সঙ্গীতা চৌধুরী , কলকাতা : সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে ‘ আমি দুর্গা’ নৃত্যনাট্য মঞ্চস্থ হলো। নৃত্যনাট্যের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী শিল্পী বারুরী। নৃত্যনাট্যটি তাঁর নির্দেশনায় উপস্থাপিত হয়।
https://youtube.com/shorts/n1hYvyH_AS0?si=Ge6iq2nR9pSh7iyR
প্রাক্তন সাংসদ ডা: মমতাজ এতে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে এদিন সংবর্ধনা জানানো হয় বিশিষ্ট চিকিৎসক দীপঙ্কর সরকার ও বঙ্গ সংস্কৃতি মঞ্চের সম্পাদক ফিরোজ হোসেনকে। অনুষ্ঠানের আয়োজক শিল্পী ড্যান্স অ্যাকাডেমি। নৃত্যনাট্যের স্ক্রিপ্ট লিখেছেন কোয়েল গাঙ্গুলি। তবে পাশাপাশি তিনি নৃত্যনাট্যে অংশগ্রহণও করেন।
সবমিলিয়ে প্রায় ২৫ জন শিল্পী অংশ নেন। প্রত্যেক শিল্পী দেবী দুর্গার গল্পকে তাদের নৃত্যের আঙ্গিকে জীবন্ত করে তোলেন। এতে শাস্ত্রীয় নৃত্য, অভিব্যক্তিপূর্ণ গল্প বলা এবং বর্ণিল কোরিওগ্রাফির একটি প্রাণবন্ত মিশ্রণ ধরা পড়েছে। দুর্গোৎসব হলো একটি মহা উৎসব যেখানে শিল্প, সংস্কৃতি এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নারী শক্তির উদযাপন করা হয়।
শিল্পী বারুরী বলেন, ‘আমরা যখন এই নৃত্যনাট্য উপস্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখন মনে হচ্ছিল একটি শক্তির মূলে প্রবেশ করছি।দুর্গা শুধুমাত্র একজন দেবী নন,তিনি সেই শক্তিকে প্রতিফলিত করেন যা প্রত্যেক নারীর মধ্যে রয়েছে। প্রতিটি ভূমিকায় যেমন —মা, বোন, মেয়ে, নেতা বা যৌনকর্মী—নারীরা এক ধরনের সাহস এবং শোভা প্রদর্শন করেন, যা দুর্গার নিজের প্রতিচ্ছবি। আমাদের ঘর, কর্মক্ষেত্র এবং সম্প্রদায়ে আমরা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হই, সেগুলির ঊর্ধ্বে উঠে আমাদের প্রিয়জনদের রক্ষা করি। ঠিক দেবী দুর্গার মতো আমরা দশ হাতে একাধিক দায়িত্ব পালন করি।
‘আমি দুর্গা’ নৃত্যনাট্য, যা শাস্ত্রীয় নৃত্য, পালা এবং নাটকের সৌন্দর্যকে একত্রিত করেছে। প্রতিটি নারী, তার নিজের মতো করে, একজন দুর্গা।’
এই নৃত্যনাট্যে বিভিন্ন পথের নারীদের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয়েছে। তারা নিজেদের অধিকারের জন্য লড়াই করছেন। তাদের পরিবারকে লালন করছেন আবার বাইরের জগতেও টিকে থাকতে নারীদের লড়াই চালিয়ে যেতে হয়। তাঁরা দুর্গার আত্মাকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। নারীরা শক্তি এবং কোমলতা, ন্যায়বিচার এবং করুণা, শক্তি এবং সৌন্দর্যের ভারসাম্য বজায় রাখেন। এই অনুষ্ঠানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, এটি ঐতিহ্যবাহী এবং সমকালীন উপাদানগুলির মিশ্রণ যা নিখুঁতভাবে মিলিত হয়ে একটি আকর্ষণীয় পরিবেশনা তৈরি করেছে।
আমি দুর্গা নৃত্যনাট্যের কোরিওগ্রাফার হিসেবে শিল্পী বারুরী প্রযোজনাটিতে গভীর সাংস্কৃতিক এবং আধ্যাত্মিক মর্মার্থ মিশিয়েছেন। দেবী দুর্গার শক্তিশালী গল্পকে জটিল নৃত্যশৈলী, প্রাণবন্ত অভিব্যক্তি এবং হৃদয়স্পর্শী সঙ্গীতের মাধ্যমে জীবন্ত করে তুলেছেন । অনুষ্ঠানের অংশগ্রহণকারীরা হলেন মমতাজ, সংহমিতা, বিদিশা, অভিষা, তানিশা,দীপশিখা, সুচরিতা, মুগ্ধা,ব্রতোজা, অনিন্দিতা, বর্ণালী, পরমিতা, কেয়া, রূপা, স্বাতি, বর্ণীল আমিষী, সুভ্রা। সমগ্র অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন অরণ্য মাজি শাম।