ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর জন্মবার্ষিকী স্মরণে প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর শিশু দিবস পালন করা হয়। পণ্ডিত নেহেরু শিশুদের খুব পছন্দ করতেন এবং শিশুরা তাকে চাচা নেহেরু নামে ডাকত। শিশুদের প্রতি ভালোবাসা ও মমতার কারণে তার জন্মদিনটি শিশু দিবস হিসেবে পালিত হতো। শৈশব খুব বিশেষ এবং শৈশবের সেই দিনগুলি স্মরণ করতে গোটা দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে শিশু দিবস ।দেখুন ভিডিও
আজ শিশুদের দেওয়াল অঙ্কনে পরিবেশ রক্ষা করার বার্তার মধ্য দিয়ে ২৪ তম বর্ষ শিশু উৎসবের উদ্বোধন হল বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় উত্তর২৪ পরগনার অশোকনগর কল্যাণগড় কচুয়া মোড়ে ।
শহরের দেওয়ালই হল এখানে ক্যানভাস । সেই সব দেওয়াল লাল,নীল ,হলুদ , সবুজ রঙে রঙিন হয়েউঠল নিমেষেই৷ কেউ আঁকল নেহেরু ,কেউবা গাছ,নদী , পাহাড়৷ আবার কেউ কিছু না এঁকেই অন্যের আঁকা দেখে খুশি হয়ে তাঁর সব রং দিয়ে দিল পাশের জনকেই৷ এভাবেই দিনভর অনুষ্ঠানে মাতল শিশু দিবসের অশোকনগর৷
বৃহস্পতিবার থেকে অশোকনগরের কচুয়া মোড়ের মিলন সংঘের মাঠে শুরু হল অশোকনগর-কল্যাণগড় শিশু উৎসব। চলবে আগামী ২০২৫ সাল এর ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এদিন প্রায় ২০০ স্কুল পড়ুয়া শোভাযাত্রা এবং প্রতিযোগিতায় যোগ দেয়। উৎসব কমিটির সদস্যরা জানান, এ বার লোকসংস্কৃতির উপরে জোর দিয়েছেন তাঁরা। বিভিন্ন দিনে থাকছে ছৌ, ঝুমুর, বাউল, আদিবাসী নৃত্য। বাংলার লোকসংস্কৃতি এবারের উৎসবে তুলে ধরা হচ্ছে।
এদিন অশোকনগর গিয়ে দেখা গেল শহরের দু ধারের বাড়ির দেওয়ালগুলিকেই ক্যানভাস করে সেখানেই একের পর এক লাল , হলুজ , সবুজ রং মিশিয়ে ফুঁটিয়ে তুলছে ছবি । কেউ নেহেরু চাচার ছবি এঁকেছেন কেউ বা আবার প্রকৃতির রুপ ফুঁটিয়ে তুলতে ব্যস্ত । তবে এবার বেশির ভাগ দেওয়ালেই পরিবেশ রক্ষা করার বার্তা রয়েছে চোখে পড়ার মতো । ক্ষুদে চিত্র শিল্পীরা জানালেন তারা আর গাছ কেটে ফেলে পৃথিবীকে ধ্বংস হতে দিতে রাজি নয় । তাই যারা গাছ কাটছেন তাদেরকে সেই বার্তা দিতেই ছবি আঁকছেন।
এ যেন অশোকনগরের ঘরে ঘরে পিকাসো, মাতিস, ভ্যান গঘ। এদিন সাত সকালে কেবল হোমওয়ার্ক শেষ করেই ঢাল-তলোয়ার, থুড়ি , রং-পেন্সিল নিয়ে যুদ্ধে নেমে পড়েছেন তারা। নানা অদ্ভুত আঁকিবুকিতে ভরে উঠেছে শহরের দেওয়াল। সেই শিল্পের রহস্য উদ্ধার করা হয়ত আমার আপনার কাজ নয়। সদ্য রং করা দেওয়ালটির মায়াও কম নয়। প্রতিটি রঙের আঁচড় বুকে মোচড় দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই সব দামালপাগল শিল্পীকে থামায় কার সাধ্য!
অশোকনগরে শিশু উৎসবে দেওয়াল অঙ্কনে ব্যস্ত পড়ুয়ারা ছবিগুলি তুলেছেন দেবানন্দ পাইন ।