দু’দফায় মোট ১৫০ কোম্পানি বাহিনীর আসার কথা। প্রথম দফার ১০০ কোম্পানির মধ্যে কোন জেলায় কত বাহিনী মোতায়েন করা হবে, তা জানিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন।
দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সন্দেশখালির আবহে রাজ্য বেজে গিয়েছে লোকসভা নির্বাচনের দামামা। ভোটের দিন ঘোষণা হওয়ার আগে থেকেই তৎপর কমিশন। প্রায় প্রতিদিনই বৈঠকে বসছেন কমিশনের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব। বিভিন্ন জেলার দায়িত্বে থাকা অধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক সারছেন তিনি। বুধবারও বিকেল ৫টা থেকে শুরু হয় বৈঠক। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমিত গুপ্ত এবং শরদ কুমার দ্বিবেদী। এছাড়াও কলকাতার দায়িত্বে থাকা নির্বাচনী আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। জানানো হয়েছে, ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার পর আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করে, এমন কোনও পোস্টার বা ব্যানার শহরে রাখা চলবে না।পোস্টারগুলি সরিয়ে ফেলতে হবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই।
রাজ্যের ৩৫ টি পুলিশ জেলাতেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হবে। আগামী ১ মার্চ রাজ্যে আসছে ১০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। পরে ৭ মার্চ আরও ৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে। তবে জেলার গুরুত্ব এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সেই অনুপাতেই প্রথম থেকেই পাঠানো হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বুধবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে জরুরি বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকের পরে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর।
বেনজিরভাবে বাংলায় সর্বোচ্চ ৯২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই নিয়ে চর্চার মধ্যেই আরও একটি ঘোষণা হয়। কমিশনের তরফে বলা হয়, মার্চেই মোট ১৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে আসবে বাংলায়। অর্থাৎ লোকসভা নির্বাচনের অনেকটাই আগে। সাধারণত, ভোট ঘোষণা হওয়ার পর, অর্থাৎ রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা ও প্রশাসন কমিশনের হাতে যাওয়ার পরই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। কিন্তু এবার অন্য পথে হাঁটছে কমিশন। সেই প্রেক্ষিতে এই ১৫০ কোম্পানি বাহিনী কোথায় কোথায় মোতায়েন করা হবে তা নিয়ে ধন্দ ছিল। সেটা হয়তো এবার স্পষ্ট হল।
কোন জেলায় কত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হবে সেই তালিকাও প্রকাশ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। জানানো হয়েছে, দার্জিলিংয়ে প্রথম দফায় ৩ কোম্পানি, দ্বিতীয় দফায় ২ কোম্পানি, মোট ৫ কোম্পানি বাহিনী আসবে। দুই দফা মিলিয়ে কোচবিহারে ৫ কোম্পানি, আলিপুরদুয়ারে ৩ কোম্পানি, জলপাইগুড়িতে ৪ কোম্পানি আসছে। এছাড়া হাওড়া জেলায় সব মিলিয়ে ৯ কোম্পানি, কলকাতায় ১০ কোম্পানি এবং গোটা উত্তর ২৪ পরগনায় ২১ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে।
আগামী ৩ মার্চ রাজ্যে আসবে কমিশনের ফুল বেঞ্চ। সূত্রের খবর, প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসনকে এখন থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কমিশনকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারই ভিত্তিতে এবং অতীত রেকর্ডের নিরিখে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্র এলাকার স্পর্শকাতর বুথ এবং স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিতকরণ করা হবে। এমনিতেই লোকসভা নির্বাচনের জন্য সন্ত্রাসবাদ ও নাশকতার ঝুঁকি নিয়ে চলা জম্মু ও কাশ্মীরের থেকে বেশি বাহিনী চাওয়া হয়েছে বাংলায়। তার ওপর অগ্রিম ১৫০ কোম্পানি বাহিনী চলে আসায় বাংলায় ভোটের আবহ অনেক আগেই তৈরি হতে চলেছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য ৬৩৫ কোম্পানি বাহিনী চাওয়া হয়েছে। যা বাংলার থেকে অনেক কম। মাওবাদী সমস্যা কবলিত ছত্তীসগড়ের জন্য চাওয়া হয়েছে ৩৬০ কোম্পানি। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোকসভা আসন রয়েছে উত্তরপ্রদেশে। সেখানে লোকসভার আসন সংখ্যা ৮০। অর্থাৎ বাংলার প্রায় দ্বিগুণ। অথচ সেই উত্তরপ্রদেশের জন্য মাত্র ২৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছে নির্বাচন কমিশন।