দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বৃহস্পতিবার রাতের লুসাইল স্টেডিয়াম দেখল ‘জোগো বোনিতো।’ যার অর্থ সুন্দর ফুটবল। বিশ্বকাপের ইতিহাসে গ্রুপ পর্বে অপরাজেয় ব্রাজিল। সেই রেকর্ড অক্ষুণ্ণ থাকল। সার্বিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে হেক্সা অভিযান শুরু ব্রাজিলের। জোড়া গোল রিচার্লিসনের। তবে এদিন আধ ডজন বা তারও বেশি গোলে জিততে পারত নেইমাররা। দু’বার বাধা সাধে পোস্ট, কয়েকটা ভাল সেভ করেন সার্বিয়ার গোলকিপার। বাকিটা ব্রাজিলিয়ানদের সুযোগ নষ্ট। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের থেকে প্রত্যাশা ছিল গগনচুম্বী। নিরাশ করেনি তিতের দল। আগ্রাসী এবং আক্রমণাত্মক ফুটবলের নিদর্শন রাখল।
গোল লক্ষ্য করে প্রায় ২৫টি শট। কিন্তু নৈপুণ্যের অভাব। পরবর্তীকালে যা সমস্যায় ফেলতে পারে ব্রাজিলকে। এদিন নেইমারের মঞ্চে নায়ক রিচার্লিসন। অনবদ্য ভিনিসিয়াস জুনিয়রও। এই দু’জনের কম্বিনেশনেই হেক্সা অভিযানের পালে হাওয়া লাগল।
ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকে আক্রমণের ঝড়। কিন্তু গোল পেতে অপেক্ষা করতে হল। প্রথমার্ধে একাধিক আক্রমণ সত্ত্বেও গোল আসেনি। অবশেষে ৬২ মিনিটে কিছুটা স্বস্তি। তারুণ্যের সঙ্গে অভিজ্ঞতার মিশেলে দল গড়েন তিতে। নেইমার তো ছিলেনই, সঙ্গে ভিনিসিয়াস, রাফিনহো, রিচার্লিসনকে প্রথম একাদশে রেখে আক্রমণাত্মক ফুটবলের ইঙ্গিত দেন প্রফেসর।
প্রথম থেকেই আক্রমণের ঝড় তোলে ব্রাজিল। দুই প্রান্তে পাকুয়েতা, ভিনিসিয়াসকে কেন্দ্র করেই সাম্বা আক্রমণ গড়ে উটছিল। মাঝমাঠে অনবদ্য ক্যাসেমিরো। কিন্তু অ্যাটাকিং থার্ডে যাবতীয় আক্রমণ আটকে যায়। প্রথমার্ধে খুব একটা নজর কাড়তে পারেনি নেইমার। গোলের দুটো নিশ্চিত সুযোগ নষ্ট করেন ভিনিশিয়াস জুনিয়র। ম্যাচের প্রথম কোয়ার্টারে ব্রাজিলিয়ানের পা থেকে বল ক্লিয়ার করেন সার্বিয়ার গোলকিপার স্যাভিচ। ৪১ মিনিটে ক্যাসেমিরোর থেকে বক্সের মধ্যে সুবিধাজনক জায়গায় বল পান ভিনিশিয়াস জুনিয়র।
কিন্তু বাইরে মারেন। সুযোগ ছিল রাফিনহোর সামনেও। কিন্তু ৩৭ মিনিটে সার্বিয়ার গোলকিপারকে একা পেয়েও তাঁর হাতে বল জমা দেন। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য ভাবে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারত ব্রাজিল। কিন্তু বিপক্ষ গোলকিপারকে ওয়ান টু ওয়ান পরিস্থিতিতে পেয়েও তাঁর গায়ে মারেন রাফিনহো। ৬০ মিনিটে অ্যালেক্স স্যান্দ্রোর দূরপাল্লার শট পোস্টে লাগে। ম্যাচের ৬২ মিনিটে ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন রিচার্লিসন।
ভিনিশিয়াস জুনিয়রের শট বাঁচিয়ে দেন সার্বিয়া কিপার। ফিরতি বল গোলে ঠেলেন ব্রাজিলের সুযোগসন্ধানী স্ট্রাইকার। দ্বিতীয় গোলও রিচার্লিসনের। এবারও সেই ভিনিসিয়াসের সঙ্গে কম্বিনেশনে। বাঁ প্রান্ত থেকে তাঁর পাস রিসিভ করে ডান পায়ের দুরন্ত হাফ ভলিতে ২-০ করেন ব্রাজিলের স্ট্রাইকার। অনবদ্য গোল। দেশের জার্সিতে নিয়মিত গোল করা অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন।
দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিলের প্রেসিং ফুটবলে নাজেহাল হয়ে যায় সার্বিয়া। বিরতির পর একটাও সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তাঁরা। শেষদিকে ক্যাসিমিরোর শট পোস্টে লাগে। নয়ত ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। তবে গোল সংখ্যা না বাড়লেও এদিন দোহার লুসাইল স্টেডিয়াম নাচল সাম্বার তালে।