দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গত ১৩ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের ছয় বিধানসভা কেন্দ্র— সিতাই, মাদারিহাট, তালড্যাংরা, মেদিনীপুর, নৈহাটি এবং হাড়োয়ায় উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়েছে। শনিবার এই ছয় কেন্দ্রের ফলপ্রকাশ।
রাজ্যের ৬ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রতিটি আসনেই এগিয়ে তৃণমূল।
উপনির্বাচনে নৈহাটি বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী তৃণমূল। শাসক দলের প্রার্থী সনৎ দে ৪৮ হাজার ৮৭৯ ভোটে জয়ী হয়েছেন। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী রূপক দত্ত। প্রচারে ঝড় তুললেও বাম সমর্থিত সিপিআই (এমএল) লিবারেশন প্রার্থী দেবজ্যোতি মজুমদার উপনির্বাচনে দাগ কাটতে পারলেন না। বলার মত ভোট পেলেন না কংগ্রেস প্রার্থী পরের সরকারও। ফল ঘোষণার পর সদ্য জয়ী হওয়া তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে বলেন, ‘নৈহাটির মানুষ বিজেপি ও বামেদের অপপ্রচারে বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন। মানুষ প্রকৃত সত্য কোনটা তা বুঝেছেন। মানুষ মমতা ব্যানার্জির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। বাংলার উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।’
২০২১ সালের নির্বাচনে ৬টি আসনের মধ্যে একমাত্র মাদারিহাট ছিল বিজেপির দখলে। কিন্তু সেই কেন্দ্রও এ বার হাতছাড়া হতে পারে গেরুয়া শিবিরের, গণনার প্রাথমিক ট্রেন্ড তেমনই আভাস দিচ্ছে।প্রায় সব কেন্দ্রেই এগিয়ে তৃণমূল ।
একাদশ রাউন্ডের গণনা শেষে সিতাইয়ে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে ১লাখ ১৫ হাজার ভোটে। এখনও একটি রাউন্ড গণনা বাকি রয়েছে সেখানে।
নবম রাউন্ডের গণনা শেষে হাড়োয়ায় তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে ৮৩০০৩ ভোটে। শাসক শিবিরের প্রার্থী রবিউল পেয়েছেন ১০০৭৭২ ভোট। আইএসএফ প্রার্থী পিয়ারুল এখনও পর্যন্ত পেয়েছেন ১৭৭৬৯ ভোট। বিজেপি এখনও পর্যন্ত পেয়েছে ৭০৪৭ ভোট।
অন্য দিকে মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে বিপুল ফারাকে বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহায়ুতি জোট এগিয়ে থাকলেও প্রাথমিক প্রবণতায় ঝাড়খণ্ড দখল করতে চলেছে ইন্ডিয়া জোট। সেখানে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস-আরজেডির জোট সরকার গঠনের প্রয়োজনীয় ম্যাজিক ফিগার পেরিয়ে গিয়েছে। এই হিসাব ভোটগণনার প্রবণতা অনুযায়ী। চূড়ান্ত ফল জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুক্ষণ।
ঝাড়খণ্ডের মহা গাঁটবন্ধন ৪৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। তার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনসহ জেএমএম ২০টিতে, কংগ্রেস ১০টি, আরজেডি ৫, সিপিআইএল ২টিতে এগিয়ে। এনডিএ ২৯টিতে এগিয়ে রয়েছে। বিজেপি ২১, এডেএসইউপি ১ এবং জেডিইউ ১টিতে এগিয়ে।
মহারাষ্ট্রে শেষ পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহায়ুতি জোট ২০৭টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। সরকার গঠনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য প্রয়োজন ১৪৫টি আসন। অন্যদিকে, মহা বিকাশ আঘাড়ির বিরোধী জোট ৬৯টি আসনে এগিয়ে। নির্দল ৪, অন্যান্য ৬টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।
কেরলের ওয়ানাড লোকসভা আসনের উপনির্বাচনে বিশাল মার্জিনে এগিয়ে রয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সিপিআই প্রার্থীর তুলনায় প্রিয়ঙ্কা প্রথম কয়েক দফাতেই ২ লাখের বেশি ভোটে এগিয়ে গিয়েছেন।
মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনের পাশাপাশি এবার কেরলের একটি লোকসভা আসনের উপনির্বাচনের দিকে সকলের নজর আছে। রাহুল গান্ধীর ছেড়ে যাওয়া আসনটিতে বোন প্রিয়ঙ্কাকে প্রার্থী করে দল। প্রবণতা থেকে মনে করা হচ্ছে প্রিয়ঙ্কার জয়ের মার্জিন দাদা রাহুলকেও ছাপিয়ে যেতে পারে। এ বছর লোকসভা নির্বাচনে রাহুল ওয়ানাড থেকে তিন লাখ ষাট হাজারের ব্যবধানে জিতেছিলেন।
প্রিয়ঙ্কার রিরুদ্ধে নোট ১৬ জন প্রার্থী লড়াইয়ে ছিলেন। তবে মূল লড়াই ছিল ইন্ডিয়া’র শরিক সিপিআইয়ের সঙ্গে। ভারতের কমিউনিস্টি পার্টি সেখানে প্রার্থী সথ্যন মোকেরিকে। তিনি এখমও পর্যন্ত ৩২ হাজার ভোট পেয়েছেন। অন্যদিতে, বিজেপি প্রার্থী নব্য হরিদাস এখনও পর্যন্ত পেয়েছেন ২১ হাজার ভোট।
প্রিয়ঙ্কার জন্য দাদা রাহুল প্রচারে অনেকটা সময় দিয়েছেন। অন্যদিকে, সিপিআই প্রার্থীর জন্য প্রচারে নেমেছিলেন কেরলের সিপিএম মখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। বিজেপি প্রার্থীর জন্য প্রচার করেন একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং দলের সভাপতি জেপি নাড্ডা।
ওয়ানাড কংগ্রেসের শক্তঘাঁটি। ফলে উপ নির্বাচনে প্রিয়ঙ্কার জয় নিয়ে কোনও সংশয় ছিল না। স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে বিচার্য ছিল মার্জিন। বলতে গেলে দাদা রাহুলের জয়ের মার্জিন স্পর্শ করাই ছিল প্রিয়ঙ্কার কাছে একমাত্র চ্যালেঞ্জ। এখন দেখার দিনের শেষে চূড়ান্ত ফল কী দাঁড়ায়।