
দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ উত্তর ২৪ পরগনা:এক মহিলাকে ধারাল অস্ত্রের কোপ। মহিলার গলায়, পেটে কোপ মারার অভিযোগ উঠেছে তিন যুবকের বিরুদ্ধে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই মহিলাকে আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের ঘোলা এলাকায়। ইতিমধ্যেই ওই ঘটনার তদন্তে নেমে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত ওই যুবকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬, ৩০৬ ও ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই মহিলাকে প্রথমে পানিহাটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকায়, তাঁকে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বর্তমানে ওই মহিলা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভরসন্ধেবেলায় বাড়ি থেকে এক মহিলাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল তিন দুষ্কৃতী। কিন্তু বাধা পেয়ে শেষে ওই মহিলার গলার নলিই কেটে দেয় তারা। স্থানীয়দের তৎপরতায় একজন সঙ্গে সঙ্গে ধরা পড়লেও বাকি দু’জন পলাতক। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই মহিলা উত্তর কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

জানা গিয়েছে, ঘোলার মহিষাপোতায় স্বামী ও এক সন্তানের সঙ্গেই থাকেন ওই মহিলা। শনিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ফাঁকা বাড়ির সুযোগ নিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ে তিন দুষ্কৃতী। এরপর ওই মহিলাকে তুলে নিয়ে যায় পাশেই চাউলপোতা এলাকার একটি বাঁশবাগানে। সেখানেই জোরজবরদস্তি তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। পাল্টা প্রতিরোধ করেন সেই মহিলাও। দুষ্কৃতীদের ক্রমাগত বাধা দিতে থাকেন নির্যাতিতা। নিজেকে বাঁচাতে ধাক্কাধাক্কি ও চিৎকার করতে শুরু করেন।

এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ওই দুষ্কৃতীর দল। ধর্ষণে বাধা পেয়ে মহিলাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে লাগাতার কোপাতে থাকে তিনজন। এমনকি গলার নলিও কেটে দেওয়া হয়! কোপ বসানো হয় পেটের মধ্যেও। এদিকে ততক্ষণে ওই মহিলার চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে যায় বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। একজন দুষ্কৃতীকে হাতেনাতে ধরেও ফেলেন তাঁরা। তবে বাকি দু’জন গা বাঁচিয়ে কোনওরকমে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়।

গুরুতর আহত অবস্থায় নির্যাতিতাকে প্রথমে পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় পাঠিয়ে দেওয়া হয় আরজি কর হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই মহিলার অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক। ভেন্টিলেশনে রয়েছেন তিনি। যেহেতু গলায় নলির অনেকটা অংশ কেটে গেছে, তাই দুশ্চিন্তা রয়েই যাচ্ছে। এখনও জ্ঞান ফেরেনি নির্যাতিতার। যতক্ষণ না জ্ঞান ফিরছে, ততক্ষণ কিছুই বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা।

এদিকে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই ঘটনায় তেড়েফুঁড়ে তদন্তে নেমে পড়েছে ঘোলা থানার পুলিশ। ওই যুবককে জেরা করে বাকি দুই অভিযুক্তর খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা করছেন পুলিশকর্মীরা। কী কারণে মহিলার উপর আক্রমণ, এই ঘটনায় আর কে কে জড়িত, সেই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে ঘোলা থানার পুলিশ।

পুলিশের তরফে ইতিমধ্যেই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও দুইজন অভিযুক্তের খোঁজ চালাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা।
