Calcutta High Court-Recruitment Scam এসএসসি রায়: ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট, বেতনও ফেরত দিতে হবে

0
250

গত তিন বছরে বাংলার রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোড়ন তোলা বিষয় নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলা। স্কুলে শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে বহু অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। টেট (প্রাথমিক স্কুল) এবং এসএসসি-র (মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক) দুই ক্ষেত্রেই রয়েছে অভিযোগ। টেট মামলা আপাতত সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। সোমবার এসএসসির চাকরি বাতিলের মামলার রায় ঘোষণা হচ্ছে কলকাতা হাই কোর্টে। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ রায় ঘোষণা করছে।

দেশের সময় কলকাতা স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় অবশেষে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা উচ্চ আদালত জানিয়ে দিল প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পর যাদের চাকরি দেওয়া হয়েছিল, সেই নিয়োগ ছিল অবৈধ। মোট ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের নিয়োগকে বাতিল ঘোষণা করে দিল আদালত। শুধু তাই নয়, কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এও জানিয়ে দিল যে, অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরির মাধ্যমে যাদের চাকরি দেওয়া হয়েছিল, ৪ সপ্তাহের মধ্যে তাদের বেতনের টাকা ফেরত দিতে হবে।

স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক এবং অশিক্ষক শিক্ষা কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মোট ৩৫০টি মামলা হয়েছিল। সেই সব মামলা একত্র করে সোমবার বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ রায় ঘোষণা করে। বিচারপতি এও জানিয়ে দেন, দুর্নীতির ব্যাপারে সিবিআই তাদের তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে। স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং শিক্ষা দফতরের যে সব অফিসাররা এই নিয়োগ কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, অর্থাৎ যাঁরা প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও যে অফিসাররা নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়েছিলেন, সিবিআই চাইলে তাঁদের হেফাজতে নিতে পারবে।

স্বাধীনোত্তর সময়ে এত বড় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ বাংলায় ওঠেনি। সেদিক থেকে কলকাতা হাইকোর্টের এদিনের রায়ও একটা বড় মাইলফলক। উচ্চ আদালতের ৮১ পৃষ্ঠার এই রায় শিক্ষা দফতর তথা স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপর বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে। শুধু তা নয়, এক সঙ্গে প্রায় ২৫ হাজার জনের চাকরি বাতিলের ঘটনার অভিঘাত কী হয় সেও দেখার। 

এদিন আইনজীবী ফিরদৌস শামীম বলেন, ‘যাঁরা যাঁরা বেআইনি নিয়োগের ফলে চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের চার সপ্তাহের মধ্যে বেতন ফিরিয়ে দিতে হবে। ৬ সপ্তাহের মধ্যে তা রিকভার করতে হবে।’ এদিন ২৮১ পৃষ্ঠার রায় পড়েন বিচারপতি দেবাংশু বসাক। রায়কে একাধিক অংশে ভাগ করা হয়।

ফিরদৌস শামীম আরও বলেন, ‘গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম এবং দশম শ্রেণির নিয়োগ প্রক্রিয়া পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে। বেতন ফেরত দিতে বলা হয়েছে। DI-দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই বিষয়ে নজর রাখতে।’

বিচারপতি দেবাংশু বসাক এদিন জানিয়ে দিয়েছেন, এই যে ২৩ হাজার ৭৫৩ জনের নিয়োগ বাতিল করা হল, সেই শূন্যপদে অবিলম্বে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে। সময় বেঁধে সেই নিয়োগ করতে হবে। এবং সেই প্রক্রিয়া হতে হবে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ।

প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, বিভিন্ন স্তরে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযোগের ভিত্তিতে হাইকোর্টের নির্দেশে বহু মামলার তদন্ত করছে CBI এবং ED। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ২০১৬ সালে এসএসসির নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগ এবং একই বছরে স্কুলে তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির মামলা। সোমবার সেই মামলাতেই রায় জানাল হাইকোর্ট।

এদিন রায়কে কেন্দ্র করে কোনওভাবেই যাতে হাইকোর্ট চত্বরে গোলমাল না বাঁধে সেই জন্য আঁটসাঁট নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল হাইকোর্ট চত্বর।

গত পাঁচ ডিসেম্বর থেকে কমপক্ষে ২৫ দিন ধরে এই মামলাগুলির শুনানি হয়। প্রায় ৩০ লাখ আবেদনকারী চাকরি বিভাগে পরীক্ষা দেয়। মামলার শুনানি চলকালীন আদালতের পর্যবেক্ষণ, সমস্ত বিভাগ মিলিয়ে প্রায় ২২ হাজার নিয়োগের বিষয়ে প্রতারণা হয়ে থাকলেও সমস্ত মিলিয়ে প্রায় ২২ হাজার নিয়োগ হলেও প্রতারণা যদি হয় সেক্ষেত্রে ওই ৩০ লাখ চাকরিপ্রার্থী যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন তাঁদের সকলের সঙ্গে হয়েছে।

Previous articleTMC BISWAJIT DAS তীব্র গরমে ভোট প্রচার !ঠান্ডা জলেই ভরসা; বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিতের
Next articleWeather Update: গত ৫ দশকে এত দীর্ঘস্থায়ী তাপপ্রবাহ দেখেনি কলকাতা , কী বলছে আলিপুর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here