দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ চলতি মাসের শুরুতেই জানিয়েছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের আগেই দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর হবে। শুধু তা-ই নয়, শাহ এ-ও বলেছিলেন, শীঘ্রই সিএএ কার্যকরের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে যাবে। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, দেশে নির্বাচনী আচরণ বিধি কার্যকর হওয়ার আগেই সিএএ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
সূত্রের খবর , আগামী মাসেই কার্যকর হতে চলেছে নাগরিত্ব সংশোধন আইন বা সিএএ। ইতিমধ্যেই সিএএ কার্যকর করার জন্য অনলাইন পোর্টালও চালু করা হয়ে গিয়েছে বলে জানা গেছে। এমনকী, মহড়াও হয়ে গিয়েছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সূত্রে জানা গিয়েছে।
পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের থেকে নথি ছাড়া ভারতে আসা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এই আইনে। ২০১৯ সালে এই আইন কার্যকর করা হলেও, কবে কার্যকর হবে, তা নিয়ে জল্পনা ছিল। মাসখানেক আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, লোকসভা নির্বাচনের আগেই কার্যকর করা হবে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রের দাবি, ভারতের দীর্ঘমেয়াদি ভিসার জন্য সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে পাকিস্তান থেকে। এই দীর্ঘমেয়াদি ভিসা প্রদানকেই সিএএ এর বিকল্প বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনকে দীর্ঘমেয়াদি ভিসা প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
গত ২ বছরের বেশি সময়ে ৯টি রাজ্যের ৩০ জন জেলা শাসক এবং স্বরাষ্ট্র সচিবকে পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিষ্টানদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বার্ষিক রিপোর্ট অনুসারে, ২০২১ সালের ১ এপ্রিল থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫ মেনে পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের ১,৪১৪ জন অমুসলিম নাগরিককে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালে এই আইন পাস হওয়ার পর থেকেই দেশে ধর্মের ভিত্তিতে আইন তৈরি করে বিভাজনের রাজনীতি উস্কে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, রাজ্যে সিএএ কার্যকর হতে দেবেন না তিনি। এই আইন দেশের ধর্মনিরপেক্ষতাকে নষ্ট করবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। ২০১৯ সালে নাগরিত্ব আইন পাস হওয়ার পর থেকে করোনা অতিমারি শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত দেশে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। সিএএ, এনআরসি এবং এনপিআরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে সামিল হন দেশের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ।
এখনও পর্যন্ত লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। শোনা যাচ্ছে, মার্চ মাসের প্রথম দিকেই ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে যেতে পারে। আর দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই দেশে কার্যকর হবে নির্বাচনী আচরণ বিধি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, তার আগেই সিএএ কার্যকর করতে চায় নরেন্দ্র মোদী সরকার।