দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রবিবাসরীয় সন্ধের হাউজফুল যুবভারতীতে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে দিলেন খোদ লাল হলুদ সৈনিক। সুমিত পাস্সির আত্মঘাতী গোলে ১-০ তে ডার্বি জিতল এটিকে মোহনবাগান। টানা হাফ ডজন ডার্বি হার লাল হলুদের। তারমধ্যে আই লিগে এক, আইএসএলে চার এবং ডুরান্ড কাপে এক। ডার্বি হারের ফলে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার রাস্তা কঠিন হয়ে গেল কনস্ট্যানটাইনের দলের। তিন ম্যাচে মাত্র ২ পয়েন্ট ইস্টবেঙ্গলের।
অন্যদিকে সমসংখ্যক ম্যাচে ৪ পয়েন্ট এটিকে মোহনবাগানের। দুই ম্যাচ খেলে মুম্বই সিটি এফসি এবং রাজস্থান ইউনাইটেডের পয়েন্ট চার। সোমবার মুখোমুখি দুই দল। যে জিতবে সরাসরি চলে যাবে শেষ আটে। বাকি একটি জায়গার জন্য লড়াইয়ে থাকবে এটিকে মোহনবাগান, মুম্বই সিটি এফসি এবং রাজস্থান ইউনাইটেড।
বাকি ম্যাচের রেজাল্টের ওপর নির্ভর করবে ইস্টবেঙ্গলের ভাগ্য। মুম্বই এবং মোহনবাগান নিজেদের ম্যাচ জিতলেই গ্রুপের শেষ ম্যাচে নামার আগেই ছিটকে যাবে লাল হলুদ। এদিন লিস্টন, আশিকরা একাধিক গোল মিস না করলে ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। প্রশংসা করতে হবে গঞ্জালেস, কিরিয়াকুর রক্ষণের।
আগের ম্যাচের দলে কোনও পরিবর্তন করেননি জুয়ান ফেরান্দো। ডার্বিতে একই দল খেলায় এটিকে মোহনবাগান। অন্যদিকে রাজস্থান ম্যাচের দলে পাঁচটা বদল করেন স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন। ডার্বিতে প্রায় অর্ধেক নতুন কম্বিনেশন।
স্বভাবতই সাজানো বাগানের বিরুদ্ধে প্রথমদিকে একেবারেই ছন্নছাড়া দেখায় ইস্টবেঙ্গলকে। ডার্বিতে চারজন বিদেশিকেই নামিয়ে দেন লাল হলুদের ব্রিটিশ কোচ। পরের দিকে নামান পঞ্চম বিদেশি ক্লেইটনকেও।কিন্তু লাভের লাভ কিছু হয়নি। দলের সঙ্গে এখনও মানিয়ে নিতে পারেনি অ্যালিয়ান্দ্রো ডস স্যান্টোস।
সুমিত পাস্সির সঙ্গে আপফ্রন্টে তাঁকে রেখে শুরু করেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের ব্রিটিশ কোচ। কিন্তু প্রথম ৩০ মিনিট ম্যাচের দখল ছিল সবুন মেরুনের। কিন্তু আবার সেই ফিনিশিংয়ের অভাব। আগের ম্যাচের মতো বারবার জায়গা বদলে খেলছিলেন লিস্টন, হুগো, আশিকরা। এই ত্রয়ী আক্রমণের ঝড় তোলে। কিন্তু সেই প্রথম দুই ম্যাচের পুনরাবৃত্তি। বিরতির আগেই অন্তত ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়া উচিত ছিল এটিকে মোহনবাগানের।
মাত্র চার মিনিটের ব্যবধানে পরপর দুটো মিস করেন আশিক এবং লিস্টন। প্রথমার্ধের মাঝামাঝি এই যুগলবন্দি থেকে গোল আসার সুযোগ তৈরি হলেও মিস করেন লিস্টন।
প্রথমার্ধে লাল হলুদের একমাত্র শট ৩৪ মিনিটে। মিস করেন ইভান গঞ্জালেস। তবে ইস্টবেঙ্গলের ভুলে বিরতির আগেই এগিয়ে যায় সবুজ মেরুন। ম্যাচের ৪৫+১ মিনিটে লিস্টনের কর্নার সুমিত পাস্সির বুকে লেগে গোলে ঢুকে যায়।
প্রথমার্ধে বল পজেশন ৬৪ শতাংশ ছিল মোহনবাগানের। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টা চালায় লাল হলুদ। একাধিক পরিবর্তন করেন কনস্ট্যানটাইন। বিরতির পর একটা ঝাপটা দিয়েছিল ক্লেইটন, সৌভিকরা। কিন্তু গোল করার লোকের অভাব।
৪৮ মিনিটে সৌভিকের ফ্রিকিক ফিস্ট করে বাঁচান বাগান কিপার বিশাল কেইত। তার দু’মিনিটের মধ্যে ক্লেইটনের পাস থেকে নিশ্চিত হেড মিস করেন সুমিত। ম্যাচের শেষ আধ ঘণ্টা দুই দলই গোলের সুযোগ পেয়েছিল। তবে তারমধ্যেও আধিপত্য ছিল সবুজ মেরুনের। ৫৪ এবং ৫৭ মিনিটে আশিক এবং পোগবার শট বাঁচান লাল হলুদ কিপার কমলজিৎ সিং।
শেষ দশ মিনিট ডার্বির হ্যাটট্রিক বয় কিয়ান নাসিরিকে নামান ফেরান্দো। দু’বার গোলমুখে খুলেও ফেলেছিলেন। জনি কাউকোর ফ্রিকিক থেকে হাফটার্নে কিয়ানের শট বাঁচান কমলজিৎ। চোট নিয়েও অনবদ্য খেলেন ফিনল্যান্ডের মিডিও। ম্যাচের সেরা কার্ল ম্যাকহিউ।
ইস্টবেঙ্গল আজকের হারের পর মোটামুটি ছিটকে গেল টুর্নামেন্ট থেকে। তবে কিছুটা হলেও তাদের অল্প সুযোগ এখনো রয়েছে। অন্তত খাতায় কলমে। ম্যাচের সেরা কার্ল জানিয়ে দিলেন নির্দিষ্ট প্ল্যান অনুযায়ী খেলে ডার্বি জিততে পেরেছেন তারা। এখন লক্ষ্য নক আউট নিশ্চিত করা। ম্যাচের শেষ মোহনবাগান সমর্থকদের সঙ্গে ভাইকিং ক্ল্যাপ দিলেন ফুটবলারা।