দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ অবশেষে কংগ্রেসের তরফে দলের সভাপতি নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হল। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে জানা গিয়েছে, অক্টোবর মাসেই সভাপতি নির্বাচনের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে কংগ্রেসের অন্দরে। ১৭ অক্টোবর হবে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। আর ১৯ অক্টোবর হবে ফলাফল ঘোষণা। তারপরই জানা যাবে দলের রাশ পরবর্তীতে কার হাতে থাকবে। রাহুল গান্ধী সভাপতি পদ ছেড়ে দেওয়ার পর আপাতত অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তাঁর মা সনিয়া গান্ধী। বিদেশ থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে অংশ নেন অন্তবর্তী সভাপতি সনিয়া গান্ধী।
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেনুগোপাল রবিবার সকালেই টুইট করে জানিয়েছিলেন, চিকিৎসার জন্য কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী বিদেশে আছেন। দলের স্থায়ী সভাপতি বাছাইয়ের জন্য ভোটের নির্ঘণ্ট তৈরি করতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হবে। সনিয়া ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাতে যুক্ত হবেন।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে সেপ্টেম্বরেই। বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে ২২ সেপ্টেম্বর। মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরু হবে ২৪ সেপ্টেম্বর। মনোনয়ম জমা দেওয়া যাবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আর ১৭ অক্টোবরই ভোটাভুটি হবে কংগ্রেসের পরবর্তী সভাপতি নির্বাচনের। এদিকে রবিবাসরীয় বৈঠকে বসেছে কংগ্রেসের কর্ম সমিতি। কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর নেতত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে নির্বাচনের দিনক্ষণে সিলমোহর দেওয়া হয়েছে। যদিও ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে এই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। বৈঠক শেষে নির্বাচনের দিনক্ষণ সাংবাদিক সম্মেলন করে জানালেন কংগ্রেস সাংসদ কেসি বেণুগোপাল।
দু’দিন আগেই কংগ্রেসকে বড় ধাক্কা দিয়ে দল ছেড়েছেন প্রবীণ নেতা গুলাম নবি আজাদ। নবির দলত্যাগ ঘিরে কংগ্রেসে এখন কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির পালা চলছে। এরই মধ্যে ঘোষণা হল, সভাপতি পদে নির্বাচনের পর্ব।
অনেকের ধারণা, গুলাম নবি অনেক ভাবনাচিন্তা করেই দল ছাড়ার সময় ঠিক করেছেন। এমন একটি সময় তিনি রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে নেতৃত্বে অযোগ্যতা এবং ঔদ্ধত্যের অভিযোগ তুলেছেন যখন দলের একাংশ তাঁকে ফের দলের সভাপতি করতে উঠেপড়ে লেগেছে। রাহুল নিজে এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি এখনও দ্বিতীয়বারের জন্য দলের কাণ্ডারি হওয়ার ব্যাপারে রাজি করানো যায়নি।
শেষ পর্যন্ত রাহুলকে রাজি করানো না গেলে এবং সনিয়া গান্ধীও তাঁর ইনিংস আর দীর্ঘায়িত করতে না চাইলে গান্ধী পরিবারের বাইরের কাউকে সভাপতি পদে বসানোর চেষ্টা হবে। গান্ধী পরিবারের পছন্দের নেতা রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। শোনা যাচ্ছে, তিনি রাজি নন। তবে এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে গান্ধী পরিবারের আস্থাভাজন হিসাবে যাঁকেই তুলে ধরা হোক, নির্বাচনের মুখোমুখি হতে হবে তাঁকে।
সনিয়া গান্ধী ১৯৯৮ সালে কংগ্রেস সভাপতি পদে বসার পর থেকে আজ পর্যন্ত সর্বোচ্চ পদটি গান্ধী পরিবারেরই দখলে। মাঝে ২০১৭ থেকে ২০১৯, এই দু’বছরের জন্য রাহুল গান্ধী সভাপতি ছিলেন। বাকি সময় সনিয়াই শীর্ষে পদে আসীন ছিলেন।
২০০০ সালে কংগ্রেস সভাপতি পদে প্রথম ভোটাভুটির মুখোমুখী হন তিনি। তারপর থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বিজেপির বক্তব্য, এই ২৪ বছরে তাদের নয়জন নেতা সভাপতি হয়েছেন। আসলে কংগ্রেস মানে গান্ধী পরিবার। শোনা যাচ্ছে, বিজেপির এই সমালোচনার কারণেও রাহুল, সনিয়া—কেউই আর সভাপতি থাকতে চাইছেন না।