দুর্গাপুজো ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল সহ বিশ্বের একাধিক রাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হয়। বাঙালির এই প্রধান উৎসব পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ভারতের আসাম, ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ডেও খুব জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হয়। এই সময় অন্যান্য রাজ্যের প্রবাসী বাঙালিরাও এই উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠেন। এমনকি পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে কর্মসূত্রে বসবাসরত বাঙালিরাও দুর্গোৎসবের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হন না, তারা বিদেশের মাটিতেই এই পুজোর আয়োজন করে ক’টা দিন আনন্দের জোয়ারে ভেসে থাকেন।
তবে পশ্চিমবঙ্গের প্রধান উৎসব বলে, পুজোর অনেক আগে থেকেই সারা বাংলা জুড়ে মায়ের আগমনের প্রস্তুতি চলছে। কোথাও জোর কদমে কাজ হচ্ছে, কোথাও আবার একটু মন্থর গতিতে। মা আসছেন। প্যান্ডেলগুলোর দিকে তাকালেই মনে একটা খুশির হাওয়া বয়ে যায়। আবার কত হৈ চৈ ! লাইট, মানুষের ঠেলাঠেলি! নতুন জামাকাপড়ের গন্ধ ! চারদিকে সেই আনন্দোৎসবের প্রস্তুতিই চলছে।
দক্ষিণ কলকাতার প্যান্ডেলগুলো ঘুরতে ঘুরতে পৌঁছানো গেল ‘বোসপুকুর শীতলা মন্দির দুর্গোৎসব কমিটি’- তে, সেখানকার সাধারণ সম্পাদক কাজল সরকারের কাছ থেকে জানা গেল এবছরে তাদের পুজোর অভিনবত্বে কি থাকতে চলেছে ? কাজল সরকার জানান, ” আমাদের গোটা প্যান্ডেলটা হচ্ছে গার্ডেন চেয়ার দিয়ে, যে চেয়ারগুলো বর্তমানে অবলুপ্তির পথে।
আগে ডেকোরেটাররা যে কোন অনুষ্ঠানেই এই চেয়ার ব্যবহার করতেন কিন্তু সময় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই চেয়ারেরও পরিবর্তন ঘটেছে। আজকাল এই চেয়ার খুব একটা নজরে আসে না। এই হারিয়ে যাওয়া জিনিসটিকেই আমরা আবার সবার সামনে নিয়ে এসেছি। তবে আমরা এখানে বোঝাতে চেয়েছি যে, চেয়ার তো অনেক রকম ভাবেই ব্যবহার হয়, তাই যে যে চেয়ারে বসে তার সেই চেয়ারের দাম সে ভাবেই হয়।
একদম উঁচুতে একটি চেয়ার থাকবে সিংহাসনের মত আবার একদম নীচেও একটি চেয়ার থাকবে যেটা সিংহাসনের মত হবে। এই নীচের থেকে ওপরে পৌঁছাতে গেলে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, সেটা কর্পোরেট জগত থেকে শুরু করে যে কোন ক্ষেত্রেই। এই ব্যাপারটাই তুলে ধরছি। এখানে কিছু মেকানিক্যাল দিক থাকবে। তাছাড়া মানুষের জীবনের উত্থান – পতনের দিকটিও দেখাবো। আমাদের এবারের পুজোর থিম হল, ‘ সমন্বয় ‘।”
দক্ষিণ কলকাতা থেকে এবার উত্তরে পৌঁছনো গেল, প্রথমেই ঘুরে নেওয়া গেল ‘হাতিবাগান সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি’ – তে। সেখানকার সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বোস জানালেন, “আমাদের এবারের থিম হল ‘দোসর’।
৮৯ বছরের পুজোতে আমরা এবার একটা বিশেষ চমক রাখছি যেটা এই মুহূর্তে সবার সামনে আনতে চাইছি না। তবে এটুকু বলতে পারি যে এখানে প্রাচীন ও আধুনিকতার একটা মেলবন্ধন ঘটবে। আমাদের প্যান্ডেল ডিজাইনার তাপস দত্ত এবং প্রতিমা শিল্পী কৃশানু পাল। “