ক্যান্সার রুখে দেবে কালো চাল, খোঁজ দিচ্ছে ‘থোড় বড়ি খাড়া’….

দেশের সময় : চারদিকে বিষবায়ু। ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে ভালো থাকার দুনিয়া। মুঠোভর্তি ওষুধ এখন দিনযাপনের অন্যতম সঙ্গী। প্রেসক্রিপশন লিখতে লিখতে ক্লান্ত ডাক্তারবাবুরাও। অথচ আমাদের হাতের নাগালেই এমন কিছু খাদ্যসামগ্রী রয়েছে, যারা নিজগুণেই অদ্বিতীয়। এদের সঙ্গে ভাব জমালে অনায়াসেই বদলে যেতে পারে আমাদের থোড় বড়ি খাড়া জীবন।

এমন কিছু খাবার যাদের মধ্যেই লুকোনো রয়েছে সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি। তারই সুলুক সন্ধান দিতে এবারের কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে খাদ্যাভাসে রোগমুক্তি সংক্রান্ত একটি অন্য ধারার বই ‘থোড় বড়ি খাড়া’। লেখক ‘বর্তমান’ পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক ব্রতীন দাস।দীর্ঘদিন কৃষি সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত লেখক বইটিতে তুলে ধরেছেন এমন কিছু খাবারের কথা, যা আমাদের সুস্থ ও নীরোগ থাকার দিশা দেখায়।

এক অজানাকে মেলে ধরে চোখের সামনে। মুগ্ধ করে। সমৃদ্ধ করে। সীমান্ত গ্রাম বনগাঁর ধুলোবালিতে বেড়ে ওঠা ব্রতীন ২০ বছর ধরে দৈনিক সংবাদপত্রে সাংবাদিকতা করছেন। বিশেষ ঝোঁক কৃষি সাংবাদিকতায়। ঘুরে বেড়ান কৃষকের মাঠে মাঠে। সেই অভিজ্ঞতারই নির্যাস বইটি।
‘বাংলার মুখ’ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এই বইয়ের প্রথমেই রয়েছে কালো চাল বিশেষ নিবন্ধ।

প্রচুর মাত্রায় অ্যান্থোসায়ানিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত এই চালকে কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন সুপার ফুড। এই চালের এমনই গুণ যা ক্যান্সার রুখে দিতে পারে, এমন দাবিও করা হচ্ছে বিভিন্ন গবেষণায়। প্রতিদিন মাত্র আটটি স্ট্রবেরি খেলে আটকে দিতে পারে স্ট্রোক।প্রথম নিবন্ধটি শেষ করতে না করতেই দ্বিতীয় লেখাটিতে বুঁদ হতে হয়। অবাক হতে হয় জেনে যে, স্ট্রবেরি কেন বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় ফলের স্বীকৃতি পেয়েছে।

তৃতীয় লেখাটি কড়কনাথ মুরগি নিয়ে। ৮০০ টাকা কেজি এর মাংস। কিন্তু কী আছে তাতে।সেটাই ব্যাখ্যা করেছেন পুষ্টিবিদ থেকে চিকিৎসকরা।যা জানলে আপনিও ডায়েটে যোগ করবেন কড়কনাথ বা কালীমাসির মাংস। বইটির পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে নজর কাড়ে নীরা। এ নীরা সুনীল গাঙ্গুলীর নীরা নয়। এ হল নারকেল গাছ থেকে পাওয়া এক ধরনের রস। কৃষি বিজ্ঞানীরা যার নাম দিয়েছেন নীরা। তার বাস মিষ্টির ভূবনে।গোটা পৃথিবীজুড়েই চোখ রাঙাচ্ছে ডায়াবেটিস। আর একবার সুগার ধরা পড়লে মিষ্টির সঙ্গে বিচ্ছেদ বাধ্যতামূলক। কিন্তু নীরার রসে ডোবানো মিষ্টি খেলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বাড়বে না এতটুকু। বলছেন বিজ্ঞানীরা।

এখন কলকাতা ও শহরতলীর অনেক জায়গাতেই নীরার রসে ডোবানো রসগোল্লা, পান্তুয়া, সন্দেশ তৈরি হচ্ছে। চাহিদাও প্রচুর। দার্জিলিং অসম চায়ের লড়াই নয়, এই চা তৈরি করে সাড়া ফেলেছে বাংলাদেশ। পাটপাতা থেকে চা তৈরি করেছে পদ্মাপাড়ের দেশ। যার তারিফ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিজে খেয়েও দেখেছেন। পাটপাতার চা বিদেশে পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ। আমাদের এখানে তৈরি হচ্ছে জবাফুলের চা। অপরাজিতা ফুলের চা। ইলিশের ঘরকন্না নিবন্ধটি এক অজানা বিষয়কে পাঠকের সামনে মেলে ধরে। পদ্মা-মেঘনা, গঙ্গার ইলিশ নয়, পুকুরে ইলিশ চাষ নিয়েই এই লেখা।

রুই-কাতলার সঙ্গে বাংলার পুকুরের মিষ্টি জলে তরতরিয়ে বেড়ে উঠছে রূপোলি শস্য।অসম্ভবকে কীভাবে সম্ভব করলেন বিজ্ঞানীরা, পুকুরে কী খাচ্ছে ইলিশ, এক বছরে কতটা বড় হচ্ছে, পুকুরের ইলিশের স্বাদ কেমন, কোথায় পুকুরে ইলিশ চাষ হচ্ছে, সবটাই তুলে ধরা হয়েছে এ লেখায়। পান্তাভাত আমাদের কত ধরনের রোগব্যাধি থেকে দূরে রাখতে পারে, অপরাজিতা কিংবা জবাফুলের চায়ের গুণাগুন কী, কারা খাবেন আর কারা খাবেন না ওই চা, তারও উল্লেখ রয়েছে বইয়ে।

একসঙ্গে যদি একমুঠো আপেলের বীজ চিবিয়ে খেয়ে ফেলেন কেউ, তা হলে মারা যেতে পারেন তিনি। এর কারণ কী? তরমুজ খাওয়ার সময় আমরা বীজ ফেলে দিই। মারাত্মক ভুল করে ফেলি। কারণ, তরমুজের বীজেই লুকিয়ে জীবনীশক্তি।রোগবালাই থেকে দূরে থাকতে কীভাবে সাহায্য করতে পারে টার্কির মাংস।লাল বাঁধাকপি বা গেরুয়া ফুলকপির গুণাগুন কী, কাঁকড়ার কেরামতি কি সবার জানা। উত্তরবঙ্গের তিস্তার বোরলি নিয়ে নানা গল্প, এক নিমেষে বইটি পড়ে শেষ করতে ইচ্ছে হয়।

কলকাতা বইমেলায় বাংলার মুখ প্রকাশনী (১৪৮ নম্বর স্টল) ছাড়াও বইটি পাওয়া যাচ্ছে ক্যালকাটা জার্নালিস্ট ক্লাবের স্টল (৩১০) ও কবিতা আশ্রমের স্টল (৪৫৮) নম্বরে।দাম ২৫০ টাকা। লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ das.biltu11@gmail.com
9733552427

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here