দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে রয়েছে ওমিক্রন, এমনটাই স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রের এক প্রতিষ্ঠান।অর্থাৎ বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের থেকে নয়, দেশের অভ্যন্তরেই একে অপরের মাধ্যমে হু হু করে ছড়াচ্ছে ওমিক্রন।
সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক (Health Ministry) জানাল, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোভিড সংক্রমণ (Covid Infection) হয়েছে ৩ লক্ষ ৬ হাজার জনের। এই নিয়ে পরপর পাঁচদিন দেশে কোভিড আক্রান্ত হলেন ৩ লক্ষের বেশি মানুষ। তবে আগের দিনের তুলনায় দেশে কোভিড রোগীর সংখ্যা কমেছে আট শতাংশ। অতিমহামারী শুরু হওয়ার পরে এই নিয়ে আক্রান্ত হলেন মোট ৩ কোটি ৯৫ লক্ষ মানুষ। মোট আক্রান্তের ৫.৬৯ শতাংশ বর্তমানে অ্যাকটিভ রোগী। সুস্থ হয়ে ওঠার হার আগের চেয়ে কমে এখন হয়েছে ৯৩.০৭ শতাংশ। দৈনিক পজিটিভিটি রেট ১৭.৭৮ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ২০.৭৫ শতাংশ। সাপ্তাহিক পজিটিভিটি রেট ১৭.০৩ শতাংশ।
সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, দেশের কোভিড গ্রাফ নিম্নমুখী। কিন্তু দৈনিক সংক্রমণে এখনও রাশ টানা যায়নি। তা ৩ লক্ষের উপরেই। দৈনিক মৃত্যু সামান্য কমলেও, এখনও তা দুশ্চিন্তায় রেখেছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে কোভিডে মারা গিয়েছেন ৪৩৯ জন। অতিমহামারীর তৃতীয় ঢেউয়ের সময় যাঁরা মারা যাচ্ছেন, তাঁদের ৬০ শতাংশ হয় ভ্যাকসিন নেননি অথবা একটি ডোজ নিয়েছিলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্রে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৮০৫ জন। অতিমহামারী শুরু হওয়ার পরে ওই রাজ্যে আক্রান্ত হলেন মোট ৭৫ লক্ষ ৭ হাজার ২২৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্রে মারা গিয়েছেন ৪৪ জন। এই নিয়ে মহারাষ্ট্রে কোভিডে মৃত্যু হল মোট ১ লক্ষ ৪২ হাজার ১১৫ জনের। মুম্বইয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৫৫০ জন। মারা গিয়েছেন ১৩ জন। সোমবারই মহারাষ্ট্রের স্কুলগুলিতে শুরু হচ্ছে অফলাইন ক্লাস।
দক্ষিণের রাজ্যগুলির মধ্যে কর্নাটকে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ হাজার ২১০ জন। দু’দিন আগেই ওই রাজ্যে তুলে নেওয়া হয়েছে সপ্তাহান্তের কার্ফু। বর্তমানে কর্নাটকে অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা ৩ লক্ষ ৫৭ হাজার। তামিলনাড়ুতে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৫৮০ জন।
দিল্লিতে গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ৯১৯৭ জন। আগের দিন আক্রান্ত হয়েছিলেন ১১৪৮৬ জন। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ কমেছে ১৯ শতাংশ। পজিটিভিটি রেট ১৬.৩ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ১৩.৩ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে মারা গিয়েছেন ৩৫ জন। ১৩ জানুয়ারি দিল্লিতে আক্রান্ত হন ২৮৮৬৭ জন। তার পরে রাজধানীতে ক্রমশ দৈনিক সংক্রমণ কমতে থাকে।
ভারতে এখনও পর্যন্ত কোভিড ভ্যাকসিনের ১৬২ কোটি ২৬ লক্ষ ডোজ দেওয়া হয়েছে। প্রাপ্তবয়স্কদের ৭২ শতাংশ ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজই নিয়েছেন। ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের ৫২ শতাংশ নিয়েছে একটি ডোজ।
বিভিন্ন সমীক্ষার শেষে দেখা গিয়েছে, আংশিক বা সম্পূর্ণ টিকাহীন ব্যক্তিদের মৃত্যুর হার তৃতীয় ঢেউয়ে সবচেয়ে বেশি। যে কারণে কঠোর সুরক্ষাবিধি মেনে চলার পাশাপাশি টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।