক্ষ্য ৷
প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক বছরে একের পর এক অভিনব থিম এনে পুজোর ভিড় অনেকটাই টানতে সফল শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব। কখনও বুর্জ খলিফা তো কখন ভ্যাটিকান সিটি, কখনও আবার বাহুবলী থিম দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করেছে। বলতে গেলে উদ্বোধনের পর থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে শ্রীভূমির পুজো প্রাঙ্গণে। আর অষ্টমী নবমীর রাতে ভিড় সামাল দিতে কার্যত হিমশিম খেয়ে যান ক্লাব কর্তা থেকে শুরু করে পুলিশকর্মীরা।
তবে এবার দেখার হাবড়ার এই পুজো কতটা সাড়া ফেলতে পারে। ছবিতুলেছেন দেবানন্দ পাইন৷
হাবড়াতেও এবার ডিজনিল্যান্ড, টক্কর দেবে শ্রীভূমিকে?
এই প্রসঙ্গে পুজো কমিটির সভাপতি পূর্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল, সামর্থ্যের দিকটাও ছিল, বাচ্চাদের যুক্ত করার ব্যাপার ছিল। পরিবেশের বিষয়টাও খুব বেশি আছে সেখানে। সেই সব চিন্তভাবনা নিয়েই এগোচ্ছি।’ তিনি আরও জানান, মূলত সুতির জিনিস দিয়েই তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। ব্যবহার হচ্ছে ১০০ শতাংশ দেশীয় সামগ্রী। সমগ্র আয়োজনের জন্য ২০ থেকে ২২ লাখ টাকা বাজেট নিয়ে ময়দানে নেমেছেন পুজো উদ্যোক্তার।
পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘কলকাতা থেকে দর্শনার্থীরা আসবেন কি না বলতে পারব না, তবে হাবড়া ও উত্তর ২৪ পরগনার মানুষের ভিড় অবশ্যই উপচে পড়বে। শ্রীভূমির বাজেট অনেক বেশি, ওদের আর্থিক ক্ষমতা বেশি, তবে আমাদের আন্তরিকতা, আমাদের মণ্ডপ অবশ্যই ভাল হবে।’ কিন্তু হাবড়ার এই পুজো শ্রীভূমিকে টেক্কা দিতে পারবে কি না, সে কথা এখনই বলা সমিচিন নয় বলেই মনে করেন পূর্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়। তবে পূণ্যার্থীদের মন জয় করতে পারবে এবারের পুজোমন্ডপ ও প্রতিমা,অন্তত তেমনটাই আশা পুজো উদ্যোক্তাদের।