দেশের সময় মালদহ: মাত্র ৮ বছর বয়সেই উপস্থিত বুদ্ধি আর সাহসিকতার জোরে ছোট্ট মোরসেলিম শেখের তৎপরতায় শুক্রবার রক্ষা পেয়েছে আপ শিয়ালদহ-শিলচর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস।
শুক্রবার দুপুর তখন সাড়ে তিনটে হবে। শিলচরগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস তখন প্রবল বেগে ছুটছে। কিন্তু সুপারফাস্ট এই ট্রেনের যাত্রী থেকে শুরু করে চালক কিংবা গার্ড কেউই জানতেন না, কত বড় বিপদ অপেক্ষা করে রয়েছে সকলের জন্য।
ট্রেন তখন সবে মালদহের ভালুকা রোড স্টেশন পেরোচ্ছে। সেই সময়েই পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া মোরসেলিম বাড়ি ফিরছিল লাইনে পাশ দিয়ে। তার চোখে পড়ে যায়, যে লাইনে ছুটে আসছে ওই ট্রেন, সেই লাইনেরই পাশে মাটি সরে গিয়ে বিশালাকার গর্ত তৈরি হয়ে গেছে। বয়স মাত্র ৮ বছর হলে কী হবে, ছোট্ট মোরসেলিম বুঝে যায়, কত বড় বিপদ ঘটতে চলেছে। কী করবে, ভাবতে ভাবতেই নজর যায় গায়ে থাকা লাল রঙের গেঞ্জির দিকে।
ব্যস, আর কিছু ভাবতে হয়নি মোরসেলিমকে। গায়ের লাল গেঞ্জি খুলে হাতে করে মাথার উপর তুলে ধরে নাড়াতে নাড়াতে ছুটতে শুরু করে সে। দূর থেকে লাল সংকেত দেখেই বিপদ বুঝতে পারেন ট্রেন চালক। কোনও মতে ব্রেক কষে গত পর্যন্ত যাওয়ার আগেই ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে দেন তিনি ৷
এরপর লাইনে নেমে সেই গর্ত দেখার পরেই খবর দেওয়া হয় রেলকর্মীদের । তাঁরা এসে লাইন মেরামত করার পর আবার যাত্রা শুরু করে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। সুষ্ঠুভাবেই সেটি গন্তব্যে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।
মোরসেলিমের উপস্থিত বুদ্ধি আর সাহসের তারিফ না করে পারেননি রেলকর্মীরা। তার জন্যই এত বড় দুর্ঘটনা এড়াতে পেরেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস, বেঁচে গেছে হাজার হাজার যাত্রীর প্রাণ। এমনকী, খোদ ড্রাইভার কাকুও তার পিঠ চাপড়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে মোরসেলিম। তার ছবি আর কীর্তির কথা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। ছোট্ট ছেলের কাণ্ড দেখে হতবাক নেটিজেনরাও।
এমন একখানা ‘কাণ্ড’ ঘটিয়েছে সে, যাতে ধন্য ধন্য করছেন সবাই। এমনকী, রেলের কর্তাব্যক্তিরাও তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ ৷