দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে ভবতারিণী মায়ের পুজোর আয়োজন। ভোর সাড়ে ৫টায় মন্দির খোলার পর বিশেষ আরতি হয়। এরপর মা ভবতারিণীর পুজো। তারপর ধূপ আরতি। আজ সন্ধ্যারতি ও বিশেষ পুজোরও আয়োজন করা হয়েছে। ১৮৫৫ সালে রানি রাসমণি দক্ষিণেশ্বর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর থেকে রামকৃষ্ণদেবের সাধনস্থলে পরিণত হয় এই মন্দির। রামকৃষ্ণের সাধক সত্ত্বা এখানে পরিপূর্ণতা লাভ করে।
করোনা আবহে কালীপুজোয় বেশ কিছু নিয়মে বদল হয়েছিল দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে। দূরত্ববিধি থেকে শুরু করে সমস্ত নিয়ম বলবৎ করা হয়েছিল কঠোর ভাবে। তবে অন্যান্য বছর কালী পুজোয় যে ধরণের নিয়ম দেখা যায় দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরে, চলতি বছরে সেই চেনা ছন্দে দেখা মিলল দক্ষিণেশ্বর মন্দির। দেখুন ভিডিও
এ দিন ভোর থেকেই মন্দির চত্বরের বাইরের অংশের চাতাল থেকে বালি ব্রিজ পর্যন্ত সর্বত্র ভক্তদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে পূর্ণ মাত্রায়। প্রতিবছর কালীপুজোর দিন ভোর থেকেই ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ভিড় জমে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে। বিকেল থেকেই সেই ভিড় বাড়তে থাকে মন্দির চত্বরে।গঙ্গার ঘাট থেকে শুরু করে নাট মন্দির ও চাতাল জুড়ে দেখা যায় লাখো ভক্তের ভিড়। করোনা আবহে সেই পরিস্থিতির আমূল বদল আনা হয়েছিল। তবে ভিড়ের চাপে সকাল থেকে যে সব ভক্তরা বসে পুজো দিচ্ছেন, তাদেরকেও পুজো দেওয়ার পরে মন্দির ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হচ্ছে।
ফলে সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে কালীপুজো এই শক্তিপীঠে।আজ সকাল থেকে যে সব ভক্তরা পুজো দিতে আসছেন, তাঁরা মন্দিরে এসে দাঁড়িয়ে আছেন লম্বা লাইন ধরে। মন্দিরের চাতালে একসঙ্গে প্রায় কয়েক হাজার জনকে দাঁড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে ৷
দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী জানিয়েছেন, ” যে সব নিয়ম মেনে মন্দিরে পুজো হয়, এখনও সেটা বজায় রাখা হচ্ছে। গোটা দেশের মানুষের আবেগ জড়িয়ে আছে এই মন্দিরের সাথে। তাই কালী পুজোর দিনে কাউকেই পুজো দেওয়া থেকে বিরত করতে বা বঞ্চিত করা হবেনা।
তাই মন্দিরের বিধি মেনেই সব কাজ করা হচ্ছে।”নাটমন্দিরে বসানো হয়েছে ক্যামেরা। সেখান থেকেই অবশ্য অনলাইনে ফিড মিলছে সরাসরি পুজো দেখার জন্যে।
ভোরে দেবী ভবতারিণীর বিশেষ আরতি দক্ষিণেশ্বরের পুজোর বিশেষ আকর্ষণ। ঘট স্নানের পর মায়ের পুরনো ঘটেই নতুন করে গঙ্গার জল ভরে প্রতিষ্ঠা করা হয় কালীপুজোর দিন। দক্ষিণেশ্বরে মা ভবতারিণী ঠাকুর শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের দেখানো পথেই পুজো পান। মায়ের ভোগও অতি সাধারণ।
ভোগে নিবেদন করা হয় সাদাভাত, ঘি, পাঁচরকমের ভাজা, শুক্তো, তরকারি, পাঁচ রকমের মাছের পদ, চাটনি, পায়েস ও মিষ্টি। তবে এখানে কারণবারির (মদ) বদলে ডাবের জল দিয়েই মায়ের পুজো হয়।