শিস সবে পাকতে শুরু করেছিল। জমি থেকে ধান তুলতে এখনও সপ্তাহ দুয়েক বাকি। এই পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ এসে পাকা ধানে মই দিয়ে গেল । দানা যেতেই ভারী বৃষ্টিতে ডুবেছে বিঘার পরে বিঘা ধানের জমি । নষ্ট হবে পাকাধান চিন্তার ভাঁজ পড়েছে চাষিদের কপালে। চিন্তা বাড়ছে আনাজ চাষিদেরও। হাঁটু জলে ডুবে আছে শীতের সবজি থেকে শুরু করে আদা ও আলু ।
দুর্গাপুজোর আগে প্রবল বৃষ্টিতে আনাজ চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। উৎসবের মরসুমে বাজার যথেষ্ট চড়া। সকলে অপেক্ষায় ছিলেন একটু ঠান্ডা পড়লে এবং শীতের আনাজ উঠলে বাজারে কিছুটা স্থিতাবস্থা আসবে। এবার দানার দাপটে বৃষ্টিতে ফের আনাজের সর্বনাশ হওয়ায় আনাজের দাম কোথায় পৌছবে, এখন তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ বার বর্ষার গোড়ায় ভাল বৃষ্টি মেলেনি। পরে সেই ঘাটতি পূরণ হয়েছে। তাই ধানের ফলন ভাল হয়েছে। কিন্তু ফসল ঘরে তোলার মুখেই পাকা ধানে মই পড়ায় শঙ্কায় পড়েছেন চাষিরা! দেখুন ভিডিও
ধান এবং আলুর পাশাপাশি ছয়ঘড়িয়া, পীরোজপুর , কালিয়ানী, নতুনগ্রাম , মাধবপুরের মতো বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শীতের সবজি ভাল হয়। জমি থেকে জল সরতেই দুর্গাপুজোর মুখে শীতের ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, মুলো, পালং শাক চাষ করেছিলেন চাষিরা। বনগাঁর ইছামতী নদী এলাকার প্রবীণ চাষিরা জানাচ্ছেন , ‘‘ দানা জেরে যা বৃষ্টি হয়েছে, তাতে সমস্যা খুবই বেড়েছে এর পরেও যদি আরও বৃষ্টি হয় তাহলে আর কোন সবজি – আনাজ বাঁচানো যাবে না সবটাই জলে যাবে । লাগামছাড়া বৃষ্টি হলে আনাজের পাশাপাশি ধানেরও ব্যাপক ক্ষতি হবে। আলু চাষ পিছিয়ে যাবে অনেকটাই। আনাজের দাম ফের বাড়বে।’’
চাষিদের অনেকেই বলছেন, জেলা কৃষি দফতর সতর্ক করলেও পরিস্থিতি কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষেই অনুকূল নয়। এখনই আনাজের দামে ছেঁকা লাগছে সাধারণ মানুষের। বেগুন, টোম্যাটো, শসা, পটল, ঢ্যাঁড়শের দামে সেঞ্চুরি হয়ে গিয়েছে। সিমের কেজি আড়াইশো টাকা। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে দাম কোথায় পৌঁছবে, চিন্তা সব মহলেই।
কৃষকদের দাবি, বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে পড়ে গিয়েছে বিঘার পর বিঘা জমির ধান। কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দিয়ে উঠবেন সেটা ভেবেই আকুল তাঁরা।ধান চাষ বড়সড় ক্ষতির মুখোমুখি হতে চলেছে বলেই আশঙ্কা কৃষকদের। সেইসঙ্গে এই আকাল অথচ একটানা বৃষ্টিতে শীতের শাকসবজি ফলনও মার খাবে বলে আশঙ্কা কৃষকদের। যার ফলে চড়া হতে পারে বাজার।