দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দেশে কমল দৈনিক করোনা সংক্রমণ।
৩ লক্ষের নীচে নামল সংক্রমিতের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত ২ লক্ষ ৫৫ হাজার ৮৭৪ জন। যা সোমবারের থেকে ৫০ হাজার কম। অন্যদিকে সুস্থ হয়েছেন ২ লক্ষ ৬৭ হাজার ৭৫৩ জন। যার ফলে কমল অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা।
মঙ্গলবারের বুলেটিন অনুযায়ী দেশে কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২২ লক্ষ ৩৬ হাজার ৮৪২। যা মোট সংক্রমণের ৫.৬২ শতাংশ। সুস্থতার হার সামান্য বেড়ে ৯৩.১৫ শতাংশ। পজিটিভিটি রেট ২০.৭ শতাংশ থেকে কমে ১৫.৫২ শতাংশ। এদিকে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৬১৪ জনের।
দৈনিক আক্রান্ত তিন লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সংক্রমণের হার ২০ শতাংশের গণ্ডি পেরিয়েছিল। করোনার বাড়বাড়ন্ত দেখে চিন্তায় ছিলেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সেকেন্ড ওয়েভের মতো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হবে কিনা সে নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল। তবে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বুলেটিন বলছে, গতকালের চেয়ে পজিটিভিটি রেট তথা সংক্রমণের হার ৫ শতাংশ কমে গেছে। দৈনিক আক্রান্ত তিন লাখ থেকে আড়াই লাখে নেমেছে।
এদিকে সংক্রমণের শীর্ষে থাকা মহারাষ্ট্রে কমেছে দৈনিক সংক্রমণ। কিন্তু কর্ণাটকে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬ হাজার ৪২৬ জন। পশ্চিমবঙ্গেও দৈনিক সংক্রমণ এক ধাক্কায় অনেকটাই কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৪৫৬ জন। প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই সংক্রমণ কিছুটা হলেও নিম্নমুখী। টানা পাঁচদিন দৈনিক সংক্রমণ ৩ লক্ষের বেশি ছিল। তবে আজ সেই সংখ্যাটা কমায় সামান্য স্বস্তি মিলছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দেশে করোনা টিকা নেওয়ার গন্ডি ১৬২.৯২ কোটি অতিক্রম করেছে। অর্থাৎ, দেশের জনসংখ্যার মধ্যে ১৬২.৯২ কোটি মানুষ ইতিমধ্যেই টিকা নিয়েছেন।
দেশে দু’দিন আগেই করোনা সংক্রমণের হার ছিল ২০.৭৫ শতাংশ, আজকের হিসেবে ১৫.৫২ শতাংশ। সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার এখনও ১৭ শতাংশের কাছাকাছি। তবে দৈনিক আক্রান্ত কিছুটা হলেও কমেছে বলে আশায় বুক বেঁধেছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। টানা পাঁচদিন তিন লাখের বেশি করোনা আক্রান্ত হচ্ছিল একদিনে, এখন সেখানে আড়াই লাখের কাছাকাছি নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সুস্থতার হার ৯৩ শতাংশ।
কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও ভাল খবর শুনিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। শীর্ষস্থানীয় এপিডেমোলজিস্ট ড. সমীরণ পাণ্ডা বলেছেন, ১ মার্চ থেকে করোনার দাপাদাপি কমবে। মানুষজন যদি কোভিড বিধি মেনে চলেন, মাস্ক আর সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং মানেন, তাহলে মার্চ মাস থেকেই সংক্রমণের তেজ কমবে। ধীরে ধীরে এন্ডেমিক পর্যায়ে চলে যাবে দেশ।
ওমিক্রনের পাশাপাশি এখন করোনার নতুন প্রজাতি বিএ.২ ‘স্টেলথ ওমিক্রন’ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বে। এই সংক্রামক প্রজাতি নিয়েও উদ্বেগ চরমে।
তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন,
কোভিডের নয়া প্রজাতি এলেও মিউটেশনের গতি একসময় কমে যাবে। ভাইরাল স্ট্রেনও দুর্বল হতে থাকবে। যদি মানুষের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বেড়ে থাকে এবং হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়, তাহলে নতুন করে কোভিড ওয়েভ আসার সম্ভাবনা নেই। ড. সমীরণের বক্তব্য, ঠিক যেমন করে সার্স ভাইরাসের মহামারী নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল তেমনভাবেই সার্স-কভ-২ শক্তিহীন হয়ে পড়বে।
করোনা তখনই হার মানবে যখন মানুষ সচেতন হবে, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞের। তাঁর পরামর্শ, সংক্রমণের গতি কমবে এবং ভাইরাল স্ট্রেনও দুর্বল হবে, যদি ঠিকঠাক কোভিড বিধি মেনে চলা যায়। তিনটি শর্ত মানলেই করোনার তাণ্ডব কমবে। কী সেই শর্ত– কোনও রকম জমায়েত করা যাবে না, অনাবশ্যক ঘোরাঘুরি বা ভ্রমণ নয় এবং মাস্ক বাধ্যতামূলক। আগামী তিন মাস কঠোরভাবে এই নিয়ম মেনে চললেই করোনা বিদায় নেবে, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞের।