দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: সাংবাদিক সমিয়া বিশ্বনাথন হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের নির্দেশ দিল দিল্লির সাকেত আদালত। ঘটনার প্রায় ১৫ বছর পর রায় দিয়েছে আদালত। পঞ্চম অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই জেলে বন্দি। বাকি চারজনকে মকোকা আইনের অধীনে ১ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। পঞ্চম অভিযুক্তকে ৭.৫ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, এই টাকার বেশির ভাগটাই যাবে নিহতের পরিবারের কাছে।
সমিয়া বিশ্বনাথনের মত একজন তরুণী সাংবাদিকের মৃত্যুতে এদিন শোকপ্রকাশ করেছে আদালত। ২০০৮ সালে ৩০ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ দিল্লির নেলসন ম্যান্ডেলা মার্গে গুলি করে হত্যা করা হয় সমিয়াকে। সেই সময় কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। পুলিশের দাবি, ডাকাতির উদ্দেশ্যেই তরুণীর ওপর হামলা চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তবে ঘটনার পর প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানায়, গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে সমিয়ার। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর দেখা যায় মাথায় বন্দুকের গুলি লেগে মৃত্যু ঘটেছে।
২০০৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কাজ থেকে ফেরার পথে রাত ৩টের সময় দিল্লির বসন্ত কুঞ্জের কাছে খুন হয়েছিলেন বছর পঁচিশের টেলিভিশন সাংবাদিক সৌম্যা বিশ্বনাথন। একটি গাড়ির ভিতর থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছিল, সৌম্যার মাথা ফুঁড়ে দিয়েছিল গুলি। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মী জিগীষা ঘোষের মৃত্যুর তদন্তে নেমে সৌম্যার খুনের বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু তথ্যপ্রমাণ খুঁজে পায় পুলিশ। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, তাঁরা সৌম্যার খুনের সঙ্গেও যুক্ত। ২০০৯ সালে পেশ করা ৬২০ পাতার চার্জশিটে দিল্লি পুলিশ জানায় যে, ডাকাতি এবং লুটপাটের জন্যই সৌম্যাকে খুন করা হয়।
হাতের ট্যাটু এবং পুলিশের চুরি যাওয়া ওয়্যারলেস সেটই ধরিয়ে দিয়েছিল দিল্লির সাংবাদিক সৌম্যা এবং তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী জিগীষার খুনিদের। তার পরই দিল্লি পুলিশের তৎকালীন ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) এইচজিএস ঢালিওয়াল এসিপি ভীম সিংয়ের নেতৃত্বে সেই খুনের তদন্তের জন্য একটি দল গঠন করেন। একে একে ধরা পড়তে থাকে অভিযুক্তরা।
সাংবাদিক সৌম্যা খুনে অভিযুক্ত রবি, অমিত, বলজিৎ, অজয় কুমার এবং অজয় শেট্টিকে দোষী সাব্যস্ত করে দিল্লির নিম্ন আদালত। এদের মধ্যে রবি, অমিত, বলবীর ও অজয় কুমারকে দুটি ভিন্ন খাতে ২৫ হাজার টাকা ও ১ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি পঞ্চম অপরাধী অজয় শেঠিকে ৭.৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে আদালত। এই অর্থের ৭.২ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে নিহত সৌম্যার পরিবারকে।